প্যারিস: প্রেসিডেন্টের গদি ধরে রাখলেন ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ (Emmanuel Macron)। রবিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের (France Election) ফলপ্রকাশ হয়। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মারিন লে পেন(Marine Le Pen)-কে হারিয়ে ফের একবার প্রেসিডেন্ট পদেই নির্বাচিত হলেন ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ। চরম ডানপন্থী নেতা জয়ী না হওয়ায় স্বস্তির ঢেউ বয়ে গিয়েছে গোটা ইউরোপের উপর দিয়েও। জানা গিয়েছে, প্রায় ৫৮ শতাংশ জনমত নিয়েই দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ম্যাক্রঁ, অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী লে পেন পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট।
ফ্রান্সের বিগত দুই দশকের ইতিহাসে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি পরপর দুইবার নির্বাচিত হলেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের শতাংশ কিছুটা চিন্তা বাড়িয়েছে। মধ্যপন্থা ছেড়ে দেশের একটি বড় অংশের মানুষই যে ডানপন্থার দিকে ঝুঁকছে, তা আন্দাজ করা গিয়েছে ভোটের ফলাফল দেখেই। আজ, সোমবার নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ও ভোট শতাংশ ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
৪৪ বছর বয়সী ম্যাক্রঁ আপাতত জয়ের হাসি হাসলেও, তাঁর সামনে অপেক্ষা করে রয়েছে একাধিক চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্টের গদিতে বসে প্রথমেই তাঁকে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, তা হল আগামী জুন মাসের সংসদীয় নির্বাচন। ফ্রান্স সংস্কারের যে স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, তা পূরণ করার জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথ খুব একটা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তবে ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ম্যাক্রঁ। রবিবার ফলপ্রকাশের পর প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের নীচে অবস্থিত চ্যাম্প দে মার্সে দাঁড়িয়ে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ জানান, এই জয়ে তিনি আপ্লুত। তবে ভোটারদের মধ্যে যাঁরা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষোভ বোঝার চেষ্টা করবেন। বিগত পাঁচ বছরে তিনি যেভাবে কাজ করেছেন, এবার সেই কাজেও পরিবর্তন আসবে বলেও তিনি জানান।
ম্যাক্রঁ বলেন, “ফ্রান্সবাসীদের রাগ ও ক্ষোভের কারণ অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে, যার জেরে প্রতিদ্বন্দ্বী চরম ডানপন্থীদের দিকে এত ভোট পড়েছে। আমি ও আমার আশপাশে থাকা সকলের দায়িত্ব হবে এই ক্ষোভের কারণ খুঁজে বের করা। একইসঙ্গে আমি ফ্রান্সকে নতুন পদ্ধতিতে পরিচালনের শপথ নিচ্ছি। বিগত পাঁচ বছরে যেভাবে সরকার পরিচালিত হয়েছে, তার থেকে এবারের নতুন অধ্যায় সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে।”
অন্যদিকে, নির্বাচনে হারের পরও আশা ছাড়তে নারাজ ডানপন্থী নেতা লে পেন। তিনি জানান, কখনওই ফ্রান্স ছেড়ে যাওয়ার কথা কল্পনা করবেন না এবং আগামী জুন মাসের সংসদীয় নির্বাচনের জন্যও ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনের ফলাফল অসাধারণ হবে বলেই আশা করছেন তিনি।