Ayodhya Korea connection: রাম মন্দিরের কোরিয়া যোগ, দুই দেশকে জুড়েছিলেন অযোধ্যার রাজকন্যা

Jan 21, 2024 | 11:57 PM

Ayodhya Korea connection: অযোধ্যার সঙ্গে প্রায় ২০০০ বছরের যোগাযোগ দক্ষিণ কোরিয়ার। ৪৮ খ্রিস্টাব্দে সেই দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন অযোধ্যার রাজকন্যা সুরিরত্না। প্রচুর উপহার দিয়ে একটি নৌকোয় করে তাঁকে সেই দেশে পাঠিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। তিন মাস সমুদ্রযাত্রা করে সেখানে পৌঁছেছিলেন তিনি। তারপর?

Ayodhya Korea connection: রাম মন্দিরের কোরিয়া যোগ, দুই দেশকে জুড়েছিলেন অযোধ্যার রাজকন্যা
কিংবদন্তী অনুসারে প্রায় ২০০০ বছর আগে অযোধ্যা থেকে কোরিয়ায় পড়ি দেন রাজকুমারী সুরিরত্না
Image Credit source: Twitter

Follow Us

অযোধ্যা: অযোধ্যার রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। ফুলে, আলোয় সেজে উঠেছে অযোধ্যা। প্রাণ প্রতিষ্ঠা যোগ দেওয়ার জন্য রাম মন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৫০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁদেরই একজন কিম চিল-সু। তবে দক্ষিণ কোরিয় এই প্রতিনিধির সঙ্গে অযোধ্যার বিশেষ যোগ রয়েছে। আসলে, কিম চিল-সু হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার কারাক রাজবংশের সদস্য। যে রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা সুরো এবং রানী হিও। এই রানী হিও, সুরিরত্না নামেও পরিচিত। মনে করা হয় এই সুরিরত্না ছিলেন অযোধ্যার রাজকন্যা। কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় ২০০০ বছর আগে, অযোধ্যা থেকে তিন মাসের সমুদ্রযাত্রা করে, সুদূর দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে, সেখানকার রাজাকে বিবাহ করেছিলেন রাজকন্যা সুরিরত্না।

কিংবদন্তি অনুসারে, ৪২ খ্রিস্টাব্দে কারাক রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা সুরো। ৪৮ খ্রিস্টাব্দে, রাজকুমারী সুরিরত্নার বাবা-মা একটি দৈবস্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নে ঈশ্বর তাঁদের মেয়েকে দক্ষিণ কোরিয়ার জিউমগোয়ান গয়াতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারণ, রাজা সুরো উপযুক্ত রানী খুঁজে পাচ্ছেন না। এরপরই অযোধ্যার রাজা-রানী তাঁদের কন্যাকে অনেক উপহার এবং দাসদাসী-সহ একটি নৌকায় করে কোরিয়ার উদ্দেশে পাঠান। তিনমাসের সমুদ্রযাত্রার পর সেখানে গিয়ে পৌঁছন অযোধ্যার রাজকন্যা। শেষপর্যন্ত রাজা সুরোর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয় এবং দুজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সূচনা হয় কারাক রাজবংশের, যা ৫৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত টিকে ছিল। রানী সুরিরত্না দক্ষিণ কোরিয়ায় রানী হিও হোয়াং-ওকে, বা রানী হিও নামে পরিচিত। সেখানকার অত্যন্ত জনপ্রিয় রানী হয়েছিলেন তিনি।

রানী হিও-র মূর্তি এবং তাঁর ভূমিকায় দক্ষিণ কোরিয় অভিনেত্রী সিও জি হিয়ে

দক্ষিণ কোরিয়ায় বহু শতাব্দী ধরে এই বিশ্বাস চলে এসেছে। তাদের লোককথায় রয়েছে রাজা সুরোকে বিয়ে করার জন্য তিন মাস ভ্রমণ করে, ভারতের অযোধ্যা থেকে রানী হিও-র দক্ষিণ কোরিয়ায় আসার কথা। আজ, দক্ষিণ কোরিয়ার লক্ষ-লক্ষ মানুষ দাবি করে তাঁরা কারাক বংশের উত্তরসূরি। সেখানকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কিম ডাই জং এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাই জিওং এবং জং পিল কিম এই বংশের সদস্য। এমনকি সেখানে এখনও কিছু পাথর সংরক্ষণ করা আছে। সেখানকার লোকেদের বিশ্বাস, অযোধ্যার রাজকুমারী সমুদ্রযাত্রার সময় তাঁর নৌকোর ভারসাম্য বজায় রাখতে ওই পাথরগুলি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় কিমহায়ে শহরে রাজকুমারী হিও-র একটি মূর্তিও রয়েছে।

রানী হিও-র সমাধী এবং নৌকোয় করে তাঁর আনা পাথর

ভারতেও গত কয়েক দশক ধরে, অযোধ্যার রাজকন্যার এই কোরিয়া যাত্রার কাহিনি জনপ্রিয় হয়েছে। কয়েক বছর আগে, অযোধ্যা ও কোরিয়ার এই ‘ঐতিহাসিক’ সংযোগের কথা উঠে এসেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখেও। তাঁর নির্দেশ মেনে দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডিকে অযোধ্যায় আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। ২০১৮ সালে, শাড়ি পরে পুরোপুরি ভারতীয় সাজে অযোধ্যায় দীপাবলি উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কিম জুং-সুক। তিনি অযোধ্যায় পৌঁছনর সময় থেকে তিনি চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত, তাঁকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে, বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে, ব্যাপক উৎসাহ দেখা গিয়েছিল।

২০১৯-এ রানী হিও-র নামে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করে ভারত সরকার

তারও আগে, ১৯৯৬ সালে কোরিয়ার ইনজে ইউনিভার্সিটির এক প্রতিনিধি দল রানী হিও-র বংশের সন্ধান করতে অযোধ্যায় এসেছিলেন। অযোধ্যার রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে, অযোধ্যার রাজ পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্য বিমলেন্দ্র মোহন প্রতাপ মিশ্রকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে আমন্ত্রণ জানিয়ে, তাঁদের সেই দেশের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করা হয়েছিল।

Next Article