Russia-Ukraine Conflict: ‘জল নেই, খাবার নেই! এরপর কী হবে জানি না’, ইউক্রেনে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন বাঙালি পড়ুয়া

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Feb 27, 2022 | 2:42 PM

Indian Student In Ukraine: দেশে ফিরতে ভারতীয় দূতাবাসের থেকে একটু সহযোগিতা চাইছেন শর্বরীর মতো খারকিভে আটকে থাকা বহু ভারতীয় পড়ুয়া।

Russia-Ukraine Conflict: জল নেই, খাবার নেই! এরপর কী হবে জানি না, ইউক্রেনে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন বাঙালি পড়ুয়া
ছবি: সংবাদ সংস্থা

Follow Us

খারকিভ: খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে আসা ভারতীয় পড়ুয়ারা ভাবতে পারেননি বেঁচে থাকা ও সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরে আসাটাই চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠবে। বিগত এক মাস ধরে সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতির খবর মিললেও শহরের ভিতরে তার আঁচ টের পাননি। উপরন্ত ইউনিভার্সিটি আর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সেরকম সংযোগ ছিল না, যার ফলে দেশও ছাড়তে পারেননি তাঁরা। এমনটাই জানিয়েছেন খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির এক বাঙালি পড়ুয়া শর্বরী বিশ্বাস।

যাদবপুরের মেয়ে শর্বরী। দু’বছর আগে খারকিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন তিনি। খারকিভ ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শহর। শনিবার রাতে শর্বরী যোগাযোগ করেন TV9 বাংলার সঙ্গে। তিনি জানান, ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে খারকিভের পরিস্থিতি। জল নেই, খাবার নেই। এরপর জানা নেই কী হবে। দেশে ফিরতে ভারতীয় দূতাবাসের থেকে একটু সহযোগিতা চাইছেন শর্বরীর মতো খারকিভে আটকে থাকা বহু ভারতীয় পড়ুয়া।

শর্বরী বলেন, “২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে এখানে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় গুলি-বোমা বর্ষণ চলছে। তখন আমাদের বম্ব-শেল্টারে দৌড়ে যেতে হচ্ছে। শেলিংয়ের ফ্রিক্যুয়েন্সিও খুব ঘন-ঘন। মাঝেমাঝে এত জোরে বোম পড়ছে যে, মাটি কেঁপে উঠছে।” অন্য দিকে, সারাদিন শেল্টারে থাকাও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। শেল্টারগুলির গভীরতা থাকলেও সেখানে কোনও রকম ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই। নেই কোনও হিটিং সিস্টেম। আর তাপমাত্রা এখন প্রায় -২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এই পরিস্থিতিতে কি এইভাবে থাকা যায় সারাদিন?

শর্বরীর কথায়, “আমাদের বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে আসতে হচ্ছে। শুকনো খাবার নেই। এখানে জল নেই। খাবারও প্রায় শেষের দিকে। এরপর যা খাবার আছে মেরে-কেটে দু’দিন চলবে। যে এজেন্সির মারফত আমরা খারকিভে পড়াশোনা করতে এসেছিলাম, তারা জানিয়েছে জল, খাবারের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু এখন তাদের থেকেও কোনও সাহায্য পাচ্ছি না আমরা। অন্য দিকে, সুপারমার্কেটগুলো বন্ধ। মাঝে-সাঝে খুললেও সেটা খুব কম সময়ের জন্য। তাছাড়া খাদ্য সংকটের জন্য দামও প্রায় তিনগুণ। যেহেতু আমরা আগে যে এই পরিস্থিতি আঁচ করতে পারিনি, তাই খাবারও মজুত করা নেই। এরপর জানি না কী হবে।”

বিগত এক মাস ধরেই সীমান্তে রুশ সেনার উপস্থিতির খবর মিললেও কেন তাঁরা দেশ থেকে বেরিয়ে আসেননি এই প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হচ্ছে শর্বরীর মতো বহু ভারতীয় পড়ুয়াকে। এই প্রসঙ্গে শর্বরীর উত্তর, “আমাদের ইউনিভার্সিটি বা এজেন্সির তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। ২৪ তারিখ সকালে আমাদের ডিন জানান যে ক্লাস বন্ধ। এর আগে অবধি কোনও নোটিশ পাইনি আমরা।”

ভারতীয় দূতাবাসের কাছ থেকে একটু সহযোগিতা চাইছেন এই ভারতীয় পড়ুয়ারা। এর মধ্যে তাঁরা বহুবার যোগাযোগ করেছেন ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে। শর্বরী বলেন, “আমাদের জানানো হয় যে, ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস রোমানিয়া, পোলান্ড, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু যাঁরা ইউক্রেনের পশ্চিম অঞ্চলে রয়েছে, তাঁরা যদি কোনওভাবে এই সীমান্ত পেরিয়ে যেতে পারে তাহলে তাঁদের দেশে ফেরানো হবে। কিন্তু আমরা যারা দেশের পূর্ব দিকে রয়েছি, তাদের এখানেই থাকতে বলা হয়েছে। আমাদের নিজে থেকে যাওয়ারও কোনও রাস্তা নেই। ইতিমধ্যেই খারকিভ যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে জানি না কেন আমাদের উদ্ধার করা হয়নি। খাবার আর জল ছাড়া কতদিন এভাবে থাকব জানি না।”

আরও পড়ুন: আকাশে শুধু আলোর ঝলকানি, বিকট শব্দে কান পাতা দায়! খারকিভেও ঢুকে পড়ল রুশ সেনা

Next Article