কিয়েভ: বুধবার থেকে ফের ইউক্রেনের বুকে উড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা। ৩ মাস পর ফের খুলে দেওয়া হল, রাজধানী কিয়েভের মার্কিন দূতাবাস। গত ২৩ জানুয়ারি, ক্রমবর্ধমান রুশ-ইউক্রেন উত্তেজনার প্রেক্ষিতে, কিয়েভের মার্কিন দূতাবাসের সকল কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সেই দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে, অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশের মতোই মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের পশ্চিম ইউক্রেনের শহর লভিভে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। রুশ হামলা শুরু হওয়ার পর মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে দুতাবাসের কর্মীদের পার্শ্ববর্তী পোল্যান্ডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বুধবার, কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের কাজ ফের শুরু করার পর, মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আজ আমরা সরকারিভাবে কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের কাজ ফের শুরু করছি। আমাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাহায্যে, ইউক্রেনিয় নাগরিকরা অসংবেদনশীল রুশ হামলা রুখে দিয়েছে, এবং, তার ফলে, আরও একবার দূতাবাসে মাথায় উড়ছে মার্কিন জাতীয় পতাকা। ক্রেমলিনের নৃশংস আগ্রাসী যুদ্ধের হাত থেকে তাদের দেশকে রক্ষা করেছে ইউক্রেনের মানুষ এবং সরকার। আমরা তাই তাদের পাশে গর্বের সঙ্গে দাঁড়াচ্ছি এবং তাদের আগামী দিনেও সাহায্য করে যাব।’
ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রেক্ষিতে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নয়, অনেক দেশই কিয়েভে দূতাবাসের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। তারপরের কয়েক মাস ধরে রুশ সেনা ধীরে ধীরে কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয়েছিল। তবে, গত এপ্রিলে রাশিয়া ফোকাস কিয়েভ থেকে সরে যায় পূর্ব ইউক্রেনের শহরগুলিতে। সেই সময়ই ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি, কিয়েভ থেকে দূতাবাসের কাজ বন্ধ করে দেওয়া দেশগুলিকে ইউক্রেনে কূটনৈতিক উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তারপরই, বেশ কয়েকটি দেশ ফের কিয়েভ থেকে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা শুরু করেছে। সবার প্রথমে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর দূতাবাস খোলা হয়েছিল। গত ২৯ এপ্রিল কিয়েভে ফিরে আসে নেদারল্যান্ডসের দূতাবাস। ১৭ মে থেকে কিয়েভের ভারতীয় দূতাবাসও কাজ শুরু করেছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি দেশের দূতাবাস ইতিমধ্য়েই ফিরে এসেছে কিয়েভে। বুধবার, জো বাইডেন প্রশাসনও কিয়েভে মার্কিন দূতাবাস ফের চালু করল।
২০১৯ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প কিয়েভ থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মারি ইয়োভানোভিচকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সেনেট মনোনীত রাষ্ট্রদূত নেই। ইউক্রেনে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা কেভিয়েন এবং মার্কিন কূটনীতিকদের একটি দলকে গত সপ্তাহেই মার্কিন দূতাবাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা ফিরলেও, তাদের নিরাপত্তা নিয়ে এখনও উদ্বেগ রয়েছে বাইডেন প্রশাসনের। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছন, মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপদ রাখতে দূতাবাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং প্রোটোকল উন্নততর করা হয়েছে।