কিয়েভ: বিপদ আর বেশি দূরে নয়, ইউক্রেনের (Ukraine) রাজধানী কিয়েভের (Kyiv) কাছেই পৌঁছে গেল রুশ সেনা (Russian Army)। শুক্রবার রাতেই শোনা যায় যে, কিয়েভে ঢুকে পড়েছে রাশিয়ান ট্যাঙ্ক। শহরে তাণ্ডবলীলা চালাতে শুরু করবে তারা। এরপরই প্রশাসনের তরফে সাইরেন বাজিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়। শহরের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি শেল্টারে তাদের আশ্রয় নিতে বলা হয়। অন্যদিকে, রুশ আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকেও হাতিয়ার তুলে নিতে বলা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, স্থানীয়রা পেট্রোল বোমা তৈরি করে রেখেছে রুশ সেনার উপর আক্রমণ চালানোর জন্য কিয়েভের মেয়রও জানিয়েছেন, রাজধানীর বেশ কিছু জায়গায় রুশ সেনার দেখা গিয়েছে। শহরের বাইরে কয়েক জায়গায় সংঘর্ষেরও খবর মিলেছে।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশ অনুযায়ীই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথমদিনের সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই শতাধিক সেনার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবারও সকাল থেকেই ইউক্রেনের একাধিক জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে রাশিয়া। মস্কোর তরফে জানানো হয়, তারা কিয়েভের হস্টোমেল এয়ারফিল্ড দখল করে নিয়েছে। তবে ইউক্রেনের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে যে, ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হলেও এখনও তা ইউক্রেনের দখলেই রয়েছে।
কিয়েভের মেয়র জানান, শহরের আশেপাশের অঞ্চলে ভারী গোলাবর্ষণ ও গুলি চালানোর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাশিয়ার সেনা ইতিমধ্যেই কিয়েভে ঢুকে পড়েছে। ওদের প্রধান লক্ষ্যই হল রাজধানী দখল করে গোটা দেশের উপর আধিপত্য জারি করা। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কিও টুইট করে জানিয়েছেন, পূর্বের চেরেনিহিভ, মেলিটোপোল ও হস্টোমল শহরে ভারী সংঘর্ষ হয়েছে। বহু সেনা মারা পড়েছে।
খারকিভের বিমানবন্দরের কাছেও শুক্রবারই বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। লভিভ শহরেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সুমি শহরেও রুশ সেনার সঙ্গে ইউক্রেনের সৈন্যদের ঘন ঘন সংঘর্ষ বেঁধেছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের অন্যতম তেজস্ক্রিয় ক্ষেত্র হিসাবে পরিচিত চেরেনোবিলও দখল করে নিয়েছে রাশিয়ান বাহিনী। যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই চেরেনোবিলে ইউক্রেনের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়ায়, ওই প্ল্যান্ট থেকে ফের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বের হতে শুরু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। বেলারুস থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পৌঁছনোর সবথেকে সোজা পথ হল চেরেনোবিলই। রাশিয়ান সৈন্য যাতে দ্রুত কিয়েভ দখল করতে পারে, সেই কারণেই চেরেনোবিল দখল করে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিগত দুইদিনের সংঘর্ষে এক হাজারেরও বেশি রাশিয়ান সৈন্য মারা পড়েছে। তবে রাশিয়ার তরফে এই দাবি অস্বীকার করা হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের তরফে ২৫ জনের মৃত্যু ও ১০২ জন আহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছে।