ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার, আওয়ামি লিগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড জে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।” আরও জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের “অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলী”র প্রশংসা করেছেন হাসিনা। তিনি আরও বলেছেন, এই রিপাবলিকান নেতার প্রতি অগাধ আস্থা রেখেছে মার্কিন জনগণ। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে, বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। হাসিনার এই বার্তাকে কেন্দ্র করে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তাহলে কি বাংলাদেশে কোনও নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে?
এই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। হাসিনা ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানালেও, তাঁর জয়ের বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি ইউনুস। সম্প্রতি, ইউনুসের প্রেস সচিব জানিয়েছিলেন, মার্কিন নির্বাচনে যেই জিতুক, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মার্কিন সরকারের সম্পর্কে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে, অতীত বলছে ইউনুসের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক নেতাদের সম্পর্ক বরাবরই ভাল। উল্টো দিকে, ২০১৬ সালে সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে, ইউনুস বলেছিলেন, তাঁদের রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পূর্ণ আলাদা। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পকে দেওয়াল না গড়ে, দৃষ্টিভঙ্গী আরও উদার করে সেতু গড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদ করে টুইট করেছিলেন ট্রাম্প। বাইডেন প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও, ট্রাম্প যে বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয় নিয়ে ছাড় দেবেন না, তা স্পষ্ট। তাছাড়া, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বাইডেন। ট্রাম্প কিন্তু মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশে এখন চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা চলছে। তিনি যে ইউনুসের সরকারকে ভাল চোখে দেখছেন না, তা এই মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
এরই মধ্যে, হাসিনার এই শুভেচ্ছাবার্তা এল। আওয়ামি লিগ জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময়, তাঁর সঙ্গে একযোগে কাজ করার কথা স্মরণ করেছেন শেখ হাসিনা। শুধু তাই নয়, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্বার্থগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ফের একযোগে কাজ করার বিষয়ে তাঁর অঙ্গীকারও প্রকাশ করেছেন হাসিনা। ভবিষ্যৎ নিয়ে হাসিনার এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের সম্পর্ক একেবারেই ভাল ছিল না। একাধিক ক্ষেত্রে, দুই পক্ষে বিরোধ বেধেছে। বাংলাদেশের শেষ নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল বাইডেন প্রশাসন। হাসিনা আরও অভিযোগ করেছিলেন, বাংলাদেশের একটি দ্বীপে বিমানঘাঁটি বানানোর জন্য তাঁকে চাপ দিয়েছিল বাইডেনের আমেরিকা।
বাইডেন জয়ী হওয়ার পরই, হাসিনার এই পদক্ষেপ কি তাহলে বাংলাদেশে নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত? এই প্রশ্ন নিয়ে চর্চা কিন্তু শুরু হয়ে গেল।