Singapore: ২০ বছর পর কোনও মহিলার ফাঁসি সিঙ্গাপুরে, উঠল মাদক আইন সংস্কারের দাবি

Singapore Executes Woman: মাদক পাচার এবং মাদকের ব্যবহার রোধে সিঙ্গাপুরের এই কঠোর শাস্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-সহ বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী সিঙ্গাপুর সরকারকে মাদক রোধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বন্ধ করার অনুরোধ করেছে।

Singapore: ২০ বছর পর কোনও মহিলার ফাঁসি সিঙ্গাপুরে, উঠল মাদক আইন সংস্কারের দাবি
৪৫ বছর বয়সী সারিদেউই বিনতে জামানির ফাঁসিতে প্রশ্নের মুখে সিঙ্গাপুরের আইনImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2023 | 1:37 PM

সিঙ্গাপুর: প্রায় ২০ বছর পর, শুক্রবার (২৮ জুলাই) সিঙ্গাপুরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল এক মহিলা অপরাধীকে। ৪৫ বছর বয়সী সারিদেউই বিনতে জামানির অপরাধ ছিল, ৩০.৭২ গ্রামের বেশি খাঁটি হেরোইন রাখা। সিঙ্গাপুরে মাদক আইন অত্যন্ত কঠোর। কারণ, তারা মনে করে মাদকের চাহিদা এবং সরবরাহ – মৃত্যুদণ্ডের ফলে দুইই ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেই দেশের মাদক আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির কাছে একটা নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি পরিমাণ মাদক থাকলেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সারিদেউইর কাছে তার দ্বিগুণেরও বেশি পরিমাণ মাদক ছিল বলে জানা গিয়েছে। এদিন, সিঙ্গাপুরের সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো বলেছে, “২৮ জুলাই সারিদেউই বিনতে জামানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।” এর আগে, মৃত্যুদণ্ড এড়ানোর জন্য সমস্ত আইনি পথের সহায়তা নিয়েছিলেন সারিদেউই। সমস্ত আইনি পথ ফুরিয়ে যাওয়ার পরই তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হল। ২০২২ সালের অক্টোবরে তাঁর শেষ আবেদনটিও খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। তাতেও কোনও লাভ হয়নি।

২০১৮ সালে এই মামলায় আটক করা হয়েছিল সারিদিউকে। ২০০৪ সালের পর এই প্রথম কোনও মহিলাকে ফাঁসি দেওয়া হল সিঙ্গাপুরে। তবে সারিদিউয়ের ফাঁসি, সিঙ্গাপুরে মৃত্যুদণ্ডের কার্যকারিতা এবং নৈতিকতা নিয়ে বিতর্ক তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া কতটা উপযুক্ত, সেই প্রশ্ন উঠেছে। চলতি সপ্তাহেই মাদক পাচারের দায়ে আরও এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ৫৭ বছর বয়সী মহম্মদ আজিজ বিন হুসেনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ গ্রাম হেরোইন পাওয়া গিয়েছিল। বুধবার তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তার মাত্র দুদিন পরই ফাঁসি দেওয়া হল সারিদিউকে। এই দুই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার ফলে, ২০২২ সালের মার্চ থেকে মোট ২২ জনকে ফাঁসি দিল সিঙ্গাপুর।

মাদক পাচার এবং মাদকের ব্যবহার রোধে সিঙ্গাপুরের এই কঠোর শাস্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-সহ বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী সিঙ্গাপুর সরকারকে মাদক রোধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বন্ধ করার অনুরোধ করেছে। তারা বলেছে, মাদক সক্রান্ত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মৃত্যুদণ্ড যে কার্যকার, তার পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাদকাসক্তরা পরিস্থিতির শিকার হন। তাই, এটাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা না করে, একটা অসুখ হিসেবে দেখা উচিত। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বদলে, তাদের চিকিৎসা করানো উচিত। তাদের সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত। মৃত্যুদণ্ডে মাদকাসক্তদের ন্যায়বিচার হয় না বলে দাবি করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি।

তবে শুধু সিঙ্গাপুরই নয়, চিন, ইরান এবং সৌদি আরবেও মাদক আইন অত্যন্ত কঠোর। মাদকাসক্তদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। ২০২২-এ এই চার দেশেই এই ধরনের অপরাধে বন্দীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।