Baby with permanent smile: জন্মের পর থেকে হেসেই চলেছে শিশুটি, কী বললেন চিকিৎসকরা
Baby with permanent smile: দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় 'স্থায়ী হাসিমুখ' নিয়ে জন্মালো এক শিশু। ডাক্তাররা জানালেন এর পিছনে রয়েছে এক অতি বিরল জন্মগত অবস্থা, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় 'বাইল্যাটরাল মাইকিরোস্টোমিয়া'।
অ্যাডিলেড: ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জন্ম হয়েছিল আয়লা সামার মুচার। এখনও ভাইরাল কথাটিও ,সে বলতে শেখেনি, কিন্তু, জন্মের পর থেকেই সে সোশ্যাল মিডিয়া তারকা। কারণ, এই শিশু সবসময় হাসিমুখে থাকে। এমনকি, কাঁদলেও তাঁর হাসিমুখ যায় না। এই নিয়ে তাঁর বাবা-মা খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তবে, চিকিৎসকরা তাঁদের নিশ্চিন্ত করেছেন। জানিয়েছেন, এটা একটা অতি বিরল জন্মগত অবস্থা, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ‘বাইল্যাটরাল মাইকিরোস্টোমিয়া’। আর এই কারণেই ‘স্থায়ী হাসিমুখ’ নিয়ে জন্মেছে এই অস্ট্রেলিয় শিশু।
আয়লা সামারের জন্মের সময় স্বাভাবিকভাবেই দারুণ খুশি হয়েছিলেন তাঁর মা ২১ বছরের ক্রিস্টিনা ভার্চার এবং বাবা ২০ বছরের ব্লেইজ মুচা। তবে, জন্মের পর শিশুর মুখ দেখেই ক্রিস্টিনা বুঝেছিলেন, সব কিছু স্বাভাবিক নেই। সদ্যজাত আয়লা সামারের শরীরের তুলনায়, তার মুখ-গহ্বর ছিল অস্বাভাবিক রকমের বড়। ফ্লিন্ডার্স মেডিক্যাল সেন্টারের কর্মীদের জিজ্ঞাসা করেও প্রথমে তারা কোনও উত্তর পাননি। গর্ভাবস্থা জুড়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকার পরও, এমনটা হওয়ায় ক্রিস্টিনার ধরেই নিয়েছিলেন মা হিসাবে তাঁরই কোথাও ভুল হয়েছে।
এরপর অবশ্য ডাক্তাররা দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার এই দম্পতির ভুল ভাঙিয়েছিলেন। তাঁরাই প্রথম ‘বাইল্যাটরাল মাইকিরোস্টোমিয়া’র কথা জানান ক্রিস্টিনা এবং ব্লেইজ-কে। ক্রিস্টিনা জানিয়েছেন, এর আগে তাঁরা এই অতি বিরল অবস্থা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এই অবস্থা রয়েছে, এমন কাউকে চিনতেনও না। ফলে পুরো বিষয়টাই তাঁদের কাছে নতুন ছিল। ক্রিস্টিনার অপারেশন হওয়ার আগে আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়েছিল। তাতেও, আয়লার অস্বাভাবিক বড় মুখ-গহ্বরের কোনও ছবি ধরা পড়েনি।
ডাক্তাররাই তাঁদের প্রথম ‘বাইল্যাটরাল মাইকিরোস্টোমিয়া’ সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। তাঁরা বলেন, গর্ভাবস্থাতেই এই শারীরিক অবস্থা দেখা দেয়। এর ফলে, গর্ভাবস্থায় শিশুর মুখগহ্বরের দুই পাশ ভালভাবে জোড়ে না। তাই, মুখ-গহ্বরের নান্দনিকতা এবং কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। ২০০৭ সালে ‘ক্লেফ্ট প্যালেট কার্নিওফেসিয়াল জার্নালে’, ‘বাইল্যাটরাল মাইকিরোস্টোমিয়া’ সম্পর্কে একটি তুলনামূলক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। ওই গবেষণাপত্র অনুযায়ী, তখনও পর্যন্ত বিশ্বে মাত্র ১৪ জন শিশুর ক্ষেত্রে ‘বাইল্যাটরাল মাইকিরোস্টোমিয়ার’ কথা নথিবদ্ধ করা হয়েছিল।
তবে এই প্রতিকূলতাই টিকটক, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় তারকা খ্যাতি এনে দিয়েছে আয়লা সামার মুচা-কে। সামারের ফলোয়ারের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে শুধু সামারের ছবি নয়, তাঁর এই অতি বিরল অবস্থা সম্পর্কে ইন্টারনেটবাসীকে অবহিত করেন ক্রিস্টিনা এবং ব্লেইজ। তবে, এই অবস্থা থাকলে, ভবিষ্যতে খাওয়া বা কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যার পড়বে সামার। তাই তাঁরা এখন সামারের এই ‘স্থায়ী হাসিমুখের’ সমস্যার সমাধানের জন্য, শল্যচিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন।