সিওল: পরপর দুই নবজাতক শিশুকে হত্যা করে বছরের পর বছর ধরে তাদের দেহ ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলেন মা! চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল দক্ষিণ কোরিয়ার এক মহিলার বিরুদ্ধে। এখনও ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়নি, তবে তাঁকে গ্রেফতারের জন্য আদালতের কাছে পরোয়ানা চেয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়াংগি নাম্বু প্রদেশের বাসিন্দা, বয়স ত্রিশের ঘরে। তিনি তাঁর দুই সন্তানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। জানা গিয়েছে, তাঁর আরও তিন সন্তান রয়েছে। তাদের বয়স যথাক্রমে ১২, ১০ এবং ৮ বছর। তাদের লালন-পালন করতে গিয়েই তাঁর নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা। এরপর আর কোনও সন্তান মানুষ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই তাঁর। আর সেই কারণেই দুই নবজাতককে হত্যা করেছেন তিনি।
পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে। এক হাসপাতালে জন্ম হয়েছিল তাঁর চতুর্থ সন্তানের। জন্মের পরের দিনই ওই শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল অভিযুক্ত মহিলা। তারপর, দেহটি বাড়ির ফ্রিজারে লুকিয়ে রেখেছিল। এরপর, ২০১৯ সালের নভেম্বরে জন্ম নিয়েছিল তাঁর পঞ্চম সন্তান, একটি ছেলে। তবে ছেলে বলে সে রক্ষা পায়নি। তাঁকেও একইভাবে হত্যা করে তার মা এবং একইভাবে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল দেহটি। সবথেকে আশ্চর্যের ঘটনা, তাঁর স্বামীর এই সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না। তাঁর স্ত্রী যে পরপর দুই বছরে তাঁদের দুই সন্তানকে হত্যা করেছে, তা নিতি জানতেন না। তাঁকে ওই মহিলা বলেছিলেন, দুই সন্তানের ক্ষেত্রেই গর্ভপাত করিয়েছেন তিনি।
গত মে মাসে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা প্রথম জানাজানি হয়েছিল। সরকারি কর্তৃপক্ষ দেখেছিল, হাসপাতালে দুই সন্তান প্রসব করেছিলেন মহিলা। তার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু দুটি শিশুর কারও জন্ম সরকারিভাবে নিবন্ধন করা হয়নি। এরপর, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বাড়ি গিয়ে পরিদর্শন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মহিলা রাজি হননি। এরপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ২১ জুন, অভিযুক্ত মহিলার বাসভবনে হানা দেয় পুলিশ। তল্লাশি চলাকালীন, নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন মহিলা। দেহগুলিও ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করা হয়। শুক্রবারই তাঁকে আদালতে তোলা হতে পারে।