কলম্বো: শ্রীলঙ্কায় বামপন্থীদের জয়জয়কার। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর), ছিল সেই দেশের সংসদ নির্বাচন। শুক্রবার ফল বেরোতেই দেখা যাচ্ছে, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হতে চলেছে প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকের নেতৃত্বাধীন, ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার বা এনপিপি দল। শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শ্রীলঙ্কা সংসদের ২২৫ আসনের মধ্যে, এখনও পর্যন্ত তাদের বামপন্থী জোট ১২৩টি আসন জিতেছে। আরও বেশ কিছু আসন তারা জেতার পথে রয়েছে। শ্রীলঙ্কায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে গেলে ১১৩ আসন দরকার হয়। বিগত সংসদ নির্বাচনে এনপিপি পেয়েছিল মাত্র ৩টি আসন। ফলাফলে স্পষ্ট, অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টির জন্য দায়ী বলে মনে করেছে বিগত দিনের শাসক দলগুলিকে এবং তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিন, ফল প্রকাশের শুরু থেকেই বোঝা যায়, সংসদ নির্বাচনে বড় জয় পেতে চলেছে শ্রীলঙ্কার নয়া রাষ্ট্রপতি, অনুরা কুমারা দিসানায়েকের দল। বৃহস্পতিবারই সংসদীয় নির্বাচনের অর্ধেকেরও বেশি ব্যালট গণনা হয়ে গিয়েছিল। এনপিপি জোট ৬৩ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিল। তবে, এবার প্রায় প্রতিটি আসনেই তারা এগিয়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি ব্যালট গোনা হয়েছে। তার মধ্যে এনপিপি ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিরোধী নেতা সজিথ প্রেমাদাসার দল মাত্র ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের মতে, ২২টি জেলার মধ্যে ১৪টিতে ভোট গণনা করা হয়েছে। ১৪টি জেলাতেই এগিয়ে রয়েছে দিসানায়েকের এনপিপি।
বছর দুই আগে, দ্বীপরাষ্ট্রে এক অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল। গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং দেশের চুরি যাওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতা এসেছেন রাষ্ট্রপতি দিসানায়েক। তিনি নিজেকে মার্ক্সবাদী বলে দাবি করেন। রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসেই অবিলম্বে সংসদীয় নির্বাচন করার ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল, শুক্রবারের ফলাফলই তার প্রমাণ। এবার, সংসদেও তাঁর দলের দাপট দেখা যাবে। তাঁর অ্যাজেন্ডাগুলির সংসদীয় সমর্থন পেতে আর কোনও বাধা থাকবে না।
বৃহস্পতিবারই, রাষ্ট্রপতি দিসানায়েক জানিয়েছিলেন, সংসদে তাঁর দলের শক্তিশালী সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এটা শ্রীলঙ্কার জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। এই নির্বাচনে, সংসদে খুব শক্তিশালী সংখ্যাগরিষ্ঠতা আশা করছে এনপিপি।”