পঞ্জশীর: তালিবানের কাছে অবশেষে হার মানল প্রতিরোধ বাহিনী। গোটা আফগানিস্তান দখলের পরও কেবল পঞ্জশীরের দখলি নিতে পারছিল না তালিবানরা, এ বার সেটিও তাদের কবজাতেই চলে গেল। সোমবারই তালিবানের তরফে জানানো হয়, তারা আফগানিস্তানের শেষ প্রদেশ, পঞ্জশীরেরও দখল নিয়েছে তালিবান।
তালিবানের মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ এ দিন সকালেই বলেন, “তালিবানরা পঞ্জশীরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। আফগানিস্তানের কেবল এই অঞ্চলই দখল করে রেখেছিল প্রতিরোধ বাহিনী, এ দিন তাও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। পঞ্জশীর দখলের মাধ্যমে আমরা গোটা দেশেই যুদ্ধের অবসান হল “।
পঞ্জশীরও তালিবানের দখলে চলে যাওয়ায় দেশের ৩৪টি প্রদেশই তালিবানের দখলে চলে গেল। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একাধিক ছবি, যেখানে পঞ্জশীরের গভর্নর অফিসে তালিবানি পতাকা উড়তে দেখা গিয়েছে। অপর একটি ভিডিয়োয় প্রতিরোধ বাহিনীর শীর্ষনেতা আহমেদ মাসুদের বাড়ির ভিতরে তালিবানিদের প্রবেশ করতে দেখা যায়।
Exclusive footage of Ahmed Shah Masood's house in #Panjsher You can easily see the Emirate Islamic Forces. (Video: Emirate Islamic)#Panjsher #panjashir pic.twitter.com/q0j5EHc5Zh
— Oun Abbas (@OunJaffery) September 6, 2021
গত ১৫ অগস্ট কাবুলের দখল নিয়েছিল তালিবান। ভেঙে পড়েছিল আফগান সরকার। ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজ শেষ করার আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আসরাফ ঘানি। ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ পালিয়ে গিয়ে পঞ্জশীরে আশ্রয় নেন। তালিবানরা সেই সময় থেকেই পঞ্জশীরের দখল নিতে চাইলেও প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে ক্ষমতায় এঁটে উড়তে পারছিল না। আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছিল প্রতিরোধ বাহিনী।
গত মঙ্গলবার থেকেই পঞ্জশীর ঘিরে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, তাতে একাধিকবার তালিবানের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে তারা পঞ্জশীর দখল করে নিয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই প্রতিরোধ বাহিনীর তরফে বিরোধিতা করে জানানো হয়েছিল যে, লড়াই জারি রয়েছে, পঞ্জশীর এখনও প্রতিরোধ বাহিনীর দখলে রয়েছে।
পঞ্জশীর দখলের পাশাপাশি প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র ফহিম দাস্তি ও প্রতিরোধ বাহিনীর সদস্য তথা মাসুদের ভাইপো উদোদ জ়ারা তালিবানোর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রতিরোধ বাহিনীর তরফেও টুইটে এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। এ দিন সকালে তালিবানের তরফে দাবি করা হয়, প্রতিরোধ বাহিনীর চিফ কম্য়ান্ডার সালেহ মোহাম্মদকেও খতম করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে আহমেদ মাসুদ ও আমিরুল্লাহ সালেহকে। তাদের গোপন একটি স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ দিকে, আহমেদ মাসুদ গতকালই ফেসবুকে যুদ্ধবিরতির যে বার্তা দিয়েছিলেন, তাও খারিজ করে দিয়েছে তালিবান, এমনটাি সূত্রের খবর। মাসুদ গতকালই ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, “জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী বর্তমান সমস্যা সমাধান করতে যুদ্ধ শেষ করে তালিবানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে। তালিবানরা পঞ্জশীর ও আন্দারাবে হামলা চালানো বন্ধ করলে তবেই তারাও যুদ্ধ শেষ করবে। উলেমা কাউন্সিলের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের তরফেই বড় বাহিনী নিয়ে আলোচনায় বসা যেতে পারে।” যদিও পঞ্জশীর দখলের পর মাসুদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্ষমতা নিয়ে রফা করতে রাজি নয় তালিবান, এ কথা আজ সকালেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। আরও পড়ুন: পেটে আট মাসের সন্তান, তবুও মন গলল না তালিবানের! পরিবারের সামনেই গুলি করে খুন পুলিশকর্মীকে