পেটে ৮ মাসের সন্তান, তবুও মন গলল না তালিবানের! পরিবারের সামনেই গুলি করে খুন পুলিশকর্মীকে

বানু নেগার নামক ওই মহিলা পুলিশকর্মীকে তালিবানরা স্বামী ও দুই সন্তানের সামনেই গুলি করে খুন করা হয়। বন্দুক ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মুখও সম্পূর্ণরূপে থেতলে দেওয়া হয়।

পেটে ৮ মাসের সন্তান, তবুও মন গলল না তালিবানের! পরিবারের সামনেই গুলি করে খুন পুলিশকর্মীকে
ফাইল চিত্র। PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 12:43 PM

কাবুল: আট মাসের সন্তানসম্ভবা তিনি, তবুও নিজের কর্তব্য অবিচল ছিলেন। তারই “পুরস্কার” হিসাবে তালিবানিরা গোটা পরিবরের সামনেই গুলি করে খুন করল ওই মহিলা পুলিশ কর্মীকে। ঘটনাটি ঘটেছে আফগানিস্তানের ঘোর প্রদেশে।

বিবিসি সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘোর প্রদেশের ফিরোজ়কোহ শহরের বাসিন্দা ছিলেন বানু নেগার নামক ওই পুলিশকর্মী। স্থানীয় একটি জেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এতে তো মহিলা হয়ে কাজ করছিলেন, তাও আবার আফগান সরকারের অধীনে পুলিশকর্মী ছিলেন- এই “ভয়ঙ্কর”  অপরাধেই ওই মহিলাকে বাড়িতে গিয়ে খুন করে তালিবানিরা।

তালিবানের শীর্ষ নেতার তরফে জানানো হয়েছিল যে, সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে গিয়ে কাউকে খুন করার নির্দেশও দেওয়া হয়নি। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টো চিত্রটাই ধরা পড়ছে। ক্ষমতা দখলের পর থেকেই তালিবানিরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। সরকারি কর্মী, সাংবাদিক বা মার্কিন বাহিনীর মদতদাতাদের আত্মসমপর্ণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই সকলের সামনে খুন করা হচ্ছে।

বানু নেগার নামক ওই মহিলা পুলিশকর্মীকে তালিবানরা স্বামী ও দুই সন্তানের সামনেই গুলি করে খুন করা হয়। বন্দুক ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মুখও সম্পূর্ণরূপে থেতলে দেওয়া হয়। মৃতদেহের পাশে রক্তাক্ত একটি স্ক্রু ড্রাইভারও পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। অভিযুক্তরা আরবি ভাষায় কথা বলছিল বলে জানিয়েছেন মৃতার পরিবার। তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় তালিবানরা হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা এই ঘটনার তদন্ত করবেন বলেও জানিয়েছে।

২০ বছর পর ফের একবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পরই তালিবানরা নিজেদের সহিষ্ণু ও মুক্তমনা হিসাবে পরিচিতি দিতে চাইছে। তবে দেশের একাধিক জায়গায় হিংসা, নির্মম অত্যাচারের ঘটনা জানা যাচ্ছে। তালিবানি শীর্ষ নেতারা এর সাফাই দিয়ে বলেছেন, সরকার গঠন হয়ে গেলেই আইন ব্যবস্থাও জারি হবে। তখন এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটবে না।

শনিবারই কাবুলে মহিলাদের একটি প্রতিবাদ মিছিলেও হামলা চালায় তালিবানরা। নারী অধিকারের দাবিতে যে সমস্ত মহিলারা ওই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন, তাদের উপর কাঁদানে গ্য়াস ও পেপার স্প্রে করে তালিবানরা। বন্দুকের বাট দিতেও একাধিক মহিলাকে আঘাত করে তালিবানিরা।

অন্যদিকে, হেরাতেও মহিলারা  নতুন তালিব সরকার থেকে মহিলাদের বাদ দেওয়ার প্রতিবাদেও মিছিল করেন। তবে সেই মিছিলেও তালিবানরা হাজির হতেই বন্দুকের নলের সামনে পিছু হটতে বাধ্য হন মহিলারা। রবিবার, রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের তরফেও দাবি করা হয়েছে, তালিবানি সরকার গঠনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন আফগান মহিলারা। হিজাব ও বুরখা কেনার জন্য দোকানগুলিতে মহিলাদের ঢল নেমেছে। স্কুল, কলেজ থেকেও বহু অভিভাবক নিজেদের মেয়ের নাম কাটিয়ে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। আরও পড়ুন: আফগানদের উদ্ধারে উদ্যোগী জার্মানি, তালিবানের সঙ্গে আলোচনার শুরুর পরামর্শ মর্কেলের