আফগানদের উদ্ধারে উদ্যোগী জার্মানি, তালিবানের সঙ্গে আলোচনার শুরুর পরামর্শ মর্কেলের
গত ১৫ অগস্ট তালিবানরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করার পরই সমস্ত দেশ আফগানিস্তান থেকে নিজেদের দেশের নাগরিকদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়। এছাড়াও বহু আফগান নাগরিকদেরও শরনার্থী হিসাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বার্লিন: নতুন সরকার গড়ছে তালিবান। এদিকে, সেখানেই এখনও আটকে রয়েছে বহু জার্মান নাগরিক। সেই কারণেই তালিবানিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার ডাক দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল।
রবিবারই জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, “জার্মানির জন্য যারা কাজ করতেন, কীভাবে তাদের আফগানিস্তান থেকে সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে আনা যায়, তা নিয়ে তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতেই হবে। একমাত্র ওদের সঙ্গেই কথা বলার সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই যারা জার্মানির উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে কাজ করতেন এবং বর্তমানে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন, কেবল তাদেরই সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে আনতে।”
গত ১৫ অগস্ট তালিবানরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করার পরই সমস্ত দেশ আফগানিস্তান থেকে নিজেদের দেশের নাগরিকদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়। এছাড়াও বহু আফগান নাগরিকদেরও শরনার্থী হিসাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও প্রতিষ্ঠানে যে সমস্ত আফগান নাগরিকদেরও উদ্ধার করে আনা হয়। তবে তালিবানরা ৩১ অগস্টের মধ্যেই উদ্ধারকার্য শেষ করার নির্দেশ দেওয়ায় তাড়াহুড়ো করে উদ্ধারকার্য শেষ করতে হয়।
তালিবানের তরফেও শেষভাগে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ভিন দেশের নাগরিকদের আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও আফগান নাগরিকরা দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না। এরপরই হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আইসিস-কে আত্মঘাতী হামলা চালানোয় আফগান নাগরিকদের উদ্ধার না করেই দেশে ফিরতে হয় বিভিন্ন দেশকে।
তবে আফগানিস্তানে যারা আটকে রয়েছেন, তাদের উদ্ধার করে আনতে উদ্যোগী জার্মানি। রবিবারই মর্কেল জানান, কাবুল বিমানবন্দর সচল হওয়া “ভাল ইঙ্গিত”, এ বার উদ্ধারকার্য নিয়ে তালিবানের সঙ্গে কথা বলা যাবে। এর আগে অগস্ট মাসেও অ্যাঞ্জেলা মর্কেল বলেছিলেন, বিগত দুই দশকে ন্যাটো বাহিনীর অধীনে আফগানিস্তান যে উন্নয়ন করেছে, তা রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক মহলকে তালিবানের সঙ্গে আলোচনা জারি রাখতেই হবে।
গত সপ্তাহের শুক্রবারই নতুন তালিবান সরকার গঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। চলতি সপ্তহেই নতুন সরকার গঠনের সম্ভাবনা প্রবল। ক্ষমতা দখলের পরই তালিবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা আফগানিস্তানের সমস্ত শ্রেণিকে একজোট করে সরকার গঠন করবে। শিক্ষিতদেরই মন্ত্রিসভা ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্বে বসানো হবে। তবে মহিলারা সরকারি পদে জায়গা পাবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। নতুন সরকার কবে গঠন হয় এবং তার নীতি কী হয়, এর উপরই নির্ভর করছে অন্যান্য দেশগুলির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।
রবিবারই তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাগহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, তালিবান জার্মানির সঙ্গে শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্ক জারি রাখতে চায়। এরপরই মর্কেলের উদ্ধারকার্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তালিবান কি জবাব দেয়, তাই-ই এখন দেখার। আরও পড়ুন: শোকের ছায়া পঞ্জশীরে, তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধ নিহত প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র ফহিম দাস্তি