কাবুল: সম্প্রতিই তালিবানকে সরাসরি বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছিল বেজিং। পাল্টা জবাবে এ বার তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহি বললেন, “আফগানিস্তানে শান্তির বার্তা প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে চিন এবং নতুন করে দেশ দখলে তাদের মতামতকে সাদরে গ্রহণ করা হবে।”
যখন কাবুল বিমানবন্দরে আফগানবাসীরা দেশ ছাড়ার জন্য প্রাণপন লড়াই চালাচ্ছিল, সেই সময়ও তালিবানদের পাশে দাড়িয়েই বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছিল চিন। আফগানিস্তান দখলের আগে সম্প্রতিই চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে দেখা করেছিলেন তালিবানের শীর্ষ প্রতিনিধি মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর। সূত্রের খবর, সম্ভবত তিনিই তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষমতার শীর্ষে বসতে চলেছেন।
ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে চিনের কাছে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ আফগানিস্তান। রাশিয়া বা আমেরিকার মতো তারা সামরিক অভ্যুত্থান না করায় এমনিতেই তালিবানদের খুব একটা ক্ষোভ নেই চিনের উপর। তার উপর রবিবার আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পরই চিনের তরফে তালিবান শাসিত সরকারকে সমর্থন জানানো হয়েছে। গতমাসের বৈঠকেও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছিলেন, “আশা করছি আফগানিস্তান আধুনিক ইসলাম নীতি অনুসরণ করবে।”
গতকালের সাংবাদিক বৈঠকে তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহি বলেন, “চিন একটি বড় দেশ এবং এর অর্থনীতিও বিপুল। আফগানিস্তান পুনর্গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে চিন। এর আগেও আফগানিস্তানে শান্তির বার্তা প্রচারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে চিন।”
তালিবানের হাতে আফগানিস্তানের পতনের পরই এই বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেছিলেন, “আমরা তালিবানদের স্বাগত জানাচ্ছি। আফগানিস্তানের মানুষ নিজেরাই যাতে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণ করে, সেটাই চায় চিন। আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।” আগামিদিনে আফগানিস্তানের উন্নয়নে অংশ নেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন চিনা আধিকারিক। শুধু তাই নয়, তালিবানও যে চিনের সঙ্গে সখ্য তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, সে কথাও জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক মহলের মতে, চিনের তরফে তালিবানকে আগেই মদত দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে সেখানে নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে সুবিধা হয়েছে তালিবানদের। তাদের হাতে যে অস্ত্র রয়েছে, তা অধিকাংশই চিনে তৈরি। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে চিন, তার পথেই অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল আফগানিস্তান। এশিয়ার বিরাট বাজারে ব্যবসা করতেও কিছুটা অসুবিধা হচ্ছিল চিনের। কিন্তু তালিবান দখলে থাকা আফগানিস্তানে নয়া বন্ধুত্বের সম্পর্কের সূচনার মাধ্যমেই নিজেদের সুবিধার ব্যবস্থা করে নিতে পারে চিন। আরও পড়ুন: ‘ও তো বাঁচুক’, পাঁচিলের ও পার থেকে মার্কিন সেনার হাতেই একরত্তিকে তুলে দিলেন অসহায় মা!