New Zealand: “টিকা নেব কিনা সেটা আমাদের ব্যক্তিগত অধিকার” সরকারি নির্দেশিকার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ নিউজিল্যান্ডে
New Zealand, Protest, সমবেত বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবেই প্রতিবাদ করছিলেন। তাদের অনেকের হাতেই 'স্বাধীনতা' অথবা 'আমারা পরীক্ষাগারের ইদুর নই' জাতীয় প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার দেখা গিয়েছে। স্লোগানে মুখরিত প্রতিবাদী জনতা সরকারকে বাধ্যতামূলক টিকাকরণ এবং বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ওয়েলিংটন: মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডে (New Zealand) ধরা পড়ল এক অচেনা ছবি। সংসদের কাছে করোনা টিকা ও লকডাউন নিয়ে সরকারি নির্দেশিকার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হওয়ার কারণে নজিরবিহীনভাবে সংসদ চত্বরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিহাইভ (Beehive) নামে পরিচিত নিউজিল্যান্ডের সংসদ ভবনের (Parliament Building) দুটি প্রবেশ পথ ছাড়া বাকি সব জায়গাতেই বিপুল সংখ্যায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে সমবেত বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই করোনা বিধি অনুসারে মাস্ক পরে ছিলেন না। সেন্ট্রাল ওয়েলিংটন থেকে বিক্ষোভকারীদের মিছিল শুরু হয়ে সংসদ ভবনের সামনে তারা জড় হন।
সমবেত বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবেই প্রতিবাদ করছিলেন। তাদের অনেকের হাতেই ‘স্বাধীনতা’ অথবা ‘আমারা পরীক্ষাগারের ইদুর নই’ জাতীয় প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার দেখা গিয়েছে। স্লোগানে মুখরিত প্রতিবাদী জনতা সরকারকে বাধ্যতামূলক টিকাকরণ এবং বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভরত এক প্রতিবাদী বলেন, “আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে আমার শরীরে কিছু প্রবেশ করানো অনুচিত। আমি সরকারকে বলতে চাই আমদের ২০১৮ সাল ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সেই সময়ে আমরা সকলে স্বাধীন ছিলাম।”
মোটামুটিভাবে বিশ্বের ছোট বড় সব দেশেই করোনা সংক্রমণের প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের (Delta Variant) মোকাবিলা করতে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড। এর ফলে ভাইরাসের প্রকোপ কমাতে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন (Prime Minister Jacinda Ardern) কঠোর লকডাউন (lockdown) বিধি জারি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। টিকাকরণের হার বৃদ্ধি করার মাধ্যমেই করোনা মুক্তির কৌশল নিয়েছিলেন কিউই প্রধানমন্ত্রী।
গতমাসেই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যকর্মী ও শিক্ষকেদের সম্পূর্ণ করোনা টিকাকরণ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, দেশের ৯০ শতাংশ নাগরিকদের টিকাকরণ (covid vaccination) সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই যাবতীয় বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে। টিকা না নেওয়ার বিরুদ্ধে এই ধরনের বিক্ষোভে করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমস্যা তৈরি করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকেই তাই বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করেছেন। যারা টিকা না নিয়ে কাজে যোগ দেবেন তাদের সংক্রমত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে আরও এক জন বিক্ষোভকারীর মত “আমাদের মানুষ হিসেবে গণ্য করা হোক। আমি স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য এখানে এসেছি। সরকার যেটা করছে সেটা ব্যক্তি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে।”
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় নিউজিল্যান্ডে কোভিড সংক্রমণের হার বেশ কম। এখনও অবধি এখানে ৮ হাজার লোক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩২ জন সংক্রমণের কারণে মারা গিয়েছেন। মঙ্গলবার, নিউজিল্যান্ডে নতুন করে ১২৫ টি সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর এখনও অবধি সেদেশের ৮০ শতাংশ মানুষ করোনা টিকা পেয়েছেন।