Cancer research: নিজে নিজেই মরবে ক্যান্সার কোষ! ‘কিল সুইচ’ আবিষ্কার মার্কিন বিজ্ঞানীদের
Cancer research: সবথেকে ভয়ের বিষয়, এখনও পর্যন্ত ক্যান্সারের কোনও ১০০ শতাংশ সফল চিকিৎসা নেই। গত কয়েক দশকে এই বিষয়ে অনেকটাই এগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তবে, এখনও এই রোগ হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে, এবার ক্যান্সারের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণায় ঘটল বড় অগ্রগতি। ক্যান্সার কোষকে হত্যা করতে পারে, এমন 'কিল সুইচ' আবিষ্কারের দাবি করলেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা।
ওয়াশিংটন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হল ক্যান্সার। ২০২০ সালে কর্কট রোগে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ১ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ভারতেও ক্রমে ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে। ২০২২-এর ডিসেম্বরে সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য জানিয়েছিলেন, ২০২০ থেকে ২০২২-এর মধ্যে ভারতে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার বেড়েছে। ২০২২-এ ভারত জুড়ে ৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ এই রোগের শিকার হয়েছিলেন। এই পরিসংখ্যানগুলি থেকেই ক্যান্সারের বিপদের আঁচ পাওয়া যায়। সবথেকে ভয়ের বিষয়, এখনও পর্যন্ত ক্যান্সারের কোনও ১০০ শতাংশ সফল চিকিৎসা নেই। গত কয়েক দশকে এই বিষয়ে অনেকটাই এগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা, তবে, এখনও এই রোগ হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে, এবার ক্যান্সারের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণায় ঘটল বড় অগ্রগতি। ক্যান্সার কোষকে হত্যা করতে পারে, এমন ‘কিল সুইচ’ আবিষ্কারের দাবি করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশের স্যাক্রামেন্টোয় অবস্থিত ‘ইউসি ডেভিস কম্প্রিহেনসিভ ক্যান্সার সেন্টারে-এর বিজ্ঞানীরা।
তাঁদের দাবি, মানব কোষের রিসেপ্টর অংশে একটি বিশেষ প্রোটিন রয়েছে। ওই প্রোটিনকে ক্যান্সার কোষ মারার জন্য নকশা করা যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোষের সিডি৯৫ রিসেপ্টর বা এফএএস-এর অংশে এই প্রোটিন থাকে। এই প্রোটিন রিসেপ্টরগুলি থাকে কোষের ঝিল্লি বা মেমব্রেনে। এই প্রোটিনগুলি রিসেপ্টরের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তাদের একবার জাগিয়ে দিলে, অর্থাৎ, সক্রিয় করা হলে, তারা একটি বিশেষ সংকেত প্রকাশ করে। সেই সঙ্কেত ক্যান্সার কোষগুলিকে নিজে থেকেই ধ্বংস করে দেয়।
মার্কিন গবেষকরা এই চিকিৎসা পদ্ধতির নাম দিয়েছেন সিএআর টি-সেল থেরাপি। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রথমে কোনও ক্যান্সার রোগীর রক্ত থেকে টি-কোষ সংগ্রহ করা হয়। তারপর, গবেষণাগারে ওই টি-কোষগুলির জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে কাইমেরিক অ্যান্টিজেন রিসেপ্টর বা সিএআর (CAR) নামে একটি রিসেপ্টর তৈরি করা হয়। এরপর, ওই রিসেপ্টরগুলিকে ফের রোগীর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই ওই সক্রিয় কিল সুইচ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলিতে হত্যা করা শুরু করে।
এই গবেষণা দলের বিশিষ্ট সদস্য তথা বিজ্ঞানী যোগেন্দর তুশির-সিং জানিয়েছেন, ক্যান্সারের চিকিৎসায় এটা অত্যন্ত বড় অগ্রগতি। তবে, এই চিকিৎসা পদ্ধতির কিছু সীমাবদ্ধতা ধরা পড়েছে। এখনও পর্যন্ত, লিউকেমিয়া এবং অন্যান্য রক্তের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে, অর্থাৎ, যে যে ক্ষেত্রে তরল টিউমার থাকে, সেই ক্ষেত্রগুলিতে এই চিকিৎসায় দারুণ কার্যকর হয়েছে। তবে, স্তন, ফুসফুস এবং অন্ত্রের ক্যান্সারের মতো শক্ত টিউমারের বিরুদ্ধে এর সাফল্যের মাত্রা কম। তুশির-সিং-এর মতে, এটাই এখন তাঁদের সামনে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে তাঁরা আশাবাদী, এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে অদূর ভবিষ্যতেই কঠিন টিউমারের ক্যান্সারগুলির নিরাময়ের জন্যও তৈরি করা যাবে।