Uzbekistan: বিপুল ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মেয়াদ ১৪ বছর বাড়াল মধ্য এশিয়ার এই দেশ
Uzbekistan President wins referendum: গণভোটে সংবিধান সংশোধনের অনুমতি দিল উজবেকিস্তান। সেই দেশের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিওয়েভের মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সংবিধান বদলে ২০৪০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চলেছেন তিনি।
তাসখন্দ: গণভোটে সংবিধান সংশোধনের অনুমতি দিল উজবেকিস্তান। ফলে, সেই দেশের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মির্জিওয়েভের মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, সাত বছরের আরও দুই মেয়াদে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। ২০৪০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন তিনি। সেই দেশের স্বৈরচারী শাসক ইসলাম করিমভের মৃত্যুর পর ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন মির্জিওয়েভ। রবিবারের গণভোটে ৯০.২১ শতাংশ মানুষ সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট মির্জিওয়েভের মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি, এই সংশোধের ফলে মধ্য এশিয়ার দেশটির নাগরিকরা আরও বেশি সামাজিক ও আইনি সুরক্ষা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ, সাংবিধানিক পরিবর্তনগুলির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং মানবাধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
মির্জিওয়েভের দাবি সংবিধান সংশোধনের ফলে উজবেকিস্তানে শাসন ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। তবে এই পরিবর্তনে নিঃসন্দেহে সবথেকে বেশি লাভবান হতে পারেন তিনিই। এর আগে পর্যন্ত উজবেকিস্তানে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ছিল পাঁচ বছর। এছাড়া দুটি মেয়াদের বেশি কেউ রাষ্ট্রপতি হতে পারতেন না। সংবিধান সংশোধনের ফলে, রাষ্ট্রপতি পদে থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে সাত বছর করা হল। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ চারটি মেয়াদে কাজ করতে পারবেন।
৬৫ বছরের মির্জিওয়েভের প্রতি উজবেক জনতার এই ভরসার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। উজবেকিস্তানে তিনি মুক্ত অর্থনীতি চালু করেছেন। পশ্চিমী দেশগুলির সঙ্গেও তাঁর আমলে উজবেকিস্তানের সম্পর্ক অনেক উন্নত হয়েছে। পাশাপাশি, সাড়ে ৩ কোটি জনতার দেশটিকে পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন করিমভ। দায়িত্ব নেওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতাকেও নিয়ন্ত্রণ করেছেন প্রেসিডেন্ট মির্জিওয়েভ।
যদিও, সরকারের সমালোচক এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ তারপরও উজবেকিস্তানের ক্ষমতায় একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারই রয়েছে। তাঁদের দাবি মির্জিওয়েভ, করিমভের আধুনিক উত্তরসূরি ছাড়া কিছু নন। পর পর দুটি নির্বাচনে তাঁর জয় নিয়েও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলেন, প্রকৃত প্রতিযোগিতা হয়নি। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, সেই দেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের উত্থানের সুযোগই দেয়নি সরকার। গার্হস্থ্য হিংসাকে অপরাধ বলে মেনে নেওয়ার মতো কিছু কিছু অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি হলেও, সরকার এখনও কোনও ভিন্নমত পোষণের অনুমতি দেয় না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমী দেশগুলি তাসখন্দের এই সংবিধান বদলে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অনুমোদন নাও দিতে পারে। তবে, উজবেকিস্তানের সুবিধা হল, বর্তমানে ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়ে সকল প্রাক্তন সোভিয়েত দেশগুলির সমর্থনই চাইছে ইউরোপ-আমেরিকা। কাজেই, খুব কঠোর হতে পারবে না তারা। গণভোটে জয়ের জন্য প্রতিবেশী কাজাখস্তান অন্তত প্রথম দেশ হিসেবে উজবেক প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ বলেছেন, ” গণভোটের ফলাফল, মির্জিওয়েভের শাসনের প্রতি উজবেক জনতার আস্থা প্রমাণ দৃঢ় সমর্থনের প্রমাণ।”