Video: হিজাবের ভিড়ে কাপড় খুললেন ছাত্রী! ধরল পুলিশ, রক্ত লাগল গাড়ির চাকায়
Iran female student stripped to protest: ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধর আবহে, এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে, ফের সেই হিজাব বিতর্ক উসকে ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হল। হিজাব পরার কঠোর আইন না মানার দায়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই এক মহিলাকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ওই মহিলা তাঁর পরনের সব পোশাক খুলে ফেলেছিলেন। এই অভিনব প্রতিবাদ জানানোর জন্য তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইরানের ইসলামি সরকার।
তেহরান: মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানের কঠোর ইসলামিক আইনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল সেই দেশের জনতা। মাহসা উপযুক্ত উপায়ে হিজাব পরেনি বলে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ইরানের নীতি পুলিশ। তাদের হেফাজতেই নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধর আবহে, এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে, ফের সেই হিজাব বিতর্ক উসকে ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হল। হিজাব পরার কঠোর আইন না মানার দায়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই এক মহিলাকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ওই মহিলা তাঁর পরনের সব পোশাক খুলে ফেলেছিলেন। শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরে তিনি প্রতিবাদ জানান। কিন্তু, এই অভিনব প্রতিবাদ জানানোর জন্য তাঁকে গ্রেফতার করেছে ইরানের ইসলামি সরকার।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার, তেহরানের আজাদ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে হিজাবের কঠোর নিয়ম না মেনে চলার কারণে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা ওই মহিলাকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই মহিলার জামা-কাপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে দেয় তারা। এরপরই, পোশাক খুলে অন্তর্বাস পরে তিনি সেই হেনস্থার প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে হিজাবের ভিড়ে অন্তর্বাস পরে বসে আছেন ওই মহিলা, হাঁটাহাঁটি করছেন।
এরপরই, তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গিয়েছে। আরেকটি ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তাঁকে আটক করে, জোর করে একটি গাড়িতে তুলছে নিরাপত্তাকর্মীরা। ইসলামিক আজাদ ইউনিভার্সিটিও জানিয়েছে, ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, তার কোনও কারণ জানায়নি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক আমির মাহজুব লিখেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গবেষণা শাখার একজন শিক্ষার্থী অশালীন আচরণ করার পর, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তারক্ষীরা হস্তক্ষেপ করেছে এবং তাঁকে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে। ছাত্রীটি কী উদ্দেশ্য এবং কী কারণে এটা করলেন, বর্তমানে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, গ্রেফতারের সময় শারীরিক নিগ্রহের কারণে আহত হয়েছেন ওই ছাত্রী। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাড়ির টায়ারে ওই ছাত্রীর রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। সম্ভবত, গাড়ির দরজা বা কোনও স্তম্ভে তাঁর মাথা ঠুকে দেওয়া হয়, যার ফলে প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইরান শাখা, ওই ছাত্রীকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ২০২২ সালে মাহসা আমিনির নৃশংস মৃত্যুর পর থেকে, ইরানে মহিলাদের মধ্যে বোরখা ত্যাগ করে দেশের কঠোর হিজাব আইনকে অস্বীকার করার প্রবণতা ক্রমে বাড়ছে। আমিনির মৃত্যুর পর, ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’র স্লোগানকে সামনে রেখে প্রায় তিন মাস ধরে ইরান ও তার বাইরে হিজাব বিরোধী আন্দোলন চলেছিল। প্রায় ৫০০ জনেরও বেশি নাগরিককে হত্যা করে এবং ২২,০০০-এর মতো মানুষকে আটক করে সেই আন্দোলন দমন করেছিল ইরান সরকার। সেই আন্দোলনে যে কিছুই পরিবর্তন হয়নি, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।