জেনেভা: স্বস্তি নেই বছর শেষেও। বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের সংখ্যা। নয়া ভ্য়ারিয়েন্টের দাপটে গত এক সপ্তাহে বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও এক ধাক্কায় ১১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে, এমনটাই জানানো হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(World Health Organization)-র তরফে। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের জেরে সংক্রমণের সম্ভাবনা এখনও অনেক বেশি বলেও জানানো হয়েছে হু(WHO)-র তরফে।
প্রতি সপ্তাহেই বিশ্বের মহামারি সংক্রমণ নিয়ে আপডেট দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মঙ্গলবারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিশ্বের একাধিক দেশে হঠাৎ করে যে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তার পিছনে দায়ী ওমিক্রন। যে দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপট দেখা গিয়েছিল, সেখানেও নতুন করে ওমিক্রনের দাপট দেখা দিচ্ছে। “উদ্বেগের কারণ” (Variant of Concern) হিসাবে চিহ্নিত ওমিক্রন থেকে সামগ্রিকভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি এখনও অনেক বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে বলা হয়, “ক্রমাগত যে প্রমাণগুলি পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ডেল্টা(Delta Variant)-র তুলনায় ওমিক্রনের ক্ষেত্রে দু-তিনদিনের মধ্যেই সংক্রমণ দ্বিগুণ আকারে বৃদ্ধি হচ্ছে। একাধিক দেশে করোনা সংক্রমণও দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রিটেন ও আমেরিকাতে ইতিমধ্যেই ওমিক্রন ডমিনেন্ট ভ্যারিয়েন্ট (Dominant Variant) হিসাবে রূপান্তরিত হয়েছে।”
হঠাৎ করে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, “ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের অধিক সংক্রামক ক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ফাঁকি দেওয়ার কারণেই সংক্রমণের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।” তবে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে প্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল এক মাস আগে, সেখানে সংক্রমণের হার প্রায় ২৯ শতাংশ কমে গিয়েছে বলেও জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বর্তমানে ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ডেনমার্কেই মাথাপিছু সংক্রমণের হার সবথেকে বেশি। এই দেশগুলি থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যে দেখা গিয়েছে, ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তবে ওমিক্রন সংক্রমণ কতটা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে এবং অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরের ব্যবহার সহ চিকিৎসা ক্ষেত্রেই বা কতটা প্রভাব পড়তে পারে কিংবা মৃত্যু হার কত, তা জানতে আরও কিছু সময় লাগবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। সংক্রমণ ও টিকাকরণেও কতটা প্রভাব ফেলতে পারছে এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট, তা জানা জরুরি।
প্রাথমিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে আপাতত ওমিক্রন সংক্রমণের জন্যও করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হলেও, ওমিক্রন সংক্রমণের চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে বিশেষ লাভ হচ্ছে না বলেই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গত অক্টোবর মাস থেকেই সংক্রমণ ধীরে ধীরে কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও, ওমিক্রনের দাপটে বিগত এক সপ্তাহেই সংক্রমণের হার ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে স্বস্তি জুগিয়ে মৃত্যুর হার গত সপ্তাহের তুলনায় ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বিগত এক সপ্তাহেই বিশ্বে নতুন করে ৫০ লক্ষ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে সংক্রমণের কারণে।