Thai-Cambodian Tension: ‘কাকু’ ডেকেই পুড়ল কপাল! বাবার বন্ধু পিঠে ছুরি মারল মহিলার
৩৮ বছরের এক মহিলা ৭২ বছরের এক বৃদ্ধকে কাকু বলে ডেকেছেন। ওই বৃদ্ধ আবার মহিলার বাবার বন্ধু ছিলেন। কাকু তাই ডাকতেই পারেন। তবে, এতেই হয়েছে সর্বনাশ। কাকুই তাঁর ভাইঝির পিঠে ছুরি মেরে দিয়েছেন। আর যার ফলে মান-সম্মান-পদ সব খুইয়ে মহিলা এখন ঘরছাড়া। এমনকি জেলে যেতে হতে পারে

৩৮ বছরের এক মহিলা ৭২ বছরের এক বৃদ্ধকে কাকু বলে ডেকেছেন। ওই বৃদ্ধ আবার মহিলার বাবার বন্ধু ছিলেন। কাকু তাই ডাকতেই পারেন। তবে, এতেই হয়েছে সর্বনাশ। কাকুই তাঁর ভাইঝির পিঠে ছুরি মেরে দিয়েছেন। আর যার ফলে মান-সম্মান-পদ সব খুইয়ে মহিলা এখন ঘরছাড়া। এমনকি জেলে যেতে হতে পারে। বিষয়টা গোলমেলে ঠেকছে তো? চলুন খোলসা করা যাক।
মহিলার নাম পায়েটোঙ্গটার্ন শিনাওয়াত্রা। তাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। আদালতের নির্দেশে এখন সাসপেন্ড। আর কাকুর নাম হুন সেন। তিনি কম্বোডিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এখন সেদেশের শাসকদলের প্রধান। বকলমে দেশটাকে চালান। তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত বিবাদ রয়েছে। ১৯০৭ সালে ফ্রেঞ্চ রুলাররা দুই দেশের মাঝে যে খড়ির দাগ টেনে দিয়ে গিয়েছিলেন, তার অনেকটাই কোনও দেশই মানে না। ফলে, ঝগড়া চলে। বিশেষ করে দুই দেশের সীমান্তে হাজার বছরের পুরনো প্রিয়বিহার মন্দিরের অধিকার নিয়ে দু-দেশের মধ্যে তুমুল ঝামেলা। যা কিনা গত এক দশকে আরও বেড়েছে। যার বড় কারণ, তাইল্যান্ডে সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ঢুকে পড়েছে সে দেশের সেনা। না হলে বর্ডার নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি থাকলেও এমনিতে দু-দেশের সম্পর্ক ভালোই ছিল। গত মে মাসে বর্ডারে আচমকাই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে তাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনা। তাতে কম্বোডিয়ার এক সেনাকর্মী নিহত হন। দু-দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গত মাসে তাই প্রাইম মিনিস্টার পায়েটোঙ্গটার্ন শিনাওয়াত্রা, প্রতিবেশী দেশের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হুন সেন-কে ফোন করেন। কাকু বলে ডাকেন। আর তিনি বলেন, আমিই সমস্যার সমাধান করব। আপনি আমার দেশের আদার সাইডকে নিয়ে ভাববেন না। শিনাওয়াত্রা এই আদার সাইড বলতে নিজের দেশের সেনা এবং সেনাপ্রধানকে বোঝান। এরপরই পিঠে ছুরি।
ফোন কলের রেকর্ড ফাঁস করে দেন হুন সেন। সীমান্ত পেরিয়ে শব্দ চলে যায় অন্যপারেও। তাইল্যান্ডে শিনাওয়াত্রার বিরোধীরা সেটা বাজানো শুরু করে দেন। প্রধানমন্ত্রীর অপসারণের দাবিতে ব্যাঙ্ককে বিক্ষোভ হয়। অভিযোগ ওঠে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের সিনিয়র পলিটিশিয়ানকে আঙ্কল সম্বোধন আর তাঁর কাছেই নিজের দেশের সেনাকে ছোট করে দেখানো। প্রাইম মিনিস্টার পদের অপব্যবহার করেছেন। দেশদ্রোহিতা করেছেন। মামলা গড়ায় আদালতে। ক্ষমা চেয়ে রেহাই মেলেনি। আদালত শিনাওয়াত্রার প্রধানমন্ত্রী পদ সাসপেন্ড করে দিয়েছে। তাঁকে সরকারি বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। এবার মামলা চলবে। চূড়ান্ত রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে পাকাপাকিভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ তো যাবেই। উপরন্তু জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে। আর রাজনৈতিক ক্ষতির কথা না হয় বাদই দিলাম। দেখুন, পায়েটোঙ্গটার্ন শিনাওয়াত্রার বাবা থাকসিন শিনাওয়াত্রা দীর্ঘদিন তাইল্যান্ডের একচ্ছত্র শাসক ছিলেন। ২০০৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠাতে তিনি দেশ ছেড়ে পালান। জারি হয় সেনাশাসন। পরে আবার ইলেকশন হলে জোট সরকার তৈরি করে ক্ষমতায় আসেন থাকসিনের মেয়ে পায়েটোঙ্গটার্ন। জোট সরকার হওয়ায় তাঁর রাজনৈতিক কর্তৃত্ব দুর্বল ছিল। অন্যদিকে সরকারে সেনার প্রভাব ছিল ব্যাপক। অল্পবয়সি তাই প্রাইম মিনিস্টার স্বস্তিতে ছিলেন না। রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতার জন্য এবার একেবারে চরম আক্কেল সেলামি দিতে হচ্ছে তাঁকে।





