Chemical Weapons: কিভ দখলে মরিয়া পুতিন এবার জোর দিচ্ছেন রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগে? গোয়েন্দা রিপোর্টে ভয়াবহ চিত্র
ড্রোনে চাপিয়ে নিষিদ্ধ রাসায়নিক বোঝাই গ্রেনেড ছোঁড়া হচ্ছে ইউক্রেন সেনার ঘাঁটি লক্ষ্য করে। 'ক্লোরোপিকরিন' নামের একধরণের রাসায়নিক ছোঁড়া হচ্ছে। এই কেমিক্যালের ধোঁয়া চোখে গেলে 'টিয়ার গ্যাস'- এর মতোই চোখে জ্বালা করে, জল পড়ে, আক্রান্ত সাময়িকভাবে অন্ধ হয়ে যায়। তীব্রতা টিয়ার গ্যাসের চেয়ে ঢের বেশি। ইউক্রেন শিবিরের সেনারা ধোঁয়ার চোটে প্রাণ বাঁচাতে তাঁবু ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসতেই তাঁদের লক্ষ্য করে মিসাইল-বোমাবর্ষণ করছে রুশ সেনা, অভিযোগ ইউক্রেনের।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আজকের নয়, অনেকদিন ধরেই উঠছে। কিন্তু এবার ইউক্রেনের মাটিতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের তীব্রতা বাড়াচ্ছে মস্কো। ব্যবহার করা হচ্ছে এমন সব বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস, যা মৃত্যুও ঘটাতে পারে। নেদারল্যান্ডস ও জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে বিবিসি। ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যমেও ফলাও করে এই অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগ, ড্রোনে চাপিয়ে নিষিদ্ধ রাসায়নিক বোঝাই গ্রেনেড ছোঁড়া হচ্ছে ইউক্রেন সেনার ঘাঁটি লক্ষ্য করে। ‘ক্লোরোপিকরিন‘ নামের একধরণের রাসায়নিক ছোঁড়া হচ্ছে। এই কেমিক্যালের ধোঁয়া চোখে গেলে ‘টিয়ার গ্যাস’- এর মতোই চোখে জ্বালা করে, জল পড়ে, আক্রান্ত সাময়িকভাবে অন্ধ হয়ে যায়। তীব্রতা টিয়ার গ্যাসের চেয়ে ঢের বেশি। ইউক্রেন শিবিরের সেনারা ধোঁয়ার চোটে প্রাণ বাঁচাতে তাঁবু ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসতেই তাঁদের লক্ষ্য করে মিসাইল-বোমাবর্ষণ করছে রুশ সেনা, অভিযোগ ইউক্রেনের। এমনকী, এই গ্যাস বেশি মাত্রায় প্রয়োগে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে বলে দাবি করেছে নেদারল্যান্ডস মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস বা MIVD ও জার্মান ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস বা BND-সহ আরও বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা। MIVD-র ডিরেক্টর ভাইস অ্যাডমিরাল পিটার রেসিঙ্ক জানিয়েছেন, মে মাস থেকে ইউক্রেনের মাটিতে নিষিদ্ধ রাসায়নিক প্রয়োগের তীব্রতা বাড়িয়েছে মস্কো। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাশিয়ার এই কুকীর্তিতে এখন আতঙ্কে গোটা ইউরোপ-ই। নিন্দায় মুখর হয়েছে আমেরিকা-ও।
নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তো দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে দিয়েছেন, পুতিনের এই কুকীর্তি ঠেকাতে তারা ইউক্রেনকে আরও বেশি করে অস্ত্র পাঠাবেন এবং রাশিয়ার উপরে আরও নিষেধাজ্ঞা চাপাবেন। জার্মান, ডাচ গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, আজ ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে পিছপা হচ্ছেন না পুতিন। আগামীদিনে ইউরোপ আক্রমণ করলেও তিনি একই পন্থা নিতে পারেন। তাই তড়িঘড়ি ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছে ইউরোপের অধিকাংশ দেশই। এমনকী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তো ঘোষণাই করে দিয়েছেন, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। আসলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুমকি-হুঁশিয়ারিকেও এখন আর যেন পরোয়া করছেন না পুতিন। যে কারণে, ট্রাম্পে সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ইউক্রেনে এযাবৎকালের সবচেয়ে তীব্র আক্রমণ করে বসেছে মস্কো। শয়ে শয়ে মিসাইল-ড্রোন হামলা হয়েছে কিভে।
২০২২ থেকে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ৯ হাজার বারেরও বেশি রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে মস্কো, দাবি গোয়েন্দা রিপোর্টে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দাবি সত্যি হলে, তাদের বেশ কয়েকজন সেনার রুশ রাসায়নিক অস্ত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। রাসায়নিকের প্রভাবে গুরুতর জখম অন্তত কয়েক হাজার। ইউরোপিয়ান গোয়েন্দাদের সন্দেহ, রাসায়নিক অস্ত্র সংক্রান্ত গবেষণা ও উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে মস্কো। একই আশঙ্কা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থারও। রাশিয়ার তরফ থেকে অবশ্য এই সব অভিযোগই অস্বীকার করা হয়েছে। বরং রুশ বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, জেলেনস্কি-ই নাকি গোপনে রাশিয়ার শহরগুলিতে রাসায়নিক বোমা বোঝাই বাক্স স্মাগল করে পাঠাচ্ছেন। সেই সব বাক্স রুশ পুলিশ ও গোয়েন্দারা উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করেছেন। পাল্টা ইউক্রেন বলেছে, ‘তারা নয়, বরং রাশিয়াই হাজার হাজার রাসায়নিক বোমা ফেলে ইউক্রেনের সেনাদের মনোবল অন্যায্যভাবে ভাঙতে চাইছে। এটা যুদ্ধের রীতি নয়।’ ‘ক্লোরোপিকরিন’-এর মতো রাসায়নিক সাধারণত খুব কম মাত্রায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়। নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি শরীরে গেলে বমিভাব আসে, চোখমুখ জ্বলে যায়। এবার যুদ্ধক্ষেত্রে এই রাসায়নিককেই অস্ত্র হিসাবে প্রয়োগের অভিযোগ উঠে গেল রাশিয়ার বিরুদ্ধে।





