নয়া দিল্লি : কোভিড মহামারীর (COVID 19 Pandemic) কারণে একটি বড় অংশের মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এ ছাড়া, বেতনভুক কর্মচারীদেরও একটি বড় অংশ ভীষণ খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০২০ সালে করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে লকডাউনের পর থেকেই শুরু হয়েছে এই করুণ পরিস্থিতি। অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের বেতনে কাটছাট হয়েছে। এর পাশাপাশি যাদের চাকরি টিকে গিয়েছে, তাঁদেরও আবার বাড়ি থেকে কাজ করতে হচ্ছে। বিষয়টি আপাতভাবে সুখকর হলেও, ওয়ার্ক ফ্রম হোমের চক্করে চাকুরিজীবীদের খরচ বেড়েছে নানাভাবে। ইন্টারনেট, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ বিল আগের চেয়ে এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়েছে। কোভিডের আগে, এই খরচগুলির জন্য কোনও চিন্তা ছিল না। কারণ, ছোট ছোট খরচগুলি অফিসের থেকে পেতে সমস্যা হত না। কিন্তু এখন আর তা হয় না। তাই আসন্ন বাজেটে (Budget 2022) চাকরিজীবীদের একটি বড় অংশ আশায় রয়েছে, সরকার ওয়ার্ক ফ্রম হোমের জন্য কিছু ভাতার ব্যবস্থা করবে।
চাকরিজীবীদের একটি অংশ মনে করেন, কোম্পানিগুলি যদি এই ধরনের ভাতার সুবিধা দিতে না পারে, তাহলে সরকারের কিছু কর ছাড় দেওয়া উচিত। যাতে বিষয়টির মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় থাকে। ব্রিটেনে সেখানকার সরকার ওয়ার্ক ফ্রম হোমে থাকা কর্মীদের কর ছাড় দিতে বিশেষ নিয়ম করেছে। ভারতের চাকরিজীবীরাও আসন্ন বাজেটে একই ধরনের কিছু একটা ঘোষণার আশায় রয়েছেন।
সম্প্রতি ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস.কম ডেলয়েট ইন্ডিয়াকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, বর্তমান করোনা মহামারী পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রায় প্রতিটি সেক্টরের কর্মীরা বাড়ি থেকে কাজ করছেন। এই কারণে মানুষের বাড়ি থেকে কাজ করার খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট চার্জ, ভাড়া, বিদ্যুতের বিল, আসবাবপত্র ইত্যাদির খরচ। এই অবস্থায় চাকুরিজীবীদের একটি ভাতার ব্যবস্থা করা হলে, তাতে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের খরচ কিছুটা মেটানো যেতে পারে। ডেলয়েট ইন্ডিয়া মনে করে, চাকুরীজাবীদের ৫০ হাজার টাকার ওয়ার্ক ফ্রম হোম ডিডাকশন দেওয়া যেতে পারে, যাতে তারা বাড়ি থেকে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়ার তরফেও অনেকটা একই ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের মতে, সরকারকে ২০২২ সালের বাজেটে বাড়ি থেকে কাজের খরচের উপর কর ছাড় দেওয়া উচিত। তারা আরও বলছে, আসবাবপত্র বা অন্যান্য কাজের সেটআপের জন্য খরচের উপর কর ছাড় দেওয়া উচিত। বাড়িতে আসবাবপত্র বা অফিস সেটআপের খরচের উপর করে ছাড় চাওয়া হয়েছে কারণ কর্মচারী যদি অফিসের কাজের জন্য বিভিন্ন আসবাবপত্র যেমন ডেস্ক, চেয়ার বা অন্যান্য কিছু কেনেন, তবে অফিসে কাজ করার সময় কর্মচারীকে নিজের পকেট থেকেই তার কর দিতে হয়।
ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়া স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা বাড়ানোর জন্য একই ধরনের দাবি করেছে। আয়করের ১৬ নম্বর ধারার আওতায় স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা করা রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করার দাবি করা হয়েছে। কোনও কর্মী তাঁর কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরণের খরচ করে থাকেন। কিন্তু স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সীমা কম হওয়ার কারণে, সংশ্লিষ্ট কর্মী এই খরচগুলি পান না।