কলকাতা: শুরু হয়ে গিয়েছে বিয়ের মরসুম। এরইমধ্যে এল সুখবরটা। লাফিয়ে নামছে সোনার দাম। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ৪ হাজার টাকা কমে ৭০ হাজারের নীচে নেমে গেল সোনা। আগামী কয়েকমাসে তা আরও কিছুটা সস্তা হতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন। সোনা মূলত তিনরকম। ২৪, ২২ এবং ১৮ ক্যারেট। ২৪ ক্যারেটে প্রায় ৯৯ শতাংশ সোনা থাকে। তবে, এই সোনায় গয়না তৈরি করা যায় না। এটি মূলত গোল্ড বার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ২২ ক্যারেটে প্রায় ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা পাওয়া যায়। আর ৭৫ শতাংশের বেশি সোনা থাকে ১৮ ক্যারেটে। এই দু-রকম সোনা দিয়েই মূলত গয়না তৈরি হয়। তার সঙ্গে যোগ হয় মজুরি। আর ৩ শতাংশ জিএসটি নেয় সরকার। গত ৯ অক্টোবর সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছয় হলুদ ধাতুর দাম। ওই দিন ২৪ ক্যারেটের ১০ গ্রাম সোনা বিক্রি হয় প্রায় সাড়ে ৮১ হাজার টাকায়। তারপর থেকেই দাম কমতে শুরু করেছে।
গত মঙ্গলবার খুচরো বাজারে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ছিল প্রায় ৭৮ হাজার টাকা। সেটা নেমে এসেছে ৭৫ হাজারে। আর কলকাতার বাজারে ২২ ক্যারেট গয়নার সোনা নেমে গেছে ৭০ হাজারের নীচে। প্রশ্ন হল সোনার দাম কমার কারণ কী? কারণ, বিশ্ববাজারে সোনার দাম স্পট মার্কেট, ফিউচার মার্কেট, দুটোতেই কমছে। বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমার কারণ কী। এজন্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ দিতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় যাঁরা দুনিয়ার আর্থিক বাজারে বড় লগ্নিকারী, তাঁরা মনে করছেন যে মার্কিন অর্থনীতি এবার শক্তিশালী হবে। আর, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে, তাঁরা সোনা থেকে লগ্নি সরিয়ে কনভেনশনাল শেয়ার মার্কেটে লগ্নি করছেন। তাই, চাহিদাতে কমতি হওয়ায় কমছে সোনার দাম। ভারতের বাজারেও তার প্রভাব পড়ছে।
ভারতের বাজারে আরও একটা-দুটো ফ্যাক্টর কাজ করছে বলে অনেকে মনে করছেন। এই বছর উত্সবের মরসুমে সোনা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সাধারণ মানুষের একাংশের মনে হয়, আগামীদিনে দাম আরও বাড়বে। ফলে, বিয়ের জন্য যাঁদের সোনা কিনতেই হত, তাঁরা কিছুটা আগেই যা কেনার কিনে নেন। তাই এখন চাহিদা কম থাকায় সোনার দাম কমছে। আরেকটা ব্যাপার হল অক্টোবর মাসে এই প্রথম দেশে মিউচুয়াল ফান্ড নতুন রেকর্ড করে ফেলেছে। এসআইপি-র মাধ্যমে বিনিয়োগ ২৫ হাজার কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বেশি। ভারতে লং রানে শেয়ার বাজারও ভালো পারফর্ম করছে। তাই সাধারণ মানুষ গয়নার সোনা কিংবা কাগুজে সোনা ছেড়ে এসআইপি-র মাধ্যমে শেয়ার বাজারে আরও বেশি করে ঢুকতে চাইছেন। সেটাও কিন্তু সোনার দাম পড়ার একটা কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।