চাকরি গিলছে AI, IBM-এর ৭ মিনিটের মিটিংয়ে ছাঁটাই বিশাল সংখ্যক কর্মী!

IBM lay offs: সবথেকে উদ্বেগের বিষয়, এই ছাঁটাই কোনও অর্থনৈতিক কারণে নয়। এটা সংস্থার পরিবর্তনশীল অবস্থার প্রেক্ষিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত। সহজ কথায় বললে, সম্ভবত, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগমনের জন্যই কাজ হারালেন এই কর্মীরা। আর এমনটা নয়, যে ভবিষ্যতে সংস্থার আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে, এই পদগুলিতে ফের নিয়োগ করা হবে।

চাকরি গিলছে AI, IBM-এর ৭ মিনিটের মিটিংয়ে ছাঁটাই বিশাল সংখ্যক কর্মী!
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Mar 13, 2024 | 3:18 PM

: ইঙ্গিতটা মিলেছিল আগেই। সরাসরি পিঙ্ক স্লিপ না ধরিয়ে দিয়ে বা ছাঁটাই না করে, কারা আর সংস্থায় কাজ করতে চান না, কর্মীদের কাছে জানতে চেয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিন কর্পোরেশন বা আইবিএম। সংস্থা জানিয়েছিল, তাঁদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তবে, এবার আর ইনিয়ে বিনিয়ে কাজ ছাড়তে বলা নয়। সংস্থার বিপণন ও যোগাযোগ বিভাগের বহু কর্মীকে সরাসরি ছেঁটে ফেলল বিশ্বের এই অন্যতম বৃহৎ তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা। ঠিক কতজনকে ছাঁটাই করা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, জানুয়ারি মাসেই আইবিএম জানিয়েছিল অন্তত ৪ হাজার কর্মীকে ছেঁটে ফেলা হবে। সবথেকে উদ্বেগের বিষয়, এই ছাঁটাই কোনও অর্থনৈতিক কারণে নয়। এটা সংস্থার পরিবর্তনশীল অবস্থার প্রেক্ষিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত। সহজ কথায় বললে, সম্ভবত, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগমনের জন্যই কাজ হারালেন এই কর্মীরা। আর এমনটা নয়, যে ভবিষ্যতে সংস্থার আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে, এই পদগুলিতে ফের নিয়োগ করা হবে।

আইবিএম-এর পক্ষ থেকে এখনও সরকারিভাবে এই ছাঁটাই সম্পর্কে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে, সংবাদ সংস্থা সিএনবিসি (CNBC) সংস্থার এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে এই ছাঁটাইয়ের খবর প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের কাছে এই ধাক্কাটা এসেছে একেবারে আকস্মিক। আগে থেকে ছাঁটাইয়ের বিষয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। আইবিএম-এর যোগাযোগ বিভাগের প্রধান, জোনাথন আদাশেক মাত্র সাত মিনিটের এক বৈঠক করেন কর্মীদের সঙ্গে। আর ওই সাত মিনিটের ছোট্ট মিটিংয়েই তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘এবার এসো ভাই’।

ছাঁটাইয়ে ইঙ্গিত অবশ্য জানুয়ারিতেই দিয়ে রেখেছিলেন আইবিএম-এর চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার জেমস কাভানাফ। গত বছর ৩,৯০০ লোককে ছাঁটাই করেছিল আইবিএম। নিয়োগের পিছনে খরচ করা হয়েছিল ৪০ কোটি ডলার। কাভানাফ জানিয়েছিলন, চলতি বছরেও নিয়োগে পিছনে তাঁরা ওই পরিমাণ অর্থই খরচ করবেন। তার বেশি নয়। কাজেই, ছাঁটাই যে করা হবে, তা স্পষ্টই ছিল। তবে, এর আগে পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থাগুলি ছাঁটাই করত, তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে। কিন্তু, আইবিএম-এর এই সাম্প্রতিক ছাঁটাইয়ের পিছনে এআই-এর ভূমিকা আছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

সংস্থার সিইও, অরবিন্দ কৃষ্ণ গত বছরই জানিয়েছিলেন, আগামী বছরগুলিতে বেশ কিছু পদে নিয়োগ বন্ধ করবে আইবিএম। যে কাজগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে করা যেতে পারে, সেই কাজগুলির জন্য আর মানুষ কর্মী নিয়োগ করবে না তারা। কোন কোন ক্ষেত্রে এটা হতে পারে? অরবিন্দ কৃষ্ণ বলেছিলেন যে মানব সম্পদের মতো ব্যাক-অফিসের কর্মকাণ্ড যে বিভাগগুলি সামলায়, সেখানে এই ধরনের পরিবর্তন বেশি হতে পারে। অরবিন্দ কৃষ্ণ বলেছিলেন, “আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি , আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সংস্থার ৩০ শতাংশ কর্মীর জায়গায় কাজ করবে এআই এবং অটোমেশন।”

তবে, শুধু আইবিএম নয়, ২০২৪ সালের শুরু থেকে বিশ্বজূড়ে অজস্র সংস্থায় চলছে ছাঁটাই। আলাদা করে উল্লেখ করতে হবে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রের কথা। এক বেসরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে আইবিএম-সহ বিশ্বের অন্তত ২০৪টি সংস্থা কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে। সব মিলিয়ে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের সংখ্যা প্রায় ৫০,০০০। এটা কী এআই-এর কুপ্রভাব? আলোচনা শুরুর সময় এসেছে।