নয়াদিল্লি: আর সপ্তাহ দেড়েকের অপেক্ষা। তারপরই কেন্দ্রীয় বাজেট। সামনেই লোকসভা ভোট। তাই এবার আর পূর্ণাঙ্গ বাজেট নয়, অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করা হবে। সেক্ষেত্রে আয়করের ক্ষেত্রে কতটা কী বদল হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে? অন্তর্বর্তী বাজেটের আগে বেতনভুক চাকরিজীবীদের মুখে মুখে এখন এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে। সাধারণত, অন্তর্বর্তী বাজেটে আয়কর নীতিতে খুব বড়সড় কোনও বদলের সম্ভাবনা কমই থাকে। তবে চাকরিজীবীদের মনে বাজেট নিয়ে প্রত্যাশা রয়েই গিয়েছে।
অন্তর্বর্তী বাজেটে সাধারণত পূর্ববর্তী আর্থিক নীতিকেই ধরে এগোনো হয়। খুব বড়সড় কোনও নীতি পরিবর্তন এক্ষেত্রে দেখা যায় না। বড়সড় কোনও ঘোষণাও এসব ক্ষেত্রে তেমন দেখা যায় না। অতীতে যেসব অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ হয়েছে, সেগুলির ট্রেন্ডের দিকে নজর রাখলেই বিষয়টি কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যায়।
আরএসএম ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ সুরানা সম্প্রতি নিউজ় ১৮-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, হয়ত খুব সামান্য কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। কিংবা এমনও হতে পারে, যে কোনও নতুন পরিবর্তনই করল না সরকার। বর্তমান শাসক দল যদি ভোটের পর আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে করদাতাদের জন্য কী কী পরিবর্তন আশা করা যায়, সে কথাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
বর্তমানে আয়কর আইন, ১৯৬১ অনুযায়ী, করের উপর সাধারণ ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে আড়াই লাখ টাকা। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এটি অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার প্রায় ৫ শতাংশের কাছাকাছি। পাশাপাশি জীবনযাত্রার জন্য খরচও বেড়েছে। তাছাড়া শেষ বার পরিবর্তনের পর থেকে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সাধারণ ছাড়ের অঙ্ক বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ পর্যন্ত করা হতে পারে বলে আশা করছেন সুরেশ সুরানা। এরফলে দেশের প্রায় সাত কোটি করদাতা উপকৃত হবেন বলে মনে করছেন তিনি।
আয়কর আইনের ৮০সি অনুযায়ী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, জীবন বিমার প্রিমিয়াম, গৃহ ঋণের রিপেমেন্ট কিংবা পাঁচ বছরের জন্য ব্যাঙ্কের আমানতের উপর ‘ইনভেস্টমেন্ট-লিঙ্কড ডিডাকশন’ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের বাজেটে এর সীমা রাখা হয়েছিল দেড় লাখ টাকা। তারপর থেকে এটি আর বদল করা হয়নি। সেক্ষেত্রে এবার সেটি বাড়িয়ে দু’লাখ করার চিন্তাভাবনা করা হতে পারে বলে মনে করছেন সুরেশ সুরানা।
আয়কর আইনের ৮০ডি ধারা অনুযায়ী, মেডিক্যাল প্রিমিয়ামের উপর ডিডাকশনের কথা উল্লেখ রয়েছে। এর সীমা রয়েছে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত এবং বর্ষীয়ান নাগরিকদের ক্ষেত্রে তা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এদিকে কোভিডের সময় থেকে স্বাস্থ্যবিমার বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও বেড়েছে। সেক্ষেত্রে এই ডিডাকশনের সীমা সাধারণের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা এবং বর্ষীয়ান নাগরিকদের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করার দরকার রয়েছে বলে মনে করছেন সুরেশ সুরানা।
তবে এগুলি সবই শুধুই কিছু প্রত্যাশা। বাস্তব বাজেট প্রস্তাবে কতটা কী থাকছে, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে ১ ফেব্রুয়ারি নির্মলা সীতারমনের অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ হওয়া পর্যন্ত।