নয়া দিল্লি: রত্ন হারাল দেশ। প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটা। বুধবার রাতে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। রতন টাটার প্রয়াণে শোকের ছায়া দেশজুড়ে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি থেকে সাধারণ মানুষ-সকলেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন তাঁকে। সকলের এত প্রিয়, ভালবাসার মানুষ হয়ে ওঠার পিছনে অন্যতম কারণ হল রতন টাটার জীবন আদর্শ। তিনি শুধু টাটা গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব ও পরিচালনাই দেননি, একইসঙ্গে দেশ গড়তেও সদর্থক ভূমিকা পালন করেছেন। অনেকেরই হয়তো অজানা যে দেশের বহু ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনার ভার নিয়েছে রতন টাটার সংস্থা। এমনকী, স্কলারশিপের মাধ্যমে দুঃস্থ-মেধাবী পড়ুয়াদের বিদেশেও পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
১৯৯১ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন রতন টাটা। এরপরে টাটা বোর্ড ও ট্রাস্টের শীর্ষপদে বসেন। এই ট্রাস্টের অধীনেই একাধিক বৃত্তি বা স্কলারশিপ রয়েছে, যেখানে গরিব, মেধাবী পড়ুয়াদের শিক্ষার দায়িত্ব নেওয়া হয়। রতন টাটা বলেছিলেন যে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে কোনও পড়ুয়ার পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়, তার জন্যই এই উদ্যোগ।
এই স্কলার প্রকল্পের মাধ্যমে, টাটা গ্রুপ মেধাবী ছাত্রদের বিদেশে পড়ার জন্য বৃত্তি দেয়। আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় এই প্রকল্পের অধীনে টাটা গ্রুপ বাছাই করা পড়ুয়াদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বৃত্তি প্রদান করে। প্রতি বছর প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী এই প্রকল্পের সুবিধা পান। স্কলারশিপে মোট ৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়, যার মধ্যে সম্পূর্ণ স্নাতক ফি এবং হোস্টেলের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
টাটা স্টিল মিলেনিয়াম স্কলারশিপের মাধ্যমে মেধাবী এবং অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা করে টাটা গোষ্ঠী। এই প্রকল্পটি কেবলমাত্র টাটা কোম্পানির কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য। এতে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পড়াশোনার জন্য যোগ্য পড়ুয়াদের ৫০ হাজার টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়।
এই বৃত্তি প্রকল্পের অধীনে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের সাহায্য করা হয়। এই স্কিমের সুবিধা পাওয়ার জন্য ন্যূনতম ৬০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে এবং পারিবারিক আয় বার্ষিক ৪ লক্ষ টাকার কম হতে হবে। এই প্রকল্পে যোগ্য পড়ুয়াদের বার্ষিক ৭৫ হাজার টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়। সাধারণ এবং পেশাদার উভয় কোর্সেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যায়।
গবেষণার প্রচারের জন্য টাটা ইনোভেশন ফেলোশিপ স্কিম রয়েছো। এই প্রকল্পের অধীনে, নির্বাচিত প্রার্থীদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।