পানাজি : দলে নেতা-নেত্রী টিকিয়ে রাখতে প্রতিজ্ঞাই ভরসা। কার্যত এরকমই অবস্থা হয়েছে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির (GOP)। আগামী মাসেই দেশের পাঁচ রাজ্য়ে বিধানসভা নির্বাচন। সেই তালিকায় নাম রয়েছে পশ্চিম উপকূলের রাজ্য় গোয়ার নামও। যত নির্বাচন এগিয়ে আসছে তত রাজনীতির পারদ চড়ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে প্রচারে শান দিচ্ছে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার জন্য। তবে কংগ্রেসের শান দিতে হচ্ছে অন্য জায়গা। নির্বাচনী প্রচার নয়, তারা প্রার্থী ধরে রাখতে মন্দির-মসজিদ-গির্জায় প্রতিশ্রুতি কর্মসূচি পালন করছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বুধবার গোয়ার সব কংগ্রেস প্রার্থীরা প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করবে। তাঁরা প্রতিজ্ঞা করবেন যে নির্বাচনের পর তাঁরা দল ছেড়ে যাবেন না। এই কাণ্ড করার কারণ, কংগ্রেস নিশ্চিত করতে চায় রাজ্যের যেসব জনগণ কংগ্রেসের জন্য ভোট দিচ্ছে তাদের ভোট যেন নষ্ট না হয় এবং তাঁরা যেন দলে না ঠকায়। এর আগেও সম্প্রতি একই ছবি দেখা গিয়েছিল এই সৈকত রাজ্যে। পি চিদম্বরম ও আরও অন্যান্য কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেস প্রার্থীরা মন্দির-মসজিদ-গির্জায় যাচ্ছেন এবং সেখানে তাঁরা আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন। এর মাধ্য়মে কংগ্রেস ভোটারদেরও বোঝাতে চেয়েছিল যে তাঁরা নির্বাচনের পর দল এবং রাজ্যের জনগণের প্রতিও বিশ্বস্ত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছিল কংগ্রেস। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিজয়ী প্রার্থী দল বদল করায় ২০১৭ সালে কংগ্রেস গোয়ায় সরকার গঠন করতে পারেনি। ১৭ জন বিধায়কের মধ্যে মাত্র ২ জন বিধায়ক বর্তমানে কংগ্রেসে আছেন। ২০১৯ সালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। তাই এই নির্বাচনের আগে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা তথা প্রতিবেশী রাজ্য মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চভান, বিজেপির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমরা জানি ২০১৭ সালে কী হয়েছিল। বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে, ব্ল্যাকমেল করে এবং অভিযান চালায়। আমরা গোয়ার জনগণের কাছে আমাদের একটি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেওয়ার জন্য আবেদন করছি এবং আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ২১ টির বেশি আসন জিতব।” উল্লেখ্য, গতকাল গোয়ায় জনসভা করতে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে জনসভা থেকে অমিত শাহ গান্ধী পরিবারকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, “একমাত্র বিজেপিই গোয়ায় উন্নয়ন আনতে পারে কারণ এটিই একমাত্র দল যা রাজ্যকে স্থিতিশীলতা দিতে পারে।” তিনি রাহুল গান্ধীকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, “রাহুল গান্ধী ‘মোদী ফোবিয়াতে’ ভুগছেন।” প্রসঙ্গত, দুই সপ্তাহ পরেই গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন।১৪ ফেব্রুয়ারি গোয়ার জনগণ তাঁদের রায় দেবেন ভোটবাক্সে। ১০ মার্চ জানা যাবে চূড়ান্ত ফলাফল।