কলকাতা: “আমরাই প্রধান বিরোধী।” কলকাতা পুরনির্বাচনে ফলাফলের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই বিষয়টি উল্লেখ করে আরও একবার বিষয়টি নিশ্চিত করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি দাবি করলেন, ছাপ্পা ভোট দিয়ে তৃণমূল বামদের দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে এসেছে।
১৩৪ ওয়ার্ডে জিতেছে রাজ্যের শাসক দল। আসন সংখ্যার নিরিখে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে। তাঁদের দখলে ৩ আসন। নির্দল প্রার্থীরাও জয়ী হয়েছেন তিন ওয়ার্ডে। আর দুটি করে আসন পেয়েছে বাম ও কংগ্রেস। তবে কলকাতার বেশিরভাগে ওয়ার্ডেই বামেরা দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে।
সকান্ত মজুমদার বললেন, “আমরাই প্রধান বিরোধী। বামপন্থীরা তৃণমূলকে সাহায্য করেছে। এবার সেটাই ফিরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। ছাপ্পা ভোটে দুয়েকটা সিপিএমকে কেও দেওয়া হয়েছে। মানুষের কাছে একটা ইলিউশন তৈরি করা হচ্ছে যে বিজেপি নয় সিপিএম প্রধান বিরোধী।” তিনি বলেন, “সিপিএম একসময় এইভাবে কথা বলতেন। আমরা ২৩৫- ওরা ৩৫ । আজকে সিপিএম বিধানসভায় কোনো আসন নেই। সেই ট্র্যাডিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নকল করছেন।”
কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে ব্যাপকভাবে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেন, “যে ফল সামনে এসেছে তা বিস্ময়কর। যেভাবে নির্বাচন হল, বিভিন্ন বুথে বুথে সামনে প্রার্থী এজেন্ট যেখানে প্রহৃত হচ্ছেন, সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নির্বাচনে দেখা যাচ্ছেনা তাও ভোটের শতাংশ লাফিয়ে বেড়ে চলা।” তাঁর আরও সংযোজন, “মিনা দেবী আক্রান্ত হল, জামাকাপড় ছেঁড়া হল, তার বুথ লুঠ করা হল। নির্বাচন কমিশন কোনো বুথেই কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পেলেন না। আমাদের প্রার্থী মার খেলেন, পিজি ভর্তি নিল না। আমরা আইনি পথেও থাকব ও রাস্তায় নেমেও আন্দোলন করব।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর সংযোজন, “নির্বাচন কমিশন কোনো বুথেই কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পেল না। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সরকারের একটা ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশন।”
একুশের নির্বাচনে পুড়েছিল মুখ। তবে কলকাতার পুরনির্বাচনকে ঘিরে তখনও বুক বেঁধেছিলেন নেতৃত্ব। বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘পুরভোটে একেবারে নতুন করে ল়ড়বে দল।’ কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়ল সেখানেও। পর্যুদস্ত হতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতার ৬৫ আসনে বামেরা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৪৭ ওয়ার্ডে।
২০১৫ সালে ৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবার তাঁরা কার্যত অর্ধেকে নেমে এসেছে। সংখ্যাটা মাত্র ৩। তবে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি, “কলকাতা ও হাওড়ায় তৃণমূল বেশি শক্তিশালী। সেই কারণেই এই দুটোতে আলাদা করে আগে ভোট করানো হয়েছে। আপনারা জেলার দিকে গেলে দেখবেন অনেক জায়গায় আমরা শক্তিশালী। শিলিগুড়ি বা আসানসোল বোর্ড আমরা দখল করবো। সেগুলিতে ওরা করলেন না ভোট। মানুষের কাছে একটা ইলিউশন তৈরি করা হচ্ছে যে বিজেপি নয় সিপিএম প্রধান বিরোধী।”
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতির কোনও জায়গা নেই’, কলকাতাবাসীকে ধন্যবাদ অভিষেকের