শান্তনু ঠাকুর বনগাঁ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল 2024
বঙ্গ রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত মুখ শান্তনু ঠাকুর। বনগাঁর সাংসদ। দ্বিতীয় মোদী সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় বন্দর ও জাহাজ প্রতিমন্ত্রী। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির সদস্য শান্তনু ঠাকুর হলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র থেকে ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ফের একবার বনগাঁ থেকেই শান্তনু ঠাকুরকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির ক্ষমতা একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছিল অনেক দিন ধরেই, কিন্তু লোকসভা আসন কিছুতেই হাতে আসছিল না। শেষে শান্তনু ঠাকুরের হাত ধরেই বিজেপির বনগাঁ জয় হয়। তিনিই হলেন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের প্রথম বিজেপি সাংসদ। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ থেকে গেরুয়া আবির উড়িয়েছিলেন তিনি। নিজের সংসদীয় এলাকায় শান্তনু ঠাকুরের কর্মকাণ্ড নজরে এসেছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বেরও।
বলা বাহুল্য, প্রথমবারের সাংসদ শান্তনুর কাজে যথেষ্ট খুশি ছিল দিল্লির নেতৃত্ব। তাই আর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি শান্তনু ঠাকুরকে। দ্রুত তাঁর উপর আসে বাড়তি দায়িত্ব। ২০২১ সালে যখন মোদীর ক্যাবিনেটের রদবদল করা হয়, তখন সেখানে জায়গা পেয়ে যান বনগাঁর সাংসদও। শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই দায়িত্বও যথেষ্ট ভালভাবেই পালন করেন শান্তনু। শান্তনুর কাজে সন্তুষ্ট বিজেপি ফের একবার তাঁকে বনগাঁ থেকে প্রার্থী করেছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য।
আপাতভাবে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রথমবারের সাংসদ হলেও, মতুয়া মহাসংঘের অন্যতম নেতা শান্তনু ঠাকুরের রাজনীতির অভিজ্ঞতা রয়েছে যথেষ্ট। তাঁর বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর অতীতে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে মঞ্জুলকৃষ্ণের অপর পুত্র সুব্রত ঠাকুরকেও ২০১৫ সালের বনগাঁ লোকসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। সেবার অবশ্য তিনি পরাজিত হয়েছিলেন, তবে সুব্রত বর্তমানে গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক। অর্থাৎ, সংসদীয় রাজনীতিতে প্রথমবার হলেও পারিবারিক সূত্রে রাজনীতিতে একেবারে নতুন ছিলেন না শান্তনু।
শান্তনু ঠাকুরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার নিদর্শনও রয়েছে যথেষ্ট। শান্তনু ঠাকুরের হাত ধরেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্কের একটি বড় অংশ বর্তমানে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে বলে দাবি করা হয়। সম্প্রতি দেশজুড়ে সিএএ বিধি কার্যকর হয়েছে। সেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে যখন মমতার সরকার নাগাড়ে বিজেপিকে বিঁধছে এবং মতুয়াদের কাছে টানার চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন শান্তনু ঠাকুরের ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সিএএ-এর মাধ্যমে যে মতুয়াদের এতদিনের অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে, সেই বার্তাই প্রতিটি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন শান্তনু।