লখনউ : নির্বাচনে (Assembly Election Result 2022) একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi)। টানা প্রচার চালিয়েছিলেন। ঝাঝাঁলো আক্রমণও শানিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনের কড়াকড়ির আগে পর্যন্ত সভা সমাবেশে ভিড়ও টেনেছিলেন প্রচুর। কিন্তু ইভিএমে তার বিন্দুমাত্রও প্রতিফলন দেখা গেল না। নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্তও যে বিজেপি-কংগ্রেস-সপার ত্রিমুখী লড়াইয়ের কথা বলা হচ্ছিল, তার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারল না কংগ্রেস। বরং লড়াইটা অনেক বেশি দেখা গেল বিজেপি বনাম সপার মতো আঞ্চলিক দলগুলি। ঘটা করে ‘লড়কি হুঁ লড় সকতি হুঁ’ কর্মসূচি করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন প্রিয়ঙ্কা। অনেকে আবার প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর তুলনাও টানছিলেন। কিন্তু ডুবন্ত জাহাজের মতো সলিল সমাধি হয়ে গেল কংগ্রেস শিবিরের। অমেঠি, রায়বেরেলির মতো কেন্দ্রগুলি যেগুলি কংগ্রেসের দূর্গ হিসেবে পরিচিত, সেগুলিও হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের কাছে এ এক দুঃস্বপ্নের মতো।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে ভীষণ সক্রিয়ভাবে প্রচার ময়দানে নেমেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। আর এই ভরাডুবির জন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই দায়ী করছেন প্রিয়ঙ্কাকেই। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী যখন রাজনীতির দুনিয়ায় সক্রিয়ভাবে পা রাখেন এবং উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব নেন, তখন গান্ধী পরিবারের দূর্গ অমেঠি ও রায়বেরেলি থেকে কংগ্রেসের ২ জন সাংসদ এবং দুই জন বিধায়ক ছিলেন। সোনিয়া-কন্যার উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব নেওয়ার তিন বছর পার করে আসার পর এই দুই কংগ্রেস গড় থেকে মাত্র এক জন সাংসদ। সোনিয়া গান্ধী। এই দুই এলাকা মিলিয়ে মোট দশ বিধানসভা কেন্দ্রে এবারের নির্বাচনে কার্যত দাঁত ফোটাতে পারেনি কংগ্রেস।
উত্তর প্রদেশের মাটিতে কংগ্রেসের পায়ের তলার জমি বহুদিন ধরেই দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। এবারের বিধানসভা নির্বাচনেও কোনও বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই কংগ্রেস সরকার গড়তে পারে এমন কোনও ইঙ্গিত ছিল না। তবে তার মধ্যেও অমেঠি এবং রায়বেরেলি – এই দুই এলাকায় নেহরু-গান্ধী পরিবারের নামে কংগ্রেস শিবির ভোট টেনে আসছিল। কিন্তু সেখানেও থাবা বসাতে শুরু করে বিজেপি। প্রথম ধাক্কা ২০১৯ সালে। সেই বছরের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধীকে ধরাশায়ী করে দিয়েছিলেন স্মৃতি ইরানি। আর এমন আশঙ্কা থেকেই দ্বিতীয় কেন্দ্র ওয়ানাড থেকেও নির্বাচনে লড়েছিলেন রাহুল। আর এবারের উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের পর হয়ত সোনিয়া গান্ধীকেও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের জন্য দ্বিতীয় কোনও বিকল্প কেন্দ্র বেছে রাখতে হবে। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।