AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Congress Candidate List for UP Assembly Election 2022: এক ঢিলেই দুই পাখি মারল কংগ্রেস! প্রার্থী হচ্ছেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মা

Congress Candidate List for UP Assembly Election 2022: উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের তরফে প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। সাংবাদিক বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ১২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন, তারমধ্যে ৫০ জনই মহিলা।

Congress Candidate List for UP Assembly Election 2022: এক ঢিলেই দুই পাখি মারল কংগ্রেস! প্রার্থী হচ্ছেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মা
প্রথম দফার প্রার্থী তালিকাতেই চমক রাখলেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। ছবি:PTI
| Edited By: | Updated on: Jan 13, 2022 | 2:33 PM
Share

লখনউ: উত্তর প্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হতে মরিয়া কংগ্রেস (Congress)। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী(Priyanka Gandhi)-র গলায় যে নারীশক্তির জয়জয়কার শোনা গিয়েছিল, প্রার্থী ঘোষণার (Candidate List) ক্ষেত্রেও তারই প্রতিফলন দেখা গেল। প্রথম দফার প্রার্থী ঘোষণাতেই সকলকে চমকে দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হল উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মায়ের নাম।

এ দিন উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের (Uttar Pradesh Asse,bly Election 2022) জন্য কংগ্রেসের তরফে প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। সাংবাদিক বৈঠকে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ১২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন, তারমধ্যে ৫০ জনই মহিলা। সকলকে চমকে দিয়ে উন্নাওয়ে নির্যাতিতার মা আশা সিংয়ের নাম ঘোষণা করেন।

নারীশক্তিতে জোর:

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখেই উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস শুরু করেছিল “লড়কি হু, লড় সকতি হু” নামে প্রচার অভিযান। রাজ্য তথা দেশের নারীশক্তিকে তুলে ধরতেই এই প্রচার শুরু করেছে কংগ্রেস। এ দিন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বলেন, “আমাদের প্রার্থী তালিকা এক নতুন বার্তা দিচ্ছে, আপনি যদি নির্যাতন বা হেনস্থার শিকার হন, তবে কংগ্রেস আপনাকে সমর্থন করবেই। নির্বাচনে কংগ্রেসের ৪০ শতাংশ টিকিটই মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে।”

প্রার্থী তালিকায় মহিলা ও যুব প্রার্থীদের প্রাধান্য বেশি থাকার কারণ হিসাবে প্রিয়ঙ্কা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল দলকে শক্তিশালী করা এবং প্রার্থীরা যাতে সাধারণ মানুষের নানা সমস্যা নিয়ে লড়তে পারে, তার জন্য শক্তি জোগানো। আমরা কোনও ধরনের কুপ্রচারে নাম লেখাব না। আমাদের প্রচার কেবলমাত্র দলিত ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলির উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে কেন্দ্র করেই হবে। আমি উত্তর প্রদেশে যে কাজ শুরু করেছি, তা জারি রাখব। নির্বাচনের পরও আমি উত্তর প্রদেশেই থাকব। এই রাজ্যে আমাদের দল যাতে আরও শক্তিশালী হয়, সেই লক্ষ্যেই আমি কাজ করে যাব।”

উন্নাও কাণ্ডে নির্যাতিতার মা-ও প্রার্থী:

কংগ্রেসের মহিলা প্রার্থীদের মধ্যে উত্তর প্রদেশের উন্নাওয়ে নির্যাতিতা তরুণীর মা আশা সিংকেও প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। নিজের মেয়েকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য তিনি যেভাবে লড়াই করেছিলেন, উত্তর প্রদেশের বাকি মেয়েদের জন্যও তিনি লড়বেন বলে দাবি করেন প্রিয়ঙ্কা।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও টুইট করে লেখেন, “বিজেপি উন্নাওয়ের কন্যার সঙ্গে অবিচার করেছিল। এবার উনি (নির্যাতিতার মা) সুবিচারের মুখ হবেন।”

এক ঢিলে দুই পাখি:

উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মাকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছে কংগ্রেস, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। নির্বাচনের আর মাত্র একমাস বাকি, তার আগেই ভাঙন ধরেছে বিজেপিতে। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ৭ জন মন্ত্রী-বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই আবার বিভিন্ন জনজাতির প্রতিনিধি। উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় “ফ্যাক্টর” জনজাতির ভোটই। রাজ্যের একটি বড় অংশের বাসিন্দাই যেহেতু দলিত বা বিভিন্ন জনজাতি-উপজাতির, তাই ভোটবাক্সে তাদের মতামত বিশেষ গুরুত্ব রাখে। উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মাকে প্রার্থী করে একদিকে কংগ্রেস যেমন নারীশক্তির ঝাণ্ডাও তুলে ধরল, একইসঙ্গে নীচু বর্ণের ভোটও নিজেদের দিকে টেনে নিল।

কী ঘটেছিল উন্নাওয়ে?

২০১৭ সালে উন্নাওয়ের ধর্ষণের ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। গোটা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় দেরী হওয়াকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়েছিল উত্তর প্রদেশ তথা গোটা দেশের রাজনীতিই। সুবিচারের দাবীতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে নির্যাতিতা আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন।

২০১৯ সালে উন্নাও থেকে রায় বারেলী যাওয়ার পথেই একটি ট্রাক এসে ধাক্কা মারে নির্যাতিতার গাড়িতে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মামলার আইনজীবী সহ তিনজনের। লখনউয়ের হাসপাতালে নির্যাতিতার চিকিৎসা শুরু হলেও পরে তাকে এয়ারলিফট করে দিল্লির এইমসে আনা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। তবে মৃত্যুর আগে সিবিআইয়ের কাছে দেওয়া বয়ানে বিজেপি নেতা কুলদূপ সিং সেঙ্গারের নাম উল্লেখ করেন ওই তরুণী।

ধর্ষণ কাণ্ডে তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের নাম জড়ানোর পরই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিল উত্তর প্রদেশের যোগী প্রশাসন। বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালে দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয় কুলদীপকে। এদিকে, কুলদীপের নাম সামনে আসতেই অস্ত্র আইনে গ্রেফতার করা হয় নির্যাতিতার বাবাকে। হেফাজতে থাকাকালীনই পুলিশের মারধরে তাঁর মৃত্যু হয়। ২০২০ সালে উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বাবার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে ১০ বছরের জেল ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে যদিও দিল্লি আদালতের তরফে ওই মামলায় কুলদীপকে মুক্তি দেওয়া হয়।