মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিতেই হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গে হামলার শিকার হওয়ার পর এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
অন্যদিকে ভোট বাংলায় (West Bengal Assembly Election 2021) হাইভোল্টেজ বুধবারে যখন উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে ঝড় তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, তখন সিঙ্গুর, ডোমজুড়-সহ একাধিক জায়গায় সভা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। একদিকে, মুখ্যমন্ত্রী যখন টলিগঞ্জের সভায় এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র নাম না করে তাঁকে ‘রোজভ্য়ালির রোজ়’ অমিত শাহকে ‘গোলগাপ্পা’ বলে তোপ দাগলেন, তখন, মমতার বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। কমিশনের কাছে আর্জি, ‘মমতাকে ব্লক করে দেওয়া হোক। নির্বাচন চলা পর্যন্ত মমতার সভা বন্ধ করা হোক।’ দেখে নিন এক ঝলকে ভোট বঙ্গের কোলাজ…
ভোটের আগে আরও একপ্রস্ত বদল। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক তথা জেলা মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক নিখিল নির্মলকে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। তাঁর পরিবর্তে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় জেলা শাসক হিসেবে আসতে চলেছেন ২০০৭ ব্যাচের আইএএস অফিসার সি মুরুগান। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পাশাপাশি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের দুইজন জেলাশাসককেও বদলি করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের তরফে এমন একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এরপরেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলাশাসককে জেলা প্রশাসনিক ভবনের অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকের সাথে একটি বৈঠক করেন। এদিকে কিছু দিন আগেই জেলা শাসক নিখিল নির্মলের বদলির নির্দেশ জারি হয়েছিল। যদিও পরে বদলি স্থগিত করে দেওয়া হয়৷
তাঁর কনভয়ে হামলায় পুরোপুরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানি আছে। মমতার বিভাজনের রাজনীতিই এর জন্য দায়ী। কোচবিহারে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই অভিযোগ করলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর কথায়, “উনি বুঝতে পেরে গিয়েছেন জেতার কোনও চান্স নেই। তাই বাংলার সর্বনাশ করে দিয়ে যাবে।”
তিনি বলেন, “তাই হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভাজন তৈরি করছেন। বলছেন মুসলমান শেষ হয়ে যাবে। বুথে এজেন্ট না পেলে মাদ্রাসা থেকে লোক আনার কথা বলছেন। চক্রান্ত করছেন মমতা। আফগানিস্তান হয়ে গিয়েছে বাংলা। কমিশনের নোটিসে হবে না। মমতার যাবতীয় নির্বাচনী জনসভা বন্ধ করে দিতে হবে। আর যেন ভাষণ না দিতে পারেন এটা নির্বাচন কমিশনকে দেখতে হবে। উনি ভাষণ দিলে দাঙ্গা বাধবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হবে। আমাদের কর্মীদের জীবন বিপন্ন হবে। ইচ্ছা করে দাঙ্গার পরিবেশ তৈরি করছেন। পশ্চিমবাংলাকে জ্বালিয়ে দিতে চাইছেন। তাই তাঁকে ব্লক করা হোক নির্বাচন থেকে। নাহলে স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। চিরদিন উনি আগুন নিয়ে খেলেছেন। এই হিংসার জবাব দিন মানুষ। পুলিশেরই সুরক্ষা নেই। কাল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বন্দোবস্ত হোক। এফআইআর করছি।”
আপনাদের এখানে যে প্রার্থী হয়েছে তার নাম মুখে আনতে ইচ্ছে করে না। রোজভ্যালির রোজ় একটা। ওর কাছে নাকি রেকর্ড আছে। ভিডিয়ো আছে। দেখা না বাবা! ভিডিয়ো টা দেখা। সে তো দেখাতে পারবি না! বিজেপি তো সন্ত্রাস করবেই। তাই বুঝে ভোট টা দেবেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভয় পাবেন না। নিজের ভোট নিজে দেবেন। নিজে বেছে নিন, ওই রোজ়কে বাছবেন না সুশাসন আনবেন। ওদের একটিও ভোট নয়। মনে রাখবেন। : মমতা
আপনারা বলেন ‘দিদির সরকার’, ‘মমতার সরকার’। যাই বলে থাকুন না কেন, আমি বলে রাখছি আমাদের সরকার আপনাদের জন্য। আমি গ্য়ারেন্টার। কন্যাশ্রী হয়েছে। আরও কাজ হবে। স্বাস্থ্যসাথী করে দিয়েছি। পড়ুয়াদের জন্য বলছি, ওদের জন্য দশ লাখ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। গ্যারেন্টার আমি। নিশ্চিন্তে থাকুন। আবার অগস্ট থেকে দুয়ারে সরকার শুরু হবে। শুরু হবে পাড়ায় পাড়ায় সমাধান। আপনাদের যে-কোনও সমস্যা আমরা সমাধান করব। রেশন তো ফ্রি হবেই। আমাদের সরকারকে আসতে দিন। খেলা হবে। খেলতেই হবে। : মমতা
আরে খেলা তো হবেই! সব মাঠেই খেলা হবে। বাংলা জুড়েই খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। একটা স্লোগান ওদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে! খেলতে এত ভয়! খেলা তো হবেই! হাডুডু হবে, ক্রিকেট হবে। সব হবে। সব বেচে দিয়ে এখন বলবে কাজ করেছে। তুমি আমার এখান থেকে সব তুলে নিয়ে যাচ্ছে। মাছের তেলে মাছ ভেজে ভাবছ অনেক করেছ নরেন্দ্র মোদী! আমার একপা ভেঙে ভাবছ আমি হেরে যাব! আমি হারার নই। :মমতা
খালি সব কিছুর দাম বাড়াচ্ছে। গ্যাসের দাম কত? বিনা পয়সায় আমি চাল দেব আর তুমি নশো টাকার গ্য়াস দেবে! ওই গ্যাসে চাল ফোটাবেন না মোদীকে ফোটাবেন! তুমি ফ্রিতে গ্যাস দাও, নয়তো তোমায় অ্যাস দেব। অ্যাস মানে গাধাও হয়, অ্যাস মানে ছাইও হয়, তোমাকে আমরা কুলোর ছাই দেব। এরপর আরও দাম বাড়াবে। ভোটের জন্য সব করছে। ডেনজারাস ফোর ফোরটি পুরো। সব সময় ভাবে ওদের ভয় পাই। আরে ওরা জানে না, আমায় চমকালে আমি ধমকাই, গর্জালে আমি বর্ষাই। আজকাল আমায় আবার ভেঙাচ্ছে। ‘দিদি দিদিই’! আমায় ভেঙানো! ভেঙান। আমায় ভেঙালে আমারই পঞ্চাশটা করে ভোট বাড়াবে। :মমতা
গুজরাটি দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন আছেন না, গোলগাল ভাই, গোল মতো চেহারা যাঁর, যাই হোক না কেন, ওঁর চেহারাটা দেখতে খুবই লাভলি। পুরো গোলগাপ্পা। যদিও , উনি আমায় খুব একটা পছন্দ করেন না, কিন্তু আমি ওঁকে খুব পছন্দ করি। আজকে বলেছে, হামারা তো আটষট্টি সত্তর মিলেগা। আমি বলি, আপ ক্য়ায়া ক্যায়া পিছলি বার কহে থে ও সোচিয়ে। দাবি, ঝাড়খন্ডে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে পূ্র্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। পেয়েছে কত ভোট! দাবি, মহারাষ্ট্রে ২০১৯-এ দুই তৃতীয়াংশ আসনে এক তৃতীয়াংশ পেয়েছে। আর বাংলায় বলছে আটষট্টি সত্তর পাব! বল আগে দশটা আসন পেয়ে দেখা! তোর অঙ্ক অনুযায়ী, তারপর আমি গোলগাপ্পা খাইয়ে দেব। দিল্লির গোলগাপ্পাটা মিষ্টি। বাংলারটা নোনতা। কলকাতারটা বেশি ভাল খেতে। কী মিথ্যেবাদী রে বাবা! আসলে বুঝে গিয়েছে, জিতবে তো নাই-ই, কাছাকাছিও আসবে না। সেইজন্য এইসব করছে। আর ওয়ার্কারদের তো বোঝাতে হবে। এখন ওয়ার্কারেদরও দর বেশি। এখন ওদের আর শুধু আলুরদম খাওয়ালে চলবে না, টাকার দম চাই। টাকার দম যদি করতে হয়, এত টাকা কত জোগান দেবে! হাওয়া দিচ্ছে। কোভিডে তো টাকাও ঠেকাননি। সব তো আমি দিয়েছি। নরেন্দ্র মোদী তোমায় আগেও বলেছিলাম, টাকা আমি দিয়ে দিচ্ছি, ইনজেকশন দিয়ে দাও। দিল না। আমি নিজের বাড়ি দেখে আমফানের ক্ষয়ক্ষতি বুঝতে পেরেছি। আমি তখন ১৯ লাখ লোককে বাঁচিয়েছি। তোমরা কোথায় ছিলে তখন! ভারতবর্ষের এক লাখ লোক নিয়ে এসেছে এখানে। কোটি কোটি টাকা ঢালছে তো ঢালছে। আর কিছু করে না! :মমতা
নোবেল লরিয়েট অমর্ত্য সেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের গভর্নিং বডির সদস্য। অত সম্মানীয় মানুষ, তাঁকে পর্যন্ত তাড়িয়ে দিল! বলে কি না অমর্ত্য় সেন জমি চুরি করেছেন! এসব কী কথা। শুধু অমর্ত্য় সেন নয়, সুগতকেও তাড়িয়ে দিল! এরা মানুষ। একটা অর্ধশিক্ষিত, গর্ধশিক্ষিত, অবিশ্বাসের, লজ্জার দল! তুমি ধোঁকলা দিও, আমি মাঝে মাঝে ধোঁকলা খাব, তোমায় মাছের ঝোল ভাত খাওয়াব। রাজভোগ খাওয়াব। রসগোল্লা খাওয়াব। কিন্তু বাংলা মাকে দেব না। লজ্জায় মাথা কাটা যায় ওদের কথা শুনলে। বাংলা চেও না। দেব না। অনেক কষ্ট করে তৈরি করেছি এই বাংলা। কোভিডে কাজ করতে পারিনি। কিন্তু বাকি সময়টা ভেবে দেখবেন। :মমতা
বাংলার সংস্কৃতি বদলে দিয়েছে। বলছে রবীন্দ্রনাথ নাকি শান্তিনিকেতনে জন্মেছেন। ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি ভেঙে দিয়েছে। বীরসা মুণ্ডা বলে অন্য একজনের গলায় মালা দিয়ে এসেছে। সব জায়গার নাম বদলে দিয়েছে। যেখানে যা পারছে নাম দিয়ে দিচ্ছে। কোনদিন দেখবেন আমার আপনার নাম বদলে দিয়েছে। আমাদের আর কোনও অধিকার থাকবে না।
বাংলায় ডবল ইঞ্জিন বানাবেন! ছয় বছর ধরে দিল্লিতে আছেন। কটা ইঞ্জিন হয়েছে। কোটি কোটি ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে নেবে। এরা হেসে কথা বলবে। এক চোখে হাসবে, অন্য চোখ থেকে রক্ত বের করে দেবে। অসমের অবস্থা দেখেছেন! অসমে চোদ্দ লাখ বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রেখেছে। একবার বলছে আধার দিয়ে সব লিংক করাও। মানে তোমার সব তথ্য নিয়ে নেবে। তারপর তুলে নেবে। গায়ের জোর! জবরদস্তি! এরা একনায়কতন্ত্রের সুপার ফাদার। অ্যাডল্ফ হিটলারের নাম শুনেছেন, মুসোলিনির নাম শুনেছেন। কিছুদিন আগে ট্রাম্পের নামও শুনেছেন। আর এরা তার চেয়েও এককাঠি ওপরে। :মমতা
প্রফুল্ল পার্ক ,বিধানপল্লি, নাকতলাতে পাঁচটি জলাধারে আছে এখানে। আমি উদ্যোগ নিয়েছি, আগামী ৬ মাসের মধ্যে সবাই গার্ডেনরিচের জল পাবেন। টলিপাড়ার সকলকে ধন্যবাদ জানাব। কেন দরকার আজকে বিজেপিকে তাড়ানো? আমরা কেউ বিজেপিকে চাই না। আজকে সব ভুল গেলে চলবে না। আজকে দুই ভাই জগাই-মাধাই কী করল! আসানসোল থেকে মন্ত্রীকে তুলে নিয়ে এল। সে শিল্পী হতে পারে। তাকে সেই জায়গায় সম্মান করি। কিন্তু যা নিম্নমানের কথাবার্তা বলে সেগুলো মেনে নেওয়ার মতো নয়। টালিগঞ্জে লোকাল ছেলে পেল না, ভোটে দাঁড় করানোর মতো! ‘আরে হায় হায় এ কী হল, আসানসোল থেকে পালিয়ে এল’, আরে তোদের কী মনে হয়, আমি এসব জানিনা! ছোট থেকে স্লোগান দিয়ে অভ্য়স্ত। একজন এমপি হয়ে এখন বিধায়ক হতে চেয়েছে। এরপর পঞ্চায়েতে দাঁড়াবে। তারপর পৌরসভার নির্বাচনে দাঁড়াবে। তারপর গ্রামসভায়। শেষে গোবর্ধন ইলেকশনে দাঁড়াবে, তারপর গুন্ডামির ইলেকশনে দাঁড়াবে। টালিগঞ্জে বহিরাগতকে এনে দাঁড় করাতে হচ্ছে। ভোট পেয়ে যাবে, এক কাপ চা খেয়েই! কী বাংলা গড়বে তোমরা! :মমতা
মলয় লাকি, ইভিএমে ওর নামটা এক নম্বরে আছে। আমার দুই নম্বরে ছিল। আমি চেয়েছিলাম ওয়েস্ট বেঙ্গল থেকে নামটা বাংলা করতে। তাহলে ডব্লিউ পর্যন্ত যেতে হয় না। অধিবেশনে আগে থেকে দাবিদাওয়া পেশ করা যায়। কিন্তু, সে আর তো কেউ বুঝল না, আমাকে করতেও দিল না। আর কী করা যাবে! কেন্দ্রকে তো কিছু বলা যায় না। তবে চিন্তা করবেন না, দিল্লি থেকে গোটা ভারত মিলে ওদের টেনে নামাবে। : মমতা
আমি বলছি, ভোট দিন। ভয় পাবেন না। বুথ এজেন্টদের স্ট্রং হওয়া দরকার। দরকার পড়লে কমবয়সিদের নামান মাঠে। ওরা পাহারা দেবে। আমি সুজনকে সুজন বলি না। কুজন বলি। ওর ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। সিপিএমের কোনও আদর্শ নেই। ওরা তো খারাপই আর তার চেয়েও খারাপ ওই গদ্দারগুলো। ছদ্মবেশী গেরুয়াধারী, মুখের দুপাশে পান ভরে লাল চপচপ করতে করতে হরিনাম করে! ওরা তো আরও গদ্দার। সব হাত মিলিয়ে আছে। সিপিএম বিজেপি হাত মিলিয়ে এইসব করছে। জগাই-মাধাই-গদাই সব। বলছে ত্রিশ টার মধ্যে ছাব্বিশ টা ওরা পাবে। বলি, ভোট কি লুকিয়ে রেখেছিস? মেশিনে ঢুকিয়ে রেখেছিস? জিতবি কী করে? আমার এখনও পায়ে যন্ত্রণা। কিন্তু, আমি তো যাবই। মা-বোনেদের পা ধরে যাব। আমি এই পা নিয়েই ঘুরে বেরিয়েছি। নন্দীগ্রামে রিগিং করতে গিয়েছিল। আমি বুথ আটকে বসেছিলাম, আমার কষ্ট হয়নি! হয়েছে। আমি ভাবিনি। আমি ওখানে বসে না থাকলে সেদিন সত্তরটা বুথে রিগিং হত জানেন! আমার কাছে খবর ছিল। এইসব ছদ্মবেশী গদ্দারদের কী করে চিনব বলুন! তাও তো চেষ্টা করছি। শুধু আমি আপনাদের পাশে চাই। আপনারা থাকুন। তাহলেই আমি লড়াই করতে পারব। আমি শেষ দিন অবধি কাজ করতে চাই। অ্যাক্টিভ থাকতে চাই। ‘আই অ্যাম এ বেঙ্গল টাইগার’, এই পরিচয় টা যেন দিতে পারি। :মমতা
আরে আমি যদি বাঘের বাচ্চা হই, তবে বিজেপি তুমি জিততে পারবে না। ফিরে যাবে খালি হাতে বাংলা থেকে। যা ইচ্ছে তাই করছে। সবার বাড়িতে সিবিআই পাঠানো! সবাই কি চোর! আমার হাতে কিচ্ছু নেই। মনে হচ্ছে যেন রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে। আমার পেছনে এক লাখ লোক লাগিয়েছে। ওইজন্য বিরুলিয়া পরিকল্পনা করে চোট দিয়েছে। ভেবেছে বয়স হয়েছে, পা জখম হয়েছে আর কী করব! ওরা জানে না, আমি সব জায়গায় চোট পেয়েছি। আমি একা লড়াই করব। পাঠাও লোক। লাখ লাখ লোক পাঠাও।: মমতা
সব কিছু বেচে দিচ্ছে। আরএসএসের পাল্লায় পড়ে বিশ্বভারতী থেকে পৌষ মেলা উঠে গেল। নোবেল লরিয়েট অমর্ত্য় সেন, তাঁকেও তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি সব জায়গায় সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যাই। কেউ বিপদে পড়লেই ছুটে যাই। লক্ষ লক্ষ লোকের মাথার ছাদ করে দিয়েছি। আর ওরা কী করেছে? সব অর্ধশিক্ষিত, নয় তো গর্ধশিক্ষিত। কতটুুকু করেছে ওরা বাংলার জন্য? আমরা কিছু করতে বাদ রাখিনি। আমরা হাসপাতাল করে দিয়েছি। বাংলায় নতুন পঁয়ত্রিশটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। একাধিক ব্লাড ব্যাংক তৈরি করেছি। রায়দিঘিতে হাজার টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চাইছে। একটা পরিবারে কমপক্ষে দুটো গ্যাস লাগে। বিনা পয়সায় চাল দেব আর সাড়ে নয়শো টাকায় চাল ফোটাবেন না মোদীকে ফোটাবেন? সব ব্যাংকের সুদ কমিয়ে দিয়েছে।
চতুর্থ দফা ভোটের আগে যাদবপুরে নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভা থেকেই হুঙ্কার মমতার।
বঙ্গাল বানাবে! বঙ্গাল বানাতে দেব ভাল করে! কায়দা করে বলবে বঙ্গাল। ‘সুনার বাংলা’! আমি যেহেতু বাংলা বলি, সেই জন্য ইচ্ছে করে এইসব বলবে। আমায় ভেঙাচ্ছে। সবসময় এসে ভেঙাচ্ছে। ভাবছে কিছুই বলব না। আমি কোন কাজটা করিনি! সব করেছি। যাদবপুরে জলের সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। আমি যেখানে দাঁড়াব সেখান থেকেই জিতব। সবাইকে কিনছে টাকা দিয়ে। সব ফিল্মস্টারগুলোকে কত কত টাকা দিয়ে কিনেছে। বিএসএনএলের টাকা, নোটবন্দির টাকা গেল কোথায়? নরেন্দ্র মোদী জবাব দাও।
প্রথম দফার ৩০ টি বিধানসভা আসনে নির্বাচনের শেষে বড় দাবি করতে শোনা গিয়েছিল বিজেপির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah)। তিনি দাবি করেছিলেন, কমপক্ষে ২৬ টি আসনে জয়লাভ করবে বিজেপি (BJP)। ইতিমধ্যেই তিন দফায় মোট ৯১ টি বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এই ৯১ টি আসনের মধ্যে বিজেপি কতগুলি আসন জিততে পারে, সেই নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। তৃণমূল ত্যাগী ডোমজুড়ের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচার করতে এসে নিজের বক্তব্যের মাধ্যমে তৃণমূলে উপর চাপ বাড়িয়ে রাখেন অমিত।
সবিস্তারে পড়ুন: ‘হতাশায় ভুগছেন মমতা’, প্রথম তিন দফার ভোটে ক’টি আসন পদ্মে? জানালেন শাহ
বঙ্গে এসে এর আগে একাধিকবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) বলতে শোনা গিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে এই রাজ্যের কোনও ভূমিপুত্রকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। তবে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, সেই সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেই এ দিন TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন অমিত শাহ। বুধবার সিঙ্গুরে বিজেপির প্রার্থী তথা তৃণমূল ত্যাগী বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ওরফে মাস্টারমশাইয়ের সমর্থনে একটি রোড শো করেন তিনি। সেখানেই ফের একবার শাহকে দাবি করতে শোনা যায়, “২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে পদ্মশিবির।”
সবিস্তারে পড়ুন: Exclusive: ‘সিঙ্গুরে শিল্প হবে’, রবীন্দ্রনাথকে পাশে নিয়ে বললেন অমিত শাহ
মমতাকে হারাতে দিল্লি থেকে লাখ লাখ লোক তুলে এনেছে। আমি বলি, অত সোজা নয়, আমায় হারানো। আমি হারব না। আগে দিল্লি সামলা, তারপর দেখবি বাংলা। আর ভয় পাবেন না। ভোট দিতে যাবেন। জোট বেধে ভোট দিতে যাবেন। বেছে বেছে এজেন্ট বানাবেন। ওই ভিতু দুর্বল এজেন্ট আমি চাই না। ওই হামলা হলেই পালাবে এমন দেখলেই আগে এজেন্টকে টেনে দুটো থাপ্পড় মারবেন। প্রয়োজনে আমার বঙ্গজননীর মেয়েদের এজেন্ট করুন। দশ জন ভোট দেবেন। দশ জন গল্প করবেন। এইভাবে জোট করে দল বেঁধে ভোট দিতে যাবেন। হামলার ভয়ে পালিয়ে গিয়ে বিজেপির থেকে টাকা খাবে যারা তাদের আমিই ধরে ফেলব। ছত্তিসগড়ে এতজন জওয়ান মারা গেল, তাদের জন্য কী করেছে সরকার? দশজনের বেশি লোক মারা গিয়েছে। খেয়াল করবেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী যেন কোনওভাবে কোনও হামলা না করতে পারে। কোনও অন্যায় করবেন না। গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে এই সব করে বেড়াচ্ছে জওয়ানরা। বিজেপি করবে বাংলা দখল। একটা দুঃশাসন, দুর্যোধনের দল। আরে বাংলায় রবীন্দ্রনাথ দরকার, পাবি কোথায়? বাংলা দখল করতে এসেছে! খেলা হবে।
ওরা বাংলা জানে না। বাংলা বলতে পারে না। কোচবিহারের ইতিহাস জানতে হলে কুচ ইতিহাস পড়তে হবে। কোচবিহারের ইতিহাস পড়তে হবে। বিজেপি এ সব কিছুই জানে না। কোচবিহারকে আমরা হেরিটেজ শহর বানাবো। এখানকার সব কিছু পর্যটকদের জন্য তৈরি হবে। বোম মারলে ভয় পাবেন? ভয় পাবেন না। উদ্বাস্তু কলোনীর সকলকে স্বীকৃতি দিয়েছি।
আমরা সব তীর্থস্থানগুলো সুন্দর করে নতুন করে তৈরি করিয়ে দিয়েছি। ধর্ম যার যার মনে থাকবে। কোনও ভাগাভাগি নয়। বিজেপি খালি ভাগাভাগি করে। হিন্দুর নামে মুসলিমকে, বাঙালির সঙ্গে রাজবংশীকে। এই ভাগাভাগি করে কী হবে? আপনার ঘরে যদি কেউটে আসে সে তো আপনার ঘরেও ঢুকবে, পাশের ঘরেও ঢুকবে। সবাই মিলেই তো মারতে হবে কেউটেটাকে তাই না? সবাইকে একসঙ্গে বাঁচতে হবে তো। কোনও ভাগাভাগি করবেন না। আমিও ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে। আমার ঘরে এক তফশিলি মেয়ে আছে। ও সব রান্না করে। বিজেপি হল ছদ্মবেশী শয়তান। গেরুয়া পরলেই কি মন গেরুয়া হয়। বিজেপি কী বলে? ‘হরে কৃষ্ণ হরি হরি, এ বার তবে কেটে পড়ি।’ শুনলাম রায়দিঘিতে টাকা দিয়েছে। দিয়ে ভোট কিনতে চাইছে। ওসব করবেন না। পাপ হবে, টাকাটা নেবেন, ভোটটা দেবেন না। : মমতা
আলুরচপ দিয়ে ভাত মেখে খাবেন। তবু, মা-বোনেরা আপনারা ভোট টা দেবেন। আপনারা সবাই নাগরিক। মনে রাখবেন আপনাদের ভোটটাই ওরা ভয় পায়। মা-বোনেরা যাতে বাড়ি থেকে বেরতে না পারেন তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নামিয়ে দিয়েছে। নিজের ভোট নিজে দেবেন। আপনারা সবাই নাগরিক। ভোট না দিলেই আপনাদের নাম বাতিল করে দেবে। বলবে আপনি নাগরিক নন। আমার বাংলায় সবাই নাগরিক। মণ্ডল কমিশনে যাদের নাম আছে তাদের সকলের জন্য নতুন নতুন প্রকল্প করা হচ্ছে। আগস্ট মাসে আবার দুয়ারে সরকার হবে। তফশিলি ভাইবোনেদের জন্য ষাটহাজার টাকা পেনশন পাবেন। আঠেরো বছর বয়স থেকে বিধবারা এক হাজার টাকা করে পেনশন পাবে। বিনা পয়সায় খাদ্য পাবেন, শিক্ষা পাবেন। আমি তো জিতবই। আমার ভোট হয়ে গিয়েছে। আমি একা জিতে তো সরকার গড়তে পারব না। প্রত্যেককে জেতাতে হবে। নয়ত বিজেপি টাকা খাইয়ে সব গদ্দারকে তুলে নিয়ে যাবে। আমরা খাদ্যসাথী দিই, বৈতরণি দিই, স্বাস্থ্যসাথী দিই। সরকারি স্কুলের সব মেয়েরা আমার কন্যাশ্রী পান। জুন মাস পর্যন্ত ফ্রি রেশন ছিল। এ বার, ভোট দিলে বাড়িতে বাড়িতে ফ্রি রেশন পাবেন। বাড়ির মেয়েরা নিজের জন্য এক পয়সা হাতে রাখতে পারেন না। সব সংসারে দিয়ে দেন। সংখ্যালঘু মায়েরা মাসে হাজার টাকা করে হাতখরচা পাবেন। মা-বোনেরা ঘরের লক্ষ্মী। কৃষিজমিতে কোনও খাজনা নিই না। ক্ষুদ্র চাষি ও প্রান্তিক চাষিদের জন্য টাকা দেওয়া হবে। মেয়েরা আমাদের গর্ব। ওরা এগিয়ে যাবে। বাবা-মায়েদের চিন্তা করতে হবে না। ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।
অসমে ভোটার তালিকা থেকে ১৪ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়েছে। তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দিয়েছে। এনআরসির (NRC) দোহাই দিয়ে বিজেপি বলল ক্যা করবে। কী করেছে! কিচ্ছু করেনি। ভোটের আগে শুধু চমকে দিয়েছে। ভাবুন তো, সাধারণ মানুষ, আপনাদেরই ঘরের ভাইবোনরা ওখানে আটকে রয়েছে। কষ্ট হয়না? বিজেপির ক্যা (CAA) করা হল ওদের ফু ফা। ওদের কথা বিশ্বাস করবেন না। ওরা কোনও কাজ করে না। নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন করবে বলেছে। কবে করবে? করেনি। মিথ্যা বলেছে। বংশীর হাতে কাগজ আছে, বিনয়ের হাতেও আছে। বংশীর হাতে যেটা আছে, তাতে সভায় বলেছে নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন গড়ে দেবে। আর বিনয়ের হাতে যেটা আছে তাতে স্পষ্ট বলা আছে, এমন কোনও প্রস্তাব করা হয়নি। বুঝতে পারছেন তো, কেমন মিথ্য়া কথা বলে? রাজবংশী মাইনষ্যেদের মিথ্যা কথা কইসে। আমি নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন করে দিয়েছি। ২০ হাজার ছেলেমেয়ের পুলিশে চাকরি হবে। ময়নাগুড়ি-কোচবিহার হয়ে ঝোড়িগোপা আমি করে দিয়েছি। পদাতিক উত্তরবঙ্গ, শতাব্দী, কামাখ্যা এক্সপ্রেস সব আমার করে দেওয়া। লোকসভায় সব ভোট নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। আমি হেরেছি। সব জায়গায় হেরেছি। ভোট নিয়ে চলে গেল তারপর আর পাত্তা পাওয়া গেল না! একটা কোনও কাজ করেনি। এয়ারপোর্টটাও আমরা তৈরি করেছি। যে এমপি হয়েছে , সে এ বার এমএলএ হতে দাঁড়িয়েছে। এরপর গ্রামসভাতে দাঁড়াবে। ২০১৬-তে তিনি নাকি জেলে ছিলেন, সেই তিনি নাকি আজ বিনয়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। ভাবুন, খুনী আজ ভোটে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আরামবাগে কাল কত অত্যাচার করেছে। সুজাতাকে কাল মেরেছে। এত লড়াই করেছেন ওপার থেকে এসে। এপারেও লড়াই করছেন। অন্য়ায় করলে শাসন করতে হয়। শাসন করবেন। আমি বন্দুক তুলে শাসন করি না। মনে রাখবেন, আমি ভুল দেখলে বোঝাবো মানুষকে।
আমরা রাজবংশী ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমি করেছি। আপনারা জানেন, রাজবংশী কালচারাল বোর্ড এগারোশো রাজবংশী মানুষকে ঘর করে দিয়েছি। এরকম অনেক কাজ হয়েছে। ভাওয়াইয়া সেতু, জয়ী সেতু, চ্যাংড়বন্দি মালবাজার, মৃদঙ্গ সেতু, কোচবিহার স্টেশন সব করে দিয়েছি। আমি রেলমন্ত্রী থাকতেই সবটা করে দিয়েছি। আগে যখন কোচবিহারে আসতাম গর্ত গর্ত রাস্তা ছিল। এখন কত তাড়াতাড়ি শিলিগুড়ির মানুষ পৌঁছে যায়। আরও রাস্তা করছি। ন্যাশনাল হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগ করে রাস্তা তৈরি করছি। মেচেদা থেকে শুরু হয়ে বীরভূম হয়ে পুরো উত্তরবঙ্গে আসবে। বাংলা নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। বুঝতে পারছেন তো আপনাদের কত ব্যবসা বাড়বে। চাকরি হবে। অনেক কাজ হচ্ছে আরও হবে।
আজ সভায় যাঁরা উপস্থিত আছেন, সকলের নাম বলতে পারব না। সকলেই আমার প্রিয়। কোচবিহার উত্তরে প্রার্থী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ। বিজেপি বলছে কেন বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে প্রার্থী করলাম। কেন জানেন? আমরা নিয়ে এসেছি কারণ, এখান থেকে বারবার যারা জেতে তারা কোনও কাজ করে না। তাই নিয়ে এসেছি বিনয়কে। ও কাজ করবে। ওকে আমরা পার্টি থেকে বলেছি প্রার্থী হতে। আর আছে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, নাটাবাড়ি থেকে। ও আমার সঙ্গে খুব ঝগড়া করে কিন্তু কুচবিহারের জন্যি লড়াইও করে। ও আমার অনেক পুরনো ছেলে। ওকে ভোট দিয়ে জেতান। কোচবিহার দক্ষিণ থেকে আছেন অভিজিৎ ভৌমিক। লড়াকু ছেলে। একটু দুষ্টু মিষ্টি ছেলে। রাফটাফ কথা বলে। কিন্তু ওকে আপনারা বন্যাতেও পাবেন, খরাতেও পাবেন। বংশীবদন বর্মণ রাজবংশীদের কথা বলে। আমি সব দেখে রেখেছি। কুচবিহারে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি। পঞ্চানন বর্মার নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। বংশী বারবার বলে, তাই আমরা দুশো টি মডেল স্কুল করেছি। প্রত্য়েকে বেতন নিয়ে কাজ করবেন।: মমতা
ভোটে বাইরের থেকে লোক ঢোকানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। আমি জানি, খবর পেয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করছি, অসম ও কোচবিহারের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হোক। বাইরের কোনও লোক যেন ঢুকতে না পারে। সমস্ত মদের দোকান বন্ধ করা হোক। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই।
মা-বোনেদের বলছি, ভোট দেবেন, নির্ভয়ে দেবেন। সকলে মিলে দেবেন। ভয় পাবেন না। ওরা ভয় দেখাবে। কিন্তু ভাববেন না। মেশিন খারাপ দেখলে বুথেই বসে থাকবেন। বসে থেকে মেশিন ঠিক করিয়ে নিয়ে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরবেন। মনে রাখবেন ভোট কিন্তু দিতেই হবে। আপনার ভোট যেন কেউ ছিনিয়ে না নেয়। আর ভোটের সময় কেউ কিছু দিলে খাবেন না। নিজের খাবার নিজে এনে খাবেন। আমি নন্দীগ্রামে দেখেছি, বিজেপির লোকজন এসে খাবার বিলোচ্ছে। সব ভোট পাওয়ার চক্রান্ত।: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শীতলকুচিতে সভার শুরুতেই যান্ত্রিক গোলযোগের সম্মুখীন তৃণমূল সুপ্রিমো। মঞ্চ থেকেই আয়োজকদের কাছে উষ্মা প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘বারবার মাইক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কত টাকা দিয়েছে তোমায়? কত টাকা খেয়েছ? আমি জানি বিজেপির লোকেরা এসব করাচ্ছে। ওতে লাভ হবে না। মাইক নেই তো আমার গলা আছে। আমি সেই নিয়ে চিৎকার করব।’
সুকমায় এতজন জওয়ানের মৃত্যু হল। কী করল বিজেপি? আপনাদের লোক মারা যাচ্ছে আর আপনাদের বলছে, যাও বিজেপির হয়ে ভোট করে আস, মহিলাদের বেরোতে দেবে না। হাম তো আপলোগো কা সাপোর্টার হ্যয়, আপকো ইজ্জত দেতা হ্যয়। অমিত শাহর নির্দেশে সিআরপিএফ এ সব করছে।
পুলিশকে বিশ্বাস করবেন না। আমি দেখেছি, ইলেকশনের সময় পুলিশ পুরো বিজেপি হয়ে যায়। ছোটো পুলিশদের কোনও দোষ নেই। পুলিশদের নেতা সেটিং করে। আমি কাল আরামবাগ দেখে নিয়েছি। আর আরামবাগের পুলিশের রোলও আমি দেখে নিয়েছি। আমরাও কিন্তু লক্ষ্য রাখব, কে কী করছেন।
সারা এলাকায় ১৪৪ ধারা কখনই জারি হয় না। ওটা ২০০ মিটারের মধ্যে হয়। ওটা বিজেপি মিথ্যা কথা বলে। যাতে মানুষ জোট বেধে বেরোতে না পারে। ২০০ মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা কার্যকরী হয়। তার বেশি হয় না।
আমি প্রশাসনকে বলব অমসের বর্ডার সিল করতে। ভুটান শান্তিপূর্ণ এলাকা। তাও বলব সিল করতে। কোচবিহারের আশেপাশে আরও জায়গা আছে, বাংলাদেশের তাও সিল হবে। বাইরে থেকে কেউ এসে ঝামেলা করতে না পারে। আর সিআরপিএফ এসে যদি ঝামেলা করে, তাহলে ঘেরাও করবেন। একদল ঘেরাও করবেন, একদল ভোট দিতে যাবেন। আপনি শুধু ঘেরাও করে রাখেন, তাহলে ভোটটা নষ্ট হবে। এটাই বিজেপির চাল। ঘেরাও ওইভাবে করতে হবে, পরিস্থিতি বুঝে। পাঁচ জন কথা বলবেন, পাঁচ জন ভোট দেবে।
যদিও কোনও এজেন্ট বলে বিজেপি মারছে, তাহলে আগে দুটো থাপ্পড় মারুন। ওরা তো সবচেয়ে বড় শত্রু। তার থেকে আমার কন্যাশ্রীদের এজেন্ট করে দিন। মাদ্রাসার ছেলেমেয়েদের এজেন্ট করে দিন। ওসব এজেন্ট দেবেন না, যারা টাকা নিয়ে পালায়। বাঘের মত রুখে দাঁড়ায় যে সব এজেন্ট, তাদের আমরা পুরস্কৃত করব।
আমরা কিন্তু হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে তফশিলিদের ঘরে বসে খাই না। আমরা তাঁদের কোলে টেনে নিই। বিজেপি কেমন জানেন তো ছদ্মবেশী শয়তান। মানুষকে দেখে মন্দিরে মাথা ঠোকে। গেরুয়া পরলেই কি ভাল হয়। বিজেপি বলে হরে কৃষ্ণ হরি হরি, মানুষের পকেট চুরি করি। হরে কৃষ্ণ হরি হরি, এবার আমরা কেটে পড়ি। এবার তো কেটে পড়তেই হবে। কালকে শুনলাম রায়দিঘিতে কুপন দিয়েছে, ১হাজার টাকা করে পাবে। কিন্তু টাকা নিয়ে ভোট দেবেন না, ওটা পাপ হবে। টাকাটা পুরে তৃণমূলকে ভোট দেবেন।
রবি ঘোষের বিরুদ্ধে লড়াই করছে আমাদের এক গদ্দার। কোনওদিনও ফোন ধরে না, রাস্তায় বেরোয় না। এখানে থেকে সব খেয়ে ভোটের আগে বিজেপিতে গেল। আরে রবি ঘোষ রাত একটাতেও ফোন ধরে। তুমি তো আমারই ফোন ধর না, অন্য লোকের ফোন ধরবে কি?
আমি একা জিতে তো লাভ নেই। আমার ভোট হয়ে গেছে। আমি জিতবই। আমি যেখানে দাঁড়াই জিতবই। আমি এখানে দাঁড়ালেও আপনারা আমাকে ভোট দিতেন। আমি একা জিতে তো সরকার গঠন করতে পারব না। ২৯৪-এর মধ্যে ২০০ ন্যূনতম চাই। আমাদের ২০০ আসন পার করতে হবে।
বিনা পয়সায় খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, পানীয় জল, কাজ পাবেন। ১০০ দিনের কাজ দুশো দিনের হতে পারে। অগস্ট মাসে আবার ‘দুয়ারে সরকার’ হবে। যদি কেউ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড না পান, সব পেয়ে যাবেন। আপনার বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে। আমরা জিতলে তফশিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের মায়েরা ১ হাজার করে হাতখরচ পাবেন। অন্য ক্যাটাগরির যাঁরা আছে তাঁরাও ৫০০ টাকা পাবেন।
তুমি আমাকে শাসন করলে, আমি শোষণ করব না, শাসনই করব। তবে আমি বন্দুক, গুলি নিয়ে খেলব না। মানুষকে বোঝাব, আপনার একটা ভোটের দাম অনেক বেশি। আপনারা ভোট দিলে আমাদের কোনও চিন্তা নেই। মা বোনেদের ভোটটাকে ভয় পাচ্ছে। মেশিন খারাপ করে দিচ্ছে। যাতে মা বোনেরা বাড়ি চলে যায়। একটি দরকার হলে আলুর চপ দোকান থেকে কিনে নেবেন, তাও ভোটটা দেবে। কবে আইন করে দেবে, দিয়ে ডেটনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে, এনআরসি করে দেবে। আমি করতে দেব না। এরকম করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করবেন।
বলছে উদ্বাস্তুদের জমির দলিল দেবে। বলি, ছিটমহল কে করে দিয়েছিল? লোকসভা নির্বাচনে জিতে পালিয়ে গেল। কালকে এত অত্যাচার করেছিল আরামবাগে। আমার তফশিলি মেয়ে, বাঁশ দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমার সিকিউরিটি অফিসারের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমার ক্যান্ডিডেট আছে মানস, গোঘাটে, ওঁকে পর্যন্ত মেরেছে। আমার বুথ প্রেসিডেন্টকে খুন করেছে। আমার খানাকুলের প্রেসিডেন্ট নাজবুলকে পিটিয়েছি। মেয়েরা যাতে ভোট দিতে না পারে, গ্রামে গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। গিয়ে বলেছে ভোট দেওয়া যাবে না।
বলেছিল ক্যা (CAA) করবে, কোথায় ক্যা? ওটা তো ফু ফ্যা! ওরা নির্বাচনের আগে মিথ্যা কথা বলে আর ভাগাভাগি করে। আসলে কোনও কাজ করে না।
আমি কিন্তু নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন করে দিয়েছি কোচবিহারে। পদাতিক থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস আমার করে দেওয়া। শতাব্দী, কামাখ্যা এক্সপ্রেস আমার করে দেওয়া। আপনাদের এখানে বিনয় বর্মণের বিরুদ্ধে যিনি দাঁড়িয়েছেন, তিনি খুনের অভিযোগে জেলে ছিলেন। খুনি এখন হয়ে গিয়েছেন ধনী।
কোচবিহারে আমরা হেরিটেজ টাউন করছি। কোচবিহারে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। ঠাকুর পঞ্চাননবর্মার নামে সেকেন্ড ক্যাম্পাস করছি। ১৭ একর জমি দিয়েছি। রাজবংশী ভাষাকে স্বীকৃতি। রাজবংশী ভাষার ২০০ স্কুল চলে। বাজেটে ২০০ রাজবংশী স্কুলকে অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষকরা মাইনে পাবেন, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার সব কিছু পাবে।
ফের উত্তপ্ত নানুর। মঙ্গলবার রাতে নানুর বিধানসভা এলাকার সিঙ্গি গ্রামে বিজেপি-তৃনমূল সংঘর্ষ। এলাকায় বেপরোয়া বোমাবাজি। সিঙ্গি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে উদ্ধার হয় তাজা বোমা। আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থলে বোলপুর থানার পুলিশ৷
আজ বাংলায় ফের অমিত শাহ। চার জায়গায় রোড শো করবেন তিনি। এদিকে, উত্তরবঙ্গে পরপর দুটি সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় ফিরে আরও ২ সভায় অংশ নেবেন তিনি। হুগলি ও হাওড়ায় তিন সভা রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।