Boston Durga Puja: বস্টনে ৪০ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপুজো, সৌজন্যে ‘বাংলা ও বিশ্ব’

Durga Puja 2023: কখনও কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার নানা নিয়ম মেনে সমাধান করা, আবার সেটা হয়ে গেলে শিল্পীদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা, আর সঙ্গে স্থানীয়দের নিজস্ব অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। বস্টনে স্থায়ী মণ্ডপ পাওয়া যায় না। নাই-ই বা থাকুক,পুজোও তিথি মেনে প্রতিবার সম্ভব হয় না।

Boston Durga Puja: বস্টনে ৪০ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপুজো, সৌজন্যে ‘বাংলা ও বিশ্ব’
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 26, 2023 | 4:20 PM

“বাজলো তোমার আলোর বেণু…” সুদূরে সাগরপারেও বেজে উঠেছিল বেণু… মনে-মনে। সুদূর আমেরিকায় কাশ ফুল দেখা যায় কি? ৫৫মাইল গতিবেগ যেখানে আসা-যাওয়ার রাস্তায় সবচেয়ে বেশি, সেখানে চকচকে রাস্তায় দ্রুত গতিতে গাড়ি চলতে-চলতেই দু’পাশে কাশফুলের সমারোহ জানিয়ে যায় মহামায়ার আগমনী—দূর প্রবাসে বাঙ্গালির মনে ‘আলোর বেণু’ বেজে ওঠে সঙ্গে সঙ্গে। সারা বছর ধরে পুজোর ব্যবস্থায় বাঙ্গালিরা সবাই থাকে ভীষণ ভাবে ব্যস্ত। কখনও কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার নানা নিয়ম মেনে সমাধান করা, আবার সেটা হয়ে গেলে শিল্পীদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা, আর সঙ্গে স্থানীয়দের নিজস্ব অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। বস্টনে স্থায়ী মণ্ডপ পাওয়া যায় না। নাই-ই বা থাকুক,পুজোও তিথি মেনে প্রতিবার সম্ভব হয় না। আর পাঁচ দিন ধরে পুজো… সেটাও ওই দেশের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মেলে না। তাই আড়াই দিনের পুজোতেই সবার আনন্দ। পুরো বৈদিক আচার মেনেই পুজো হয়। সেখানে হয়তো থাকে না কোনও মণ্ডপ, কিন্তু স্কুলের জিমখানাগুলো সেই অভাব মিটিয়ে দেয়। ছোটদের পুজোর আনন্দে খেলার জায়গা থাকে প্রচুর।

বাড়তি সুবিধে সম্মেলন-কক্ষ থাকায় বাংলার শিল্পীদের নিয়ে জমজমাট অনুষ্ঠানের হাতছানি। সঙ্গে হাত ডুবিয়ে পুজোর খাওয়া, আরও অনেক কিছুই থাকে পূজার এই ব্যবস্থায়। বোস্টনের চারটি পুজোর অন্যতম ‘বাংলা ও বিশ্ব’-এর পরিচালিত পুজো। সেই ১৯৮২ সালে বাঙ্গালির চিরাচরিত সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক পরিচয়কে তুলে ধরতে ও নানা পূজা-সহ বিবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য গঠিত হয়েছিল এই সংগঠন। আজও সেই ধারাকে বয়ে নিয়ে চলেছে বর্তমানের নির্বাচিত পরিচালন সমিতি। এই ৪০তম বছরেও তাঁর অন্যথা হয়নি, অক্টোবরের ২০ থেকে ২২শে অক্টোবর জমজমাট পুজোর আসর বসেছে রীতি মেনেই। সঙ্গে দু’বেলা পেট ভরে মুখরোচক খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন তো ছিলই, উপরি হিসেবে প্রতিদিন সন্ধ্যায় বাংলার প্রথিতযশা শিল্পীদের গানের আসর, যেখানে এবার এসেছেন অমিত কুমার ২০ অক্টোবর, ‘ভূমি’ ব্যান্ড ২১-এ অক্টোবর।

আর ২২ তারিখ, অর্থাৎ শেষ দিনে ছিল লোপামুদ্রা মিত্র আর জয় সরকারের পারফরম্যান্স, সঙ্গে প্রতিদিনই বোস্টনের স্থানীয় বাঙ্গালিদের অনুষ্ঠান তো ছিলই। বাদ যায়নি শাড়িতে ফ্যাশান প্যারেড-ও। এ ছাড়া করোনার জন্য গত দু’বছরে সত্যজিত রায়ের শতবার্ষিকী পালন করতে না-পারায় এবারের পুজার প্রধান বিষয় হিসেবে সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধা জানিয়ে মণ্ডপ সজ্জাও হয়েছিল।পুজোর শেষ দিনে সিঁদুরখেলা বঙ্গনারীর প্রিয় অনুষ্ঠান এবং সেই সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সংস্কার। সঙ্গে ঢাকের তালে জমিয়ে নাচ… বাদ যায়নি কিছুই।

বাঙ্গালির পুজো মানেই পুজোর বাজার। আর সে ব্যাপারে এলাহি বাজারের ব্যবস্থাও করেছিল ‘বাংলা ও বিশ্ব’, সঙ্গে পুজোর ক’দিন ফুচকা, ঝাল্মুড়ি চাই-ই চাই। সে সবই ছিল ‘বাংলা ও বিশ্ব’-এর পুজোয়। বাংলা থেকে বহু দূরে সমুদ্রপারের দেশে পুজোর আনন্দে সবার সঙ্গে মেতে উঠেছিল ‘বাংলা ও বিশ্ব’র মণ্ডপ।