আর মাত্র দুই দিন… সারা দেশ সেজে উঠবে তেরঙ্গায়। রেড রোডে হবে পদযাত্রা। ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে গোটা দেশ জুড়ে। স্কুল বন্ধ। তাই বহু স্কুলে এবারও ভার্চুয়ালিই পালিত হবে স্বাধীনতা দিবস। খুদে গলায় ল্যাপটপের স্ক্রিন জুড়ে শোনা যাবে ‘জনগণমন অধিনায়ক জয় হে…’।
গায়ের রক্ত হয়ে উঠবে গরম, চোখে আসবে জল, মনের দৃশ্যপটে একের পর এক ফুটে উঠতে থাকবে দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া সেই শত-শত তরুণ তুর্কির না-ভোলা ইতিহাসের অমর আখ্যান। রবিঠাকুর যখন গানটি লিখেছিলেন, তখন তা যে ভবিষ্যতে জাতীয় সঙ্গীত হতে চলেছে, তা তিনি ঠাওর করতে পারেননি। ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘জন গণ মন’-কে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু মিজিশিয়ান হার্বার্ট মুরিলকে এই গানের সুর প্রসঙ্গে তাঁর মতামত জানাতে বলেছিলেন। ‘জন গণ মন’-র সুর শুনে প্রথমে মুরিলের মনে হয়েছিল এই গান একটু ধীর গতির অর্থাৎ স্লো। তাই গানের টেম্পো খানিকটা বাড়িয়ে দেন তিনি। সেই সঙ্গে ফ্রান্সের জাতীয় সঙ্গীত La Marseilles-এর আদলে গড়ে তুলেছিলেন নতুন গান। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক কেএসএস সেশান জাতীয় সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’র একটি সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছিলেন।
ঠিক এইভাবেই জাতীয় সঙ্গীতকে সুষ্ঠু ভাবে গাওয়ার জন্য রয়েছে কিছু ‘নিয়ম’। এঁদের মধ্যে বেশিরভাগ ‘নিয়ম’-এর লঙ্ঘন যদিও আইনের চোখে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না, তবু নিজেকে ভালবেসে, দেশকে ভালবেসে, দেশের ভালবাসায় যারা করেছেন আত্মত্যাগ, তাঁদের ভালবেসে এই স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় সঙ্গীত গাইবার সময় মনে রাখতেই হবে এই কয়েটি জিনিস—
⦁ জাতীয় সঙ্গীত গাইবার সময় শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হবে সাবধানের ভঙ্গীমায়। চোখের দৃষ্টি যেন থাকে সোজা অথবা জাতীয় পতাকার দিকে, উঁচুতে। এ গান পরাধীনতা মুক্তির এক অমোঘ আস্ফালন। তাই শরীরীভঙ্গীমাতেও যেন ফুটে ওঠে সেরকমই হাবভাব। বুকের বাঁ দিকে হৃদয়, তাই সেখানেও রাখা যেতে পারে হাত।
⦁ জাতীয় সংগীত কোনওভাবেই ভুল গাওয়া যাবে না। একদম সঠিক উচ্চারণে এবং সুরে শুদ্ধ ভাবে গাইতে হবে এবং গাওয়ার সময় এর প্রতি যথাযথ সম্মানও দেখাতে হবে।
⦁ জাতীয় সঙ্গীত গাইবার নির্ধারিত সময় ৫২ সেকেন্ড। অকারণে তা দীর্ঘায়িত করা জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা। তাই জাতীয় সঙ্গীত ৪৯ সেকেন্ড থেকে ৫২ সেকেণ্ডের মধ্যে শেষ করা বাঞ্ছনীয়।
⦁ যদি গানের কথা জানা না থাকে তবে শান্তভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানো উচিত। ভুল গাওয়ার চেয়ে না গাওয়া ভাল। জাতীয় সঙ্গীত গাইতে-গাইতে হাঁটাচলা করা, কথা বলা পরোক্ষে দেশকেই অসম্মান করা।
⦁ উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুসারে কোনও ব্যক্তি যদি শারীরিকভাবে অক্ষম হন, সেক্ষেত্রে তাঁর জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন উঠে না দাঁড়ানো অপরাধ অথবা অসম্মান হিসেবে বিবেচিত হবে না। বার্তা দিতে তিনি একটি হাত তুলে রাখতে পারেন উপস্থিত হওয়ার ভঙ্গিমায়।
⦁ জাতীয় সঙ্গীতকে কেন্দ্র করে কোনওরকম অপশব্দ ব্যবহার আদপে অপরাধ।
⦁ জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় মাঝপথে যদি কেউ বাধা দিয়ে থাকেন, তবে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রিভেনশন অফ ইন্সাল্ট টু ন্যাশনাল অনার আইন-১৯৭১ ও ভারতীয় সংবিধানের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী আইনি কার্যক্রম শুরু হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে, জরিমানা এমনকি তিন বছরের কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
TV9 News Network কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্য়োগ #AzadiKaAmritMahotsav। Rashtragaan-এর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত। আসুন, নিজের গলায় জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে www.rashtragaan.in-এ আপলোড করে এই মহতী উদ্য়োগে অংশগ্রহণ করুন।