সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ প্রয়াত, সাংস্কৃতিক জগতে ইন্দ্রপতন

গত এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। শঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছিল বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য অনুরাগীর মধ্যে। মৃত্যুর গুজবও রটেছিল বেশ কয়েকবার।

সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ প্রয়াত, সাংস্কৃতিক জগতে ইন্দ্রপতন
বুদ্ধদেব গুহ

| Edited By: বিহঙ্গী বিশ্বাস

Aug 30, 2021 | 4:24 AM

সাহিত্য জগতে এ এক ইন্দ্রপতন। প্রয়াত হলেন সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। রবিবার রাত ১১ টা ২৫ নাগাদ শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।হাসপাতাল সূত্রে খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বুদ্ধদেব গুহ।

গত এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। শঙ্কার মেঘ দেখা দিয়েছিল বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য অনুরাগীর মধ্যে। মৃত্যুর গুজবও রটেছিল বেশ কয়েকবার। কিন্তু সে সব গুজব নস্যাৎ করে প্রায় ৩৩ দিন হাসপাতালে কাটিয়ে করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। সগর্বে ঘোষণা করেছিলেন ‘এখনই ফুরব না’। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল তাঁর গুণমুগ্ধ পাঠকরা।

তবে এই মাসেরই প্রথম দিকে আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবীণ এই সাহিত্যিক। ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে সূত্রে জানা যায় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হয়েছে তাঁর। মুত্রথলীতেও দেখা গিয়েছে সংক্রমণ। অবস্থার অবনতি ঘটতেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় আইসিইউতে। চার চিকিৎসকের এক দল দেখছিলেন তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

আরও পড়ুন- বুদ্ধপূর্ণিমায় বুদ্ধদেবের প্রত্যাবর্তন, করোনাকে হারিয়ে বাড়ি ফিরলেন লেখক

এ দিন রাতেই প্রয়াত হলেন বুদ্ধদেব গুহ। কয়েক মাস আগেই করোনা কেড়েছে কবি শঙ্খ ঘোষকে। দিন কয়েক আগে প্রয়াত হয়েছেন বাচিকশিল্পী গৌরি ঘোষও। এ বার বুদ্ধদেব গুহ। শিল্পীমহলের মন ভাল নেই আজ। কাঁদছেন তাঁর অসংখ্য ভক্তকুল।

১৯৩৬ সালের ২৯ জুন কলকাতায় জন্ম নিয়েছিলেন বুদ্ধদেব গুহ। পেশাগত জীবন শুরু চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে। পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন। আকাশবাণী কলকাতার অডিশন বোর্ডের সদস্যও ছিলেন তিনি। তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘জঙ্গলমহল’। একের পর এক কালজয়ী উপন্যাসে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে। তাঁর বিখ্যাত ঋজুদা সিরিজের বই ‘ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। এ ছাড়াও ‘মাধুকরী’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘একটু উষ্ণতার জন্য’, ‘বাবলি’, ‘কুমুদিনী’– সহ তাঁর কালজয়ী সৃষ্টি পাঠকমনে দাগ কেটে গিয়েছে। আজ চলে গেলেন তিনি।  রয়ে গেল তাঁর কাজ… তাঁর কৃষ্টি…।