হালে নয়, ক্লাস নাইন থেকেই ‘ক্যানসার’-এ আক্রান্ত গায়িকা স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, জানতেন?
Swagatalaksmi Dasgupta: অনেকেই জানেন গায়িকা স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই অসুস্থতা তাঁকে কাবু করতে পারেনি একচুলও। তিনি একদিনের জন্যেও নিজের পছন্দের গান থেকে সরে আসেননি। বরং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন। এই মনুষ্য জীবন তাঁর কাছে অত্যন্ত দামী। এই লড়াইয়ে স্বাগতা পাথেয় করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ভগবত গীতাকে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর দোসর। দুঃখে-আনন্দে সবকিছুতেই কবিগুরুকে স্মরণ করেন গায়িকা স্বাগতলক্ষ্মী দাশগুপ্ত। তিনি সেই বাঙালি গায়িকা, যিনি রবীন্দ্রনাথের ‘রামায়ণ’-এর আঙ্গিকে গান নিয়ে নাড়াচাড়া করেছিলেন ৷ যাঁর ধ্য়ানজ্ঞান ‘ভগবত গীতা’। আর রবীন্দ্রসঙ্গীত তো আছেই। সারাজীবন গানের সাধনা করা এই মানুষটা খুব ছোটবেলা থেকেই নানারকম দুরারোগ্য ব্যাধিতে জর্জরিত। ঈশ্বরের কাছে কি প্রার্থনা করেন স্বাগতালক্ষ্মী? এই সময় দাঁড়িয়ে তাঁর একটাই প্রার্থনা–পরের জন্মে যেন ঈশ্বর তাঁকে একটা সুস্থ স্বাভাবিক শরীর দান করেন।
দুর্দান্ত কণ্ঠের অধিকারী স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত ক্লাস নাইনে পড়ার সময় ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই কথাটা তিনি কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন। বলেছিলেন, “লোকে যখন আমার ক্যানসারের কথা জানতে পারেন, তখন যুদ্ধটা আমি অনেকটাই জয় করে ফেলেছি। আমার কঠিন লড়াইয়ের সময়কার কথা কেউ জানেনই না। আমি যে ক্যানসারে আক্রান্ত, সেই কথা মানুষ জানতে পেরেছেন ২০১৯ সালের পর। কিন্তু সত্যি বলতে কী, ক্লাস নাইন থেকে আমি অসুস্থতার সঙ্গী। ২০১৯ সালে ক্যানসারটা খুব বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করে। আমাকে কেমোথেরাপি করাতে হয়। মাথার সব চুল উঠে গিয়েছিল। সে সময় রবীন্দ্রনাথ আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি অনেক ভেবে দেখলাম, মানুষটা জীবনে ৮টা মৃত্যু শোক পেয়েছেন। সেই তুলনায় আমি নগণ্য। তাই ওই অসুস্থতার মধ্যেও একটা দিনের জন্যেও আমি গানকে ছাড়িনি। আজও অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও আপনাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি। একটাই কারণ, আমি গানকে খুব ভালবাসি। গানের জন্য আমি অনেক কঠিন পথ অতিক্রম করতে পারি।”
স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্তের আসল নাম লক্ষ্মী। স্বাগতা নামটা তাঁকে দিয়েছিলেন এক নিকট আত্মীয়। ফলে পরবর্তীতে পাওয়া স্বাগতা নামটা তিনি অস্বীকার করতে পারেননি। লক্ষ্মীর ঠিক আগে বসিয়েছিলেন স্বাগতাকে। তাঁকে আরও এক নামে ডাকেন তাঁর ছাত্রছাত্রীরা। সেই নাম আকাশ। গায়িকারে এক খুদে ছাত্র একবার ওই নামে ডেকে ফেলেছিলেন স্বাগতালক্ষ্মীকে। সেই থেকে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে কেবলই আকাশ। দিদি না অন্য বলে তাঁকে ডাকেন না তাঁর ছাত্রছাত্রীরা।
