‘সপনো কি রানি’ গানের শুটিংয়ে হাজিরই ছিলেন না শর্মিলা ঠাকুর! তিনি তখন সত্যজিতের ফ্লোরে! আসলে কী ঘটেছিল?
তাঁর জায়গায় ছিলেন অন্য মেয়ে! যাকে দেখে কিশোর কুমারের কণ্ঠে লিপ দিলেন রাজেশ খান্না। এই গান সেরা রোমান্টিক গানের তালিকায় সবার উপরে। হ্য়াঁ, আরাধনা ছবির মেরে স্বপ্নো কি রানি। যেখানে পর্দায় দর্শক দেখল, টয়ট্রেনে বসে বই পড়ছেন শর্মিলা আর জিপে চড়ে গান গাইছেন রাজেশ খান্না।

দেখুন কাণ্ড! একেই বলে ক্যামেরার কেরামতি। ক্য়ামেরার কারসাজিতে দর্শক বুঝতেই পারলেন না, আসলে শর্মিলা ঠাকুর টয়ট্রেনেই ছিলেন না! বরং তাঁর জায়গায় ছিলেন অন্য মেয়ে! যাকে দেখে কিশোর কুমারের কণ্ঠে লিপ দিলেন রাজেশ খান্না। এই গান সেরা রোমান্টিক গানের তালিকায় সবার উপরে। হ্য়াঁ, আরাধনা ছবির ‘সপনো কি রানি’ । যেখানে পর্দায় দর্শক দেখল, টয়ট্রেনে বসে বই পড়ছেন শর্মিলা আর জিপে চড়ে গান গাইছেন রাজেশ খান্না। কিন্তু পর্দার এই দেখা গল্প কিন্তু মোটেই সত্যি নয়। বরং সেদিন জিপে চড়ে পাহাড়ি পথে রাজেশ শুটিং করলেও, টয়ট্রেনে ছিলেনই না শর্মিলা ঠাকুর!
ব্য়াপারটা একটু খোলসা করে বলা যাক। সময়টা ছয়ের দশকের শেষ। পরিচালক শক্তি সামন্ত রাজেশ খান্না ও শর্মিলা ঠাকুরকে নিয়ে তৈরি করছিলেন আরাধনা। সেই সময় অবশ্য শর্মিলা বড় স্টার হলেও, রাজেশ সুপারস্টার নন। বলা ভাল শক্তি সমান্তর এই ছবিই রাজেশকে প্রথম সুপারহিট তকমা দিয়েছিল। শুধু ছবি হিসেবে নয়, আরাধনার গান এখনও বলিউডের সেরা গানের তালিকায় উপরে থাকে। বিশেষ করে মেরে ‘সপনো কি রানি’ গানটি তো রোমান্টিক গান হিসেবে বহুল প্রচলিত।
এই গানের শুটিংয়েই একটি চালাকি করেছিলেন শক্তি সামন্ত। দুই ভাগে শুট করেছিলেন এই গান। একটি ভাগে শুধুই রাজেশ খান্না ও সুজিত কুমার এবং আরেকটি ভাগে শুধুই শর্মিলা। রাজেশের অংশটি দার্জিলিংয়ে শুটিং হলেও, শর্মিলার অংশটি হয় স্টুডিওতেই। যেখানে নকল টয়ট্রেনে বসে বই পড়েছিলেন শর্মিলা।
কেন এমন করেছিলেন শক্তি সামন্ত?
এর নেপথ্যে ছিলেন সত্যজিৎ রায়। আসলে সেই সময় অরণ্যের দিনরাত্রি ছবিটি তৈরি করছিলেন সত্যজিৎ। আর সেই ছবির শুটিংয়ের সঙ্গে মিলে যায় আরাধনা ছবির শুটিংয়ের তারিখ। কিন্তু শক্তি সামন্ত ও সত্যজিতের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভাল থাকায় অসুবিধায় পড়তে হয়নি দুজনকেই। মেরে সপনো কি রানি শুটিং ছেড়ে তাই শর্মিলা অংশ নিয়েছিলেন সত্যজিতের ছবির শুটিংয়ে। আর সেই ছবির শুটিং শেষ হতেই, স্টুডিওতে শর্মিলাকে নিয়ে বাদ বাকি মেরে ‘সপনো কি রানি’ র শুট করে ফেলেন শক্তি সামন্ত। অন্যদিকে, রাজেশের শুটিংয়ে ব্যবহার হয় এক ডামি গার্ল। যাঁকে দেখেই কিশোর কুমারের গানে লিপ দিয়েছিলেন বলিউডের কাকাজি।





