রাজদরবারে হাত পাততেই ১০০০ উট উপহার পেলেন সত্যজিৎ! তারপরেই তৈরি হল ইতিহাস
গুপি গাইন বাঘা বাইন আজও সব বয়সের সিনে দর্শকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। এই ছবির শুটিং নিয়েও রয়েছে নানা মজার মজার গল্প। এই যেমন, 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' ছবির একটি দৃশ্য হাজার উট দেখিয়ে ছিলেন সত্যজিৎ।

১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী ছবি ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’। ছবিটি মুক্তি পেয়েই দর্শকদের মন ছুঁয়ে নিয়েছিল। ছোটদের ছবির আড়ালে গুগাবাবা ছিল যেন সেই সময়ের সামাজিক চিত্র। গুপি আর বাঘার কীর্তি, ভূতের রাজার বর, হাল্লা রাজার যুদ্ধ। গুপি গাইন বাঘা বাইন আজও সব বয়সের সিনে দর্শকের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। এই ছবির শুটিং নিয়েও রয়েছে নানা মজার মজার গল্প। এই যেমন, ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’ ছবির একটি দৃশ্য হাজার উট দেখিয়ে ছিলেন সত্যজিৎ। জানেন কীভাবে রাতারাতি এতগুলো উট জোগার করেছিলেন পরিচালক?
জয়সলমীরে তখন গুপি গাইন বাঘা বাইনের শুটিংয়ে ব্যস্ত সত্যজিৎ। তাঁর ইউনিটে রয়েছেন ৩৫ জন কলাকুশলী। জয়সলমীরের জহর নিবাস নামের এক বাড়িতেই থাকতেন সত্যজিৎ ও তাঁর ছবির সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা। হাল্লা রাজার যুদ্ধের আয়োজনের শুটিং হবে, কিন্তু প্ল্য়ান মতো সত্যজিৎ প্রথমে জোগার করতে পারেননি ১০০০ হাজার। কী উপায়! জয়সলমীরে সত্যজিৎ যেখানে থাকতেন, তাঁর বিপরীতেই ছিল সেখানকার রাজার মহল। সত্যজিৎ দেখা করলেন রাজার সঙ্গে। তাঁকে জানালেন এই হাজার উটের গল্প। পরিচালকের মুখে এমন কথা শুনেই, রাজা বললেন, এর জন্য আপনার আসার দরকারই ছিল না, কাউকে বলে পাঠালেই হত।
পরদিন সকালেই সত্যজিতের সামনে এসে দাঁড়ালেন বছর ছাব্বিশের রায়বাহাদুর। বাইকে করে সত্যজিৎকে নিয়ে চললেন শুটিং স্পটে। সত্যজিৎ সেখানে পৌঁছেই দেখেন, সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে হাজার উট! সত্যজিৎ তো অবাক। রায়বাহাদুর বললেন, রাজার তরফ থেকে আপনাকের উপহার। নিশ্চিন্তে শুট করুন। আর কিছু লাগলে অবশ্য়ই জানাবেন। রাজার উপহার দেওয়া হাজার উটেই সেদিন শুট হল সেই ঐতিহাসিক দৃশ্য। ধন্যবাদ জানাতে শুটিং শেষে রাজার সঙ্গে সত্যজিৎ দেখাও করেছিলেন।
তথ্যসূত্র- একেই বলে শুটিং, সত্যজিৎ রায়
