আধুনিক বিষয় নিয়ে সিরিয়াল শুরু হয়। কখনও মাঝবয়সি মহিলার লেখাপড়া পূরণের স্বপ্ন, কখনও সামাজিক লড়াইয়ের মাঝে সফল হওয়া। প্রোমো তৈরি হয় সেই ভাবেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গল্প পাল্টাতে শুরু করে। তারকারা বলেন, সবটাই নাকি দর্শকের জন্য পাল্টাতে হয়। সম্প্রতি শুরু হয়ে নতুন বাংলা ধারাবাহিক ‘গোধূলি আলাপ’-এর সম্প্রচার। সেখানে যেমন দেখানো হয়েছে এক অবিবাহিত আইনজীবীর লড়াই। তেমনই দেখানো হয়েছে অসমবয়সি প্রেম। আইনজীবীর চরিত্রে কৌশিক সেন। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে সম্প্রচার।
দর্শকের কারণে কি পাল্টে যেতে পারে ধারাবাহিকের গল্প? পরিচালক বলেছেন, “আমাদের প্রোমো দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন দর্শক। গল্প পাল্টে ফেলব, এরকমটা কিন্তু ভাবিনি।”
এই ধারাবাহিকে এখনও পর্যন্ত কোনও খলনায়ক/খলনায়িকা, তথা অ্যান্টাগনিস্ট নেই। পরিচালক বলেছেন, “কোনও মানুষ পুরোপুরি ভাল কিংবা পুরোপুরি খারাপ হয় না। কালো ও সাদার মিশ্রণে তৈরি হয় মানুষ। যেটাকে গ্রে শেড বলা হয়। আমরা কিন্তু কোনও অ্যান্টাগনিস্টকে প্রতিস্থাপন করতে চাই না এখনই। যদিও বা সেটা সারপ্রাইজ়। জানাতে চাই না এখনই।”
কিছুদিন আগের ঘটনা। তাঁর ধারাবাহিকে পাল্টে যাওয়া গল্প নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, “মানুষ দেখেন না। যতদিন পড়াশোনার ট্র্যাক চলছিল, ৫.২, ৫.৪, ৫.৬ টিআরপি ছিল। যেই দেবিনার ট্র্যাক ঢুকেছে, ৯-এর উপর টিআরপি, ৮-এর উপর টিআরপি। কী করা যাবে। চ্যানেলকে তো ব্যবসা করতে হবে। মুনাফা না হলে চ্যানেল চলবে কীভাবে। শিক্ষিত সিরিয়াল মানুষ দেখেন না। সিরিয়ালটি খারাপভাবে তৈরি করা হচ্ছিল, তেমনটাও কিন্তু নয়। খুব সুন্দর করেই তৈরি হচ্ছিল। তারপর দেখলাম কনটেন্ট বদলে গেল। অদ্ভুত সব জিনিসপত্র শুরু হয়ে গেল। এতে আমাদের অভিনেতাদের কিচ্ছু করার নেই। সাহানাদির এটা প্রথম প্রযোজনা। নিশ্চয়ই চাইবেন না চার মাসের মাথায় সিরিয়াল বন্ধ হয়ে যাক। এত ভাল একজন লেখিকা। ছোটবেলা থেকে চিনি। ধারাবাহিক সম্প্রচারিত হওয়ার প্রথম দু’মাসে জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন সাহানাদি। এখনও কিছু শিক্ষিত দর্শক ব্যক্তিগতভাবে প্রথম দু’মাসের প্রশংসা করছেন। কিন্তু অধিকাংশ দর্শকই ঝগড়া দেখতে চান। আমি অভিনয় করতে পারি, আর সেটা আমি জানি। সাহানাদি কতখানি ভাল লেখেন, সেটা আর নতুন করে প্রমাণ করার দরকার নেই। স্টারের মতো চ্যানেল। তারপরেও কেন চলবে না!”
একেবারে পাল্টা সুরে লেখিকা ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমার ধারাবাহিকের গল্পগুলোর ক্ষেত্রে কিন্তু এরকমটা কোনওদিনও ঘটেনি। এমনটা হয়েছে, মূল অভিনেত্রী ভাল করেননি। সে জন্য ধারাবাহিকের অন্য অভিনেত্রীকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি। এছাড়া, দর্শকের চাহিদা প্রথমেই ওরকমভাবে বোঝা যায় না। ‘আয় তবে সহচরী’র মতো অভিজ্ঞতা সত্যিই আমার হয়নি। আমাকে চ্যানেলের কথা শুনেও চলতে হয়নি। দর্শকের কথা ভেবেও কাহিনি পাল্টাতে হয়নি। আমি আমার গল্পের উপর বিশ্বাস রেখেই কাজ করি। যদি মনে হয় কোনও অভিনেতা-অভিনেত্রী ভাল করছেন, তাঁর উপর নির্ভর করে অনেক সময়তেই আমি গল্প এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি। সেই কারণে গল্পের সাবট্রেকও অনেক সময় হিট করেছে। সেটা আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে করি। দর্শকের ভাল লাগে না বলে পাল্টেছি, এমনটা কিন্তু কখনও করিনি।”
আরও পড়ুন: Parno Mitra: রাস্তায় শৌচালয় নিয়ে সমস্যায় পার্নো মিত্র, আজ থেকেই খুঁজছেন সমাধানের পথ