AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

যিশুর বাড়ির এক কোণে থাকেন ঋতুপর্ণ ঘোষ, প্ল্যানচেটের পরিকল্পনা…

Jisshu Sengupta: ২০১১ সালের ৩০ মে প্রয়াত হন পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। তাঁর মৃ্ত্যু আজও মেনে নিতে পারেন না অনেকেই। অনেকে মনে করেন, এই সময় দাঁড়িয়ে ঋতুপর্ণর মতো মানুষের আজ বড্ড প্রয়োজন এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। পরিচালককে প্ল্যাটচেট করে ডাকতে চেয়েছিলেন অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত। সেই কথা নিজেই সাফ জানিয়েছিলেন TV9 বাংলাকে।

যিশুর বাড়ির এক কোণে থাকেন ঋতুপর্ণ ঘোষ, প্ল্যানচেটের পরিকল্পনা...
যিশু এবং ঋতুপর্ণ।
| Updated on: May 30, 2024 | 12:50 PM
Share

৫০ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগেই ‘তিতলি’র মতো ডানা মেলে মানুষটা চলে গেলেন পরপারে। তিনি ছিলেন বাংলা ফিল্ম জগতের ‘হীরের আংটি’। এক মাথা কোঁকড়ানো চুল এবং কাঁধে ঝোলা দিয়ে অগুনতি দর্শকের ‘দোসর’ হয়ে ওঠা মানুষটা ‘অসুখ’-এ পড়লেন হঠাৎই। ১১ বছর আগে (২০১৩) ৩০ মের সকালে গোটা কলকাতাকে কাঁদিয়ে জীবনের ‘খেলা’ শেষ করেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। জীবনকে মনে করতেন এক বিরাট ‘উৎসব’। তাঁর নির্দেশিত প্রত্যেক ছবির ‘শুভ মহুরত’-এর আগে সাজোসাজো রব হত এই কলকাতাতেই। যে কলকাতায় গায়ে ‘রেনকোট’ চাপিয়েও অনুরাগীরা যেতেন সিনেমা হলে তাঁর ছবি দেখতে। কিন্তু মানুষটির ‘চোখের বালি’ যাঁরা, তাঁরাও হলে ছুটতেন মনের ‘দহন’ মেটাতে। কেবল তাঁর সৃষ্টিকে প্রাণভরে দেখবেন বলে। ঋতুপর্ণর সৃষ্টি ‘আবহমান’ কাল থেকে যাবে। তাঁর ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’ হলেও, কী ভীষণ বাস্তব। সেই ঋতুপর্ণর পরপারে ‘অন্দরমহল’ কেমন সাজিয়েছেন, ‘গানের ওপারে’ কেমন আছেন, তা আজও জানতে আগ্রহী ঋতুপর্ণর কাছের মানুষেরা। ব্যতিক্রমী নন প্রয়াত পরিচালকের প্রিয় অভিনেতা যিশু সেনগুপ্তও। ঋতুপর্ণকে প্ল্যানচেট করে ডাকতে চান যিশু। TV9 বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে আবেগঘন কথাটি জানিয়েছিলেন তিনি।

কাউকে যদি প্ল্যানচটে করে আনতে হয়, কাকে ডাকবেন যিশু সেনগুপ্ত? এই প্রশ্ন আসতেই একটুকুও না ভেবে অভিনেতা বলেছিলেন, “ঋতুদা (ঋতুপর্ণ ঘোষকে ওই নামেই ডাকতেন তিনি)। ঋতুদা এবং বাবা-মা। বাবা-মা এবং ঋতুদা আমার কাছে একই জায়গায় রয়েছেন।”

অনেকে হয়তো পারেন না অন্য কাউকে বাবা-মায়ের আসনে বসাতে। কিন্তু যিশু পেরেছেন। তিনি বলেছিলেন, “বাবা-মায়ের জায়গাতেই আমি ঋতুদাকে বসিয়েছি। আমি এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যেভাবে কাজ করছি, তাতে মা এবং ঋতুদা খুব খুশি হতেন। আর বাবা বলতেন, যা করবে, নিজে করবে। আমার জন্য কোথাও সুপারিশ করেননি তিনি। সেই জায়গা থেকে বাবা খুশি হবেন। প্রচুর অভাবে বড় হয়েছিলাম। তাই মা চাইতেন আমার জীবনটা সাজানো-গোছানো হোক। ফলে আজ আমাকে এই জায়গায় দেখলে তিনি খুশি হতেন। আর ঋতুদা খুশি হতেন আমি যে ধরনের কাজ করছি সেটা দেখে।”

আজ যে ভাবে সর্বভারতীয় স্তরে কাজ করছেন যিশু, তা দেখে যেতে পারলেন না ঋতুপর্ণ। যিশুর আক্ষেপ, “ঋতুদা আমাকে এই অবস্থায় দেখে যেতে পারলেন না। আমি প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা হই, এটাই ঋতুদা সব সময় চেয়েছিলেন। তিনি আমাকে অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে গিয়েছিলেন।” অভিনেতার বিশ্বাস, ওপর থেকে বাবা-মা এবং ঋতুদা আশীর্বাদ না করলে আজ তিনি এই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতেন না কখনওই।

যিশু সেনগুপ্তর সুসজ্জিত বিরাট চারতলা বাড়িটায় রয়েছে ঋতুপর্ণ ঘোষ কর্নার। এই কথা বলতে গিয়ে মাথা নীচু করে নিয়েছিলেন যিশু। বলেছিলেন, “একদম ঠিক। আমার বাড়িতে এরকম একটা কর্নার আছে। তিনি আমাকে এবং আমার পরিবারকে প্রচুর জিনিস উপহার দিয়েছিলেন। সেই জিনিসগুলো ওখানে রাখা আছে। সেই কর্নারে ঋতুদার দেওয়া আসবাব রয়েছে। আমার গণেশ ঠাকুরের মূর্তি ভাল লাগে। ঋতুদা আমাকে অনেকগুলো গণেশের মূর্তি দিয়েছিলেন। সেগুলো সেখানে রয়েছে। ঋতুদার দেওয়া বুদ্ধের মূর্তিও আছে। মন খারাপ হলে আমি সেখানে বসে কিছুটা সময় কাটাই।”