Unveil Tollywood: পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সুরেলা সফর সঙ্গীতকে চেনেন? জেনে নিন যিশু বৈদ্যর ব্যাপারে

TV9 Bangla Digital | Edited By: জয়িতা চন্দ্র

Apr 19, 2022 | 3:45 PM

জসিমুদ্দিনের ভাওয়াইয়া গানে দিদির সঙ্গে গলা মেলান, পায়ে তালি দিয়ে সঙ্গত করেন ভাই। মলিন মহল্লা থেকে ভেসে আসে...

Unveil Tollywood: পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সুরেলা সফর সঙ্গীতকে চেনেন? জেনে নিন যিশু বৈদ্যর ব্যাপারে

Follow Us

নন্দন পাল: ঠিকানা ১/৫বি মনোহর পুকুর সেকেন্ড লেন। পাশাপাশি দু’জন হেঁটে গেলে কাঁধে কাঁধ লেগে যায়। একসঙ্গে অনেকগুলো পরিবার বাস করে এখানে। ছোট-ছোট ঘর লাগোয়া একটা করে বারান্দা কাম রান্নাঘর। ঘরে আলো-হাওয়া যাতায়াত করে একটা মাত্র জানলা দিয়ে। আর মাঝেমাঝে এই ঘরগুলোর একটা থেকে ভেসে আসে সুর। জসিমুদ্দিনের ভাওয়াইয়া গানে দিদির সঙ্গে গলা মেলান, পায়ে তালি দিয়ে সঙ্গত করেন ভাই। মলিন মহল্লা থেকে ভেসে আসে-
“ও কী ও বন্ধু কাজল ভ্রমরারে
কোন দিন আসিবেন বন্ধু কয়া যাও কয়া যাও রে।।
যদি বন্ধু যাবার চাও
ঘাড়ের গামছা থুইয়া যাও রে
বন্ধু কাজল ভ্রমরারে কোন দিন আসিবেন বন্ধু কয়া যাও কয়া যাও রে।”

আর ভাই সুর তোলেন হারমোনিকায়। কখনও ‘শোলে’ ছবির থিম, কখনও রবীন্দ্রনাথের ‘বড়ো আশা করে এসেছি’, কখনও ‘গাড়ি বুলা রহি হ্যায়, সিটি বাজা রাহি হ্যায়’। ভাই যিশু বৈদ্যর সঙ্গে গাড়ির নিবিড় যোগ। এই ছোট্ট খুপরি ঘরে এই দিদি, ভাই আর দিদির মেয়েদের সঙ্গে থাকে একটা সিলিং ফ্যান, একটা ড্রেসিং টেবিল, একজোড়া ময়ূর আর এক জোড়া হারমোনিকা। ওদের ডাকনাম, মাউথ অরগ্যান।
যিশু যখন আদর করে ওদের বাজান, তখন পাখির পাখনার মতো নড়ে তাঁর করতল দু’টো। যেন এই খুপরি ঘরের খাঁচা থেকে কাজল ভ্রমরের মতো ডানা ঝাপটে উড়তে চাইছে ওঁর শিল্পী মন।

যিশু এখন উইন্ডোজ় প্রোডাকশনে গাড়ির চালকের কাজ করেন। পরিচালক নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের গাড়ি নিয়ে পথে নামেন রোজ। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসেই মাঝে-মাঝে ডান পকেটে রাখা হারমোনিকা বের করে সুর তোলেন। যখন যানজটে থেমে যায় গাড়ির চাকারা, অনাবিল সেই সুর ভেসে যায় রাজপথে। অন্য গাড়ির কাজলকালো কাঁচগুলো নেমে যায়। রাস্তার জলসা শুরু হয়। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর তাঁদের সঙ্গীরা অভ্যস্ত এই হঠাৎ হারমোনিকা জলসায়।

যিশুদের বাড়িতে সঙ্গীতের চর্চা ছিল। তাঁদের বাড়িতে দিনে প্রায় ৬ ঘণ্টা গান-বাজনার চর্চা হত। “বাবা ছিলেন সঙ্গীতপ্রভাকর। দিদি সঙ্গীত বিশারদ। মেজদা বাজাতেন হারমোনিকা। সেজদা বাজাতেন বেহালা। এইসব শুনে-শুনে কানের ভিতর সুরটা ঢুকেছিল,” বলছিলেন যিশু। মেজদা হাত দিতে দিতেন না তাঁর হারমোনিকায়। লুকিয়ে-লুকিয়ে যিশু বাজাতেন দাদার যন্ত্রখানা। তারপর পাড়ার মুদির দোকানে কৈশোর বয়সে শুরু করেন চালের বস্তা বওয়ার কাজ। “একটা বস্তা বইলে ৫০ পয়সা দিত। এভাবে পাওয়া পয়সা জমিয়ে ৪০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন একটা হারমোনিকা,” অতীতের কথা বলতে গিয়ে আজও মোটা কাচের চশমার ফাঁক দিয়ে স্পষ্ট দেখা যায় চকচক করছে যিশুর চোখজোড়া।

চালকের আসনে যখন যিশু, তখন তাঁর পাশেই থাকেন পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কিংবা পরিচালক নন্দিতা রায়। শিবপ্রসাদ বলছেন, “এই গাড়ির অডিয়ো সিস্টেমে প্রথমবার বেলাশুরুর ‘টাপাটুনি’ গানটা শুনি। তখন চালকের আসনে যিশুবাবু। গাড়ি চালানোর সময়ে উনি বেশি কথা বলেন না, চুপচাপই থাকেন। গানটা শুনে আমি কিছুক্ষণ ভাবলাম নিজের মনে। উনি জানেন এই সময়ে আমি একটা থট প্রসেসের ভিতরে থাকি। তার বেশ কিছুক্ষণ পর উনি বললেন দাদা ‘টাপাটুনিটা’ কিন্তু খুব বড় হিট হবে। এটা কিন্তু পুজোয় চলবে দেখবেন।”

আর যিশু মশগুল হয়ে থাকেন তাঁর ক্রোমাটিক হারমোনিকায়। তাকে যখন ডাকে স্টিয়ারিং তখন মনে ওঠে সুর ‘গাড়ি বুলা রহি হ্যায় সিটি বাজা রাহি হ্যায়’।

আরও পড়ুন- Cannes: কানে বাঙালি পরিচালকের ছবি, মে মাসে ফের আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলার কাজ

আরও পড়ুন- Prabhas: বাহুবলি-সাহো ঝড় অতীত, মুখ থুবড়ে পড়ল রাধে শ্যাম, ভুল কোথায় নিজেই জানালেন প্রভাস

Next Article