আজ ৩১শে অগস্ট। বেঁচে থাকলে আজ তাঁর বয়স হত ৫৮ বছর। তিনি অর্থাৎ, ঋতুপর্ণ ঘোষের। অসংখ্য মানুষের কাছে দিনটা আজ আনন্দের। প্রতিদিনের মতো আজও তাঁরা মনে করবেন প্রিয় ঋতুকে। কারও কাছে দিনটা চরম দুঃখেরও। আজ যেন তাঁকে একটু বেশিই মিস করছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁর গুণগ্রাহী ও বন্ধুরা মনেই করেন না ঋতুপর্ণ নেই। নিজের মতো করে কথা বলেন বন্ধুর সঙ্গে। যেমনটা করলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি একটি খোলা চিঠি লিখেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষকে। কী লিখেছেন ঋতুর ‘বুম্বা’?
“প্রিয় ঋতু,
তুই তো জানিসই যে সেভাবে কখনও কাউকে চিঠি লেখা হয়ে ওঠেনি আমার। তোর মতন ভালো লিখতেও পারি না। তবু আজকের দিনে চেষ্টা করলাম একটু। ভুল হলে রাগ করিস না কিন্তু।
তোর সৃজনশীলতার রঙে তুই অনন্যভাবে রাঙিয়েছিস চলচ্চিত্র জগৎকে এবং অবশ্যই তোর সমস্ত সৃষ্টিকে। আর আমার জীবনে তোর যে অবদান তা কয়েকটা শব্দে বোঝানো সম্ভব নয়। কিন্তু বন্ধু, তুই তো জানিসই, বুঝিস তুই।
আজকের মেনুটা কি? আলু পোস্ত থাকছে তো? আর নতুন স্ক্রিপ্টটা কতদূর? শেষ হলেই শোনাস কিন্তু। আপেক্ষায় থাকব। ভালো থাকিস। শুভ জন্মদিন।
ইতি,
বুম্বা”
প্রসেনজিতের চিঠিতেই স্পষ্ট হয়েছে, প্রতি বছর জন্মদিনে আলু পোস্ত খেতেন ঋতুপর্ণ। নিজের স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ করতেন। পড়ে শোনাতেন তাঁকে। দুই বন্ধুর মধ্যে কুশল বিনিময় হত। এই সব কিছু মিস করছেন প্রসেনজিৎ। তাই চিঠি লিখেছেন। যেখানেই থাকুন ঋতুপর্ণ, নিশ্চয়ই পড়ছেন সেই চিঠি।
প্রসেনজিতের কেরিয়ারকে নতুন মোড় দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। যে প্রসেনজিৎ অ্যাকশন ও কমার্শিয়াল ছবিতে ‘পোয়েনজিৎ’ ছিলেন, তাঁকে দিয়ে ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘দোসর’, ‘চোখের বালি’, ‘নৌকা ডুবি’র মতো ছবিতে অভিনয় করিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। এক অন্য প্রসেনজিৎকে খুঁজে পেয়েছি বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ। প্রসেনজিৎও খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর নতুন পরিচয়।
প্রসেনজিতের বাড়ির নামকরণ করেছিলেন ঋতুপর্ণ। সেই বাড়িতে প্রতিদিনই ‘উৎসব’ হয়। কিন্তু যাপনে থাকেন না ঋতু। যদিও মনের তিনি সদা বিরাজমান।