সকালে গানের রেকর্ডিং, বিকেলে সব শেষ! কিশোর কুমার কি নিজের মৃত্যু আগে থেকেই টের পেয়েছিলেন?
সেই ছবিতে যদি কিশোর কুমারের গান থাকে, তাহলে তো কথা নেই! ঠিক এই প্ল্যানিং করেই পরিচালক কে বাপ্পায়া ওয়াক্ত কি আওয়াজ ছবির জন্য বেছে নিয়েছিলেন মিঠুনের জন্য কিশোরের কণ্ঠ। ১৩ অক্টোবর সেই এই ছবির 'গুরু গুরু আ যাও গুরু' গানটির রের্কডিং।

সালটা ১৯৮৭। তারিখ ১৩ অক্টোবর। সেদিন সকাল সকালই ঘুম থেকে উঠে পড়েছিলেন কিশোর কুমার। এমনিতে যে কিশোর সবতে একটু লেট লতিফ ছিলেন, সেদিন যেন বড্ড তাড়া। হঠাৎই বাড়ির ল্যান্ড লাইনে ফোন, রেকর্ডিং স্টুডিও থেকে। নিজেই ধরলেন ফোনটি। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিকে কিশোর জানালেন, ৫ মিনিটেই বের হচ্ছি। সময়টা সকাল সাড়ে ১০ টা।
মিঠুন চক্রবর্তী তখন বলিউড প্রযোজকদের চোখের মণি। শ্রীদেবীর সঙ্গে তাঁর প্রেম গুঞ্জন তখন চরমে। দুজনে মিলে জুটি বেঁধে যে ছবিই করছেন, তাই বক্স অফিসে সুপারহিট! আর সেই ছবিতে যদি কিশোর কুমারের গান থাকে, তাহলে তো কথা নেই! ঠিক এই প্ল্যানিং করেই পরিচালক কে বাপ্পায়া ওয়াক্ত কি আওয়াজ ছবির জন্য বেছে নিয়েছিলেন মিঠুনের জন্য কিশোরের কণ্ঠ। ১৩ অক্টোবর সেই এই ছবির ‘গুরু গুরু আ যাও গুরু’ গানটির রের্কডিং। বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গেই রেকর্ডিং স্টুডিওতে কিশোর আর আশা। এক টেকেই গান রেকর্ড শেষ।
অন্যসময় গানের রেকর্ডিংয়ের পরেও, কিশোর আড্ডায় বসতেন, খাওয়া দাওয়া করতেন রেকর্ডিং স্টুডিতে। কিন্তু সেদিন ব্যতিক্রম। রেকর্ডিং স্টুডিও থেকে সোজা বাড়িতে গেলেন কিশোর।
কিশোরকুমার পুত্র অমিত তখন কানাডায় ব্যক্তিগত কাজে। বাড়িতে আরেক পুত্র সুমিত কুমার ও স্ত্রী লীনা চন্দ্রভারকর। জানা যায়, সুমিতকে সাঁতার ট্রেনিংয়ে যেতে বারণ করেছিলেন কিশোর। স্ত্রী লীনাকে বলেছিলেন আমার মনে হয় আজকে হার্ট অ্য়াটাক হবে! নাহ, শরীর সেভাবে কিছু জানান দেয়নি তখনও। কিন্তু কিশোরের মন যেন আগে থেকেই টের পেয়েছিল। সারাক্ষণ মস্করা করা কিশোরের সেই হার্ট অ্যাটাক প্রসঙ্গকে খুব একটা পাত্তা দেননি লীনা। ভেবেছিলেন, মজা করছেন তিনি। কিন্তু বিকেল হতেই সব যেন বদলে গেল।
হঠাৎই সোফায় বসে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন কিশোর। কিশোরের মনের কথা সত্যি হল, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক! গোটা দুনিয়াকে চমকে দিল কিশোর কুমারের মৃত্যুর খবর। সেদিনের ঘটনা নিয়ে আজও বলিউডে চর্চা হয়। অনুরাগীদের মনের কোণে প্রশ্ন ওঠে, কিশোর কি আগে থেকেই টের পেয়েছিলেন মৃত্যু? তাই কী সকাল সকাল সেরে ফেলেছিলেন সব কাজ? ছেলেকে বলেছিলেন বাড়িতে থাকতে?
