সুচিত্রার সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল সুপ্রিয়ার? মহানায়িকাকে নিয়ে উত্তমকে কী বলেছিলেন জানলে চমকে উঠবেন
পরিচিত মানুষ ছাড়া কারও সঙ্গে নাকি কথা বলা তো দূরের কথা, দেখাও করতেন না মহানায়িকা। তাই মনে মনে ইচ্ছে থাকলেও, সুচিত্রার সঙ্গে যে একটু আলাপ করবেন তা ভাবতে ভাবতেই দিন কাটত। তবে সিনেমার পর্দায় যখন সুচিত্রা-উত্তমকে দেখতেন, সেই জুটির ম্যাজিকে বার বার মুগ্ধ হয়ে যেতেন সুপ্রিয়া।

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকের কাছ থেকেই সুপ্রিয়া চৌধুরী শুনেছিলেন সুচিত্রা সেনের নাকি দারুণ অহংকার। রাগ নাকি থাকত তাঁর নাকের ডগায়। পরিচিত মানুষ ছাড়া কারও সঙ্গে নাকি কথা বলা তো দূরের কথা, দেখাও করতেন না মহানায়িকা। তাই মনে মনে ইচ্ছে থাকলেও, সুচিত্রার সঙ্গে যে একটু আলাপ করবেন তা ভাবতে ভাবতেই দিন কাটত। তবে সিনেমার পর্দায় যখন সুচিত্রা-উত্তমকে দেখতেন, সেই জুটির ম্যাজিকে বার বার মুগ্ধ হয়ে যেতেন সুপ্রিয়া। তবে সেই সময় টলিউডে গুঞ্জন ছিল উত্তমকে নিয়ে নাকি সুচিত্রা ও সুপ্রিয়ার মধ্যে নিত্য টানাপোড়েন চলত। সত্য়িই কী তাই? সুচিত্রার সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল সুপ্রিয়ার?
এক সাক্ষাৎকারে সুচিত্রাকে নিয়ে মনে কথা খোলসা করেছি , টলিউডের সবার প্রিয় বেণুদি। যে বেণুদির সঙ্গে উত্তমের প্রেম নিয়ে টলিউড ছিল সদা সরগরম, সেই সুপ্রিয়াই জানিয়ে ছিলেন সুচিত্রার সঙ্গে তাঁর জমজমাট আড্ডার কথা। সুপ্রিয়ার কথায়, ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে উত্তম-সুচিত্রা আর তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ ছিল মনে রাখার মতো।
কী ঘটেছিল ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে?
এক ম্য়াগাজিনের সাক্ষাৎকারে সুপ্রিয়া বলেছিলেন, ১৯৫৪ সালের কথা। উত্তম-সুচিত্রার ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ছবিটি দেখতে গিয়েছিলাম। সেই সময় ছবিটি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে সেই সময় হইচই পড়ে গিয়েছিল। খুব কষ্টে দু-তিনটে টিকিট পেয়েছিলাম। সেই সময় থেকেই সুচিত্রার সঙ্গে আলাপ করার একটা ইচ্ছে জেগে ছিল। আসলে সেভাবে সুচিত্রার সঙ্গে আলাপ তখনও সম্ভব হয়নি।
সুপ্রিয়া জানিয়ে ছিলেন, সুচিত্রা সেনের সঙ্গে আলাপ করার ইচ্ছেটা পরিচালক নির্মল দে-কে জানাই। তখন নির্মলদার ‘বসু পরিবার’ ছবিতে আমার শুটিং চলছে। সিঁথির মোড়ের এমপি স্টুডিওতে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে হঠাৎ দেখা। সুচিত্রার সৌন্দর্যের থেকে ব্যক্তিত্বই আমাকে সেদিন আকর্ষণ করেছিল সবচেয়ে বেশি। সেদিন নির্মলদার উদ্য়োগেই আলাপ হল। গল্পও হল। আমি রমাদি বলেই ডাকতাম সুচিত্রাকে। আমি উত্তমকে বলেছিলাম, তোমাদের নিয়ে কত কথা হয় ইন্ডাস্ট্রিতে। কই রমাদি তো অমন নয়, সত্যি তোমাদের দুজনের এই বন্ধুত্ব দেখলে আমার হিংসে হয়।
পুরনো এই সাক্ষাৎকারে সুপ্রিয়া দেবী আরও জানিয়ে ছিলেন, আমাদের ময়রাস্ট্রিটের বাড়িতে রমাদি অনেকবার এসেছেন। অনেক আড্ডা দিয়েছি রমাদি, আমি ও উত্তম। ডিনার টেবিলে বসে, আমি উত্তম, আর রমাদি নানা বিষয় নিয়ে গল্প করতাম। সেদি আমি নিজে হাতে রান্না করতাম। আমার হাতের রান্না রমাদি খুব ভাল খেত। বিশেষ করে চচ্চড়িয। খাবার টেবিলে উত্তম আর সুচিত্রা বসে থাকতেন। কীভাবে যে সময় কেটে যেত, ভাবাই যায় না। আর রমাদির জন্মদিনে নিয়ম করে প্রত্যেক বছর আমি আর উত্তম ফুল পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাতাম। লিলি ফুল খুব প্রিয় ছিল রমাদির।
