‘মায়াবিনী’ গানেই জুবিন গর্গকে শেষ বিদায়, নিঃসন্তান গায়কের মুখাগ্নি করলেন কে?
গোটা দেশ, গোটা অসমের চোখে জল। প্রিয় গায়ককে হারিয়ে এখনও শোকস্তব্দ অনুরাগীরা। তবুও চোখে জল নিয়ে জুবিনের শেষকৃত্যে শ্মশাণেই ভক্তরা ধরলেন জুবিনের গান মায়াবিনী। হ্যাঁ, এমনটাই তো চেয়েছিলেন জুবিন। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেই ছিলেন, আমার মৃত্যুর পর গোটা অসম যেন এই গান গায়।

থরে থরে চন্দনকাঠ দিয়ে সাজানো অন্তিম শয্যায়, শায়িত জুবিন গর্গের নিথর দেহ। এ যেন তাঁর গাওয়া গানের লাইন, ইয়ে দিল জায়ে পত্থর কা, না ইসমে কোই হলচল হো! গোটা দেশ, গোটা অসমের চোখে জল। প্রিয় গায়ককে হারিয়ে এখনও শোকস্তব্দ অনুরাগীরা। তবুও চোখে জল নিয়ে জুবিনের শেষকৃত্যে শ্মশাণেই ভক্তরা ধরলেন জুবিনের গান মায়াবিনী। হ্যাঁ, এমনটাই তো চেয়েছিলেন জুবিন। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেই ছিলেন, আমার মৃত্যুর পর গোটা অসম যেন এই গান গায়।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে জুবিনের শেষকৃত্যের নানা ভিডিয়ো। প্রিয় গায়ককে শেষ বিদায় জানাতেও উপচে পড়া ভিড়। বৈদিক মন্ত্র ও অনুরাগীদের গানের মাঝেই সম্পন্ন হল জুবিনের শেষকৃত্য। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ের মতো জুবিনের শেষযাত্রাতেও সঙ্গী তাঁর স্ত্রী।
জুবিন গর্গ নিঃসন্তান। তাই জুবিনের মুখাগ্নি করলেন তাঁর ছোট বোন পামী বড়ঠাকুর। সঙ্গে ছিলেন জুবিনের সহযোগী অরুণ এবং কবি-গীতিকার রাহুল।
জুবিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, গুয়াহাটির ‘মহাবহু ব্রহ্মপুত্র রিভার হেরিটেজ সেন্টার’ যেটি একটি মিউজিয়াম, সেখানেই শেষ জীবনটা কাটাবেন। তিনি জানিয়ে ছিলেন, এই জায়গাটা খুব সুন্দর, খুব শান্তির। বয়সকালে এখানেই থাকতে চাই, এখানেই মরতে চাই।
এই সাক্ষাৎকারে জুবিন আরও বলেছিলেন, আমি একজম আর্মি, তাই আমার মৃত্যু নিয়ে কোনও ভয় নেই। আমি চাই, মৃত্যুর পর আমাকে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসিয়ে দেওয়া হয় যেন। আর এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।
তিন বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ শুরু করেন জুবিন। মায়ের কাছেই তাঁর প্রথম গান শেখা। পরে ১৯৯২ সালে পেশাগতভাবে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। অহমিয়া সিনেমার পাশাপাশি বাংলা সিনেমাতেও প্রচুর গান গেয়েছেন জুবিন। সঙ্গীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘মন মানে না’, ‘পিয়া রে’ তাঁর জনপ্রিয় গান। বলিউডে প্রীতমের হাত ধরে ‘গ্যাংস্টার’ ছবির ‘ইয়া আলি’ গান হইচই ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। বহুবার নানা কারণে বিতর্কেও জড়িয়েছেন জুবিন। নেশাগ্রস্ত হয়ে মঞ্চে গান গাওয়ার কারণে বহুবার বিপাকেও পড়েছিলেন গায়ক। দারুণ শিল্পী হয়েও অনেকেই মনে করতেন জুবিনের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন তাঁকে ঠেলে দিচ্ছিল অন্ধকারে।
