‘আমার মৃত্যুর পর গোটা অসম যেন এই গান গায়’, জুবিনের কথা রাখলেন ভক্তরা
প্রতিটি মানুষের কণ্ঠে একটাই গান 'মায়াবিনী রাতির'। হ্যাঁ, এটাই তো চেয়েছিলেন জুবিন। সাত বছর আগেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে এমন কথাই বলেছিলেন। ২০১৯ সালে এক অনুষ্ঠানে মায়াবিনী গান শুরুর আগে জুবিন বলেছিলেন, আমার মৃত্যুর পর এই গান গাইবে গোটা অসম!

অসমের হৃদয় যেন থেমে গেল। থমথমে গোটা রাজ্য। থমথমে জুবিনের পাড়া। তাঁর বাড়ির সামনে জনসমুদ্র। রাজ্যের প্রতিটি কোণায়, প্রতিটি মানুষের কণ্ঠে একটাই গান ‘মায়াবিনী রাতির’। হ্যাঁ, এটাই তো চেয়েছিলেন জুবিন। সাত বছর আগেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে এমন কথাই বলেছিলেন। ২০১৯ সালে এক অনুষ্ঠানে মায়াবিনী গান শুরুর আগে জুবিন বলেছিলেন, আমার মৃত্যুর পর এই গান গাইবে গোটা অসম! কি অদ্ভুত না, শুক্রবার যখন জুবিনের মৃত্যুর খবর ধাক্কা দিল গোটা দেশের হৃদয়কে। ঠিক তখনই গোটা অসম গান ধরল মায়াবিনী রাতির। রাস্তায় রাস্তায় জনসমুদ্র। বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে অফিস, কাছারি, কিংবা পাড়ার মোড়ে মুদির দোকান। সব জায়গাতেই এই গানের সুর। ভক্তরা ইচ্ছাপূরণ করলেন জুবিনের।
২০০১ সালে মুক্তি পায় জুবিনের মায়াবিনী রাতির গানটি। তখন অহিময়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে জুবিন বড় তারকা। একের পর এক হিট গান। সেই বছরই ধাগ নামের এক অহিময়া ছবিতে ছিল জুবিনের এই গান। গানটি মুক্তি পাওয়া মাত্রই হইচই ফেলে দিয়েছিল। সোজা অন্তরে গিয়ে ধাক্কা দিয়েছিল জুবিনের কণ্ঠ। বলা যায়, জুবিনের গোটা কেরিয়ারে অন্যতম সেরা গান মায়াবিনী রাতি।
এরপর জুবিন দেশ-বিদেশের যে কোণাতেই পারফর্ম করেছেন, সেখানেই গেয়েছেন এই গান। সময় এগিয়ে গেলেও, এই গানের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। তাঁর প্রমাণ মিলল, শুক্রবার জুবিনের মৃত্যুর পরও।
মায়াবিনী রাতি গানটি নিস্বার্থ ভালবাসার কথা বলে। যে ভালবাসা, শুধুই ভাল থাকার কথা বলে। এমন একটা রাতের কথা বলে, যা মায়ায় জড়ানো। জুবিন তো এমনই মানুষ ছিলেন। গোটা অসমকে মায়ার জড়িয়ে রেখেছিলেন। তাঁর কাছে অসমের প্রতি ভালবাসাও ছিস অসীম। আর মায়ার বাঁধন ছিঁড়ে ফেলেই দূর আকাশে হারিয়ে গেলেন দেশের প্রিয় গায়ক।
তিন বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ শুরু করেন জুবিন। মায়ের কাছেই তাঁর প্রথম গান শেখা। পরে ১৯৯২ সালে পেশাগতভাবে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। অহমিয়া সিনেমার পাশাপাশি বাংলা সিনেমাতেও প্রচুর গান গেয়েছেন জুবিন। সঙ্গীত পরিচালক জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘মন মানে না’, ‘পিয়া রে’ তাঁর জনপ্রিয় গান। বলিউডে প্রীতমের হাত ধরে ‘গ্যাংস্টার’ ছবির ‘ইয়া আলি’ গান হইচই ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। বহুবার নানা কারণে বিতর্কেও জড়িয়েছেন জুবিন। নেশাগ্রস্ত হয়ে মঞ্চে গান গাওয়ার কারণে বহুবার বিপাকেও পড়েছিলেন গায়ক। দারুণ শিল্পী হয়েও অনেকেই মনে করতেন জুবিনের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন তাঁকে ঠেলে দিচ্ছিল অন্ধকারে।
