বয়স বেশি হলে তবেই হৃদরোগের সমস্যা ধরা পড়বে, সেই ধারণা এখন আর নেই। কারণ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের ( cardiovascular diseases ) একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অনেক তরুণ ও মধ্যবয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেশি দেখা দিচ্ছে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে, ভারতীয়দের মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগে যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, তা পশ্চিম দেশের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। ফলে অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ (Heart Attack Prevention) করতে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই এই মারাত্মক রোগ থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
কোলেস্টেরলই প্রধান কারণ নয়
অনেকে বিশ্বাস করেন যে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডই তাদের হার্ট অ্যাটাকের পিছনে একমাত্র দায়ী। বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাকের পিছনে প্রধান কারণ হল হৃদযন্ত্রে ইনফ্লেমেশন এবং অক্সিডেটিভ ক্ষতি, রক্তনালী, এন্ডোথেলিয়াল আস্তরণ, ধমনী এবং আরও অনেক কিছু। স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এর জন্য হার্ট অ্য়াটাকের জন্য আমরা শুধুমাত্র কোলেস্টেরলের মাত্রায় হার্ট অ্যাটাককে দায়ী করতে পারি না।
রান্নার তেলে বদল আনা প্রয়োজন
সাধারণ ও নিম্নমানের রান্নার তেলে থেকে ভাল মানের তেল ব্যবহার করার সময় এসেছে। শুধু টাকা বাঁচাতে পরিশোধিত তেল ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ মোটেই নয়। হার্টের সুস্থতার জন্য সঠিক মানের ও সঠিক মাত্রায় তেল ব্যবহার করা প্রয়োজন। তাই সামান্য কয়েকটি টাকার জন্য নিজের শরীরের উপর অত্যাচার না করাই ভাল। অন্য কিচুর জন্য যখন অতিরিক্ত টাকা খসাতে পারেন, সেখানে মনে রাখবেনস স্বাস্থ্য কখনও বাড়তি খরচের তালিকায় থাকতে পারে না, এটি বিনিয়োগ।
সক্রিয় জীবনযাপন পালন করুন
নিয়মিত অনুশীলন করার সময় পান না। তবুও সক্রিয় থাকুন। হাঁটা ও যোগব্যায়াম হল সবচেয়ে কার্যকরী ব্য়ায়াম। রোজকার ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে না পারলেও নাচ, অ্যারোবিক্স, জুম্বা, সাঁতার, যেটা মন চাইবে, করতে পারেন। শরীরকে সচল রাখার চেষ্টা করুন। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সক্রিয় রাখতে অতিরিক্ত পরিশ্রম নয়, ব্যালান্স করে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন।
মানসিক চাপ যতটা সম্ভব কম করার চেষ্টা করুন
কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ অনিবার্য। কিন্তু অফিসের সমস্ত বিষয় নিয়ে সবসময় মনের মধ্যে চাপিয়ে দেবেন না। মানসিক চাপ বাড়তে থাকলে নেগেটিভ চিন্তাধারাও বাড়তে থাকে, পাল্লা দিয়ে। মানসিক চাপ কাটাতে স্ট্রেস ম্য়ানেজমেন্ট ক্লাস বা কর্মশালায় যোগ দিতে পারেন। জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সাহায্য করবে। মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ করে মনকে শান্ত ও সুখে থাকার মূলমন্ত্র জানতে পারবেন।
সঠিক সময়ে ঘুমানোর অভ্য়েস করুন
শরীরকে বাঁচাতে ঘুমের অত্যন্ত প্রয়োজন। জানেন কী, ঘুমের সঙ্গে হৃদয়ের সম্পর্ক রয়েছে। তাই ঘুম যদি ভাল হয়, তাহলে আপনার হার্টের অবস্থাও ঠিক থাকবে। দীর্ঘস্থায়ী অনিদ্রা হার্ট অ্য়াটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। ঘুমের অভাবে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও বিপাকতন্ত্রকে নিস্তেজ করে তোলে। নির্দিষ্ট সময় ঘুমানোর অভ্যেস তৈরি করুন। গভীর ঘুমে শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: Sleep: রোজ রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয় না? কমতে পারে আয়ু, এমনটাই বলছে গবেষণা
আরও পড়ুন: Cause Of Obesity: বেশি খাওয়া মানেই ওবেসিটি নয়! তাহলে আসল কারণ কী?