ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন অনুসারে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষের ডায়াবেটিক ফুট আলসার হয়। উপরন্তু, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজন, যাদের ডায়াবেটিক পায়ের ওপর গুরুতর সংক্রমণ হয়েছে যার ফলে তাদের জীবন ও পরিবারের জীবিকা প্রভাবিত হয়েছে।
ডায়াবেটিসও বর্তমানে ‘বিশ্বব্যাপী মহামারী’ হিসাবে দেখা দিয়েছে, যেখান থেকে ভারতও বাদ পড়েনি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আগামী ১০ বছরে ভারতে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা প্রায় ১০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে। ভারতে ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি ভয়াবহ। এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই ডায়াবেটিক ফুট আলসার একটি জটিল রোগ।
ডায়বেটিক ফুট আলসারের কারণে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন পেরিফেরাল স্নায়ুরোগ বা নিম্ন প্রান্তগুলিতে উপস্থিত স্নায়ুগুলির ক্ষতি হয়। পেরিফেরাল ইস্কিমিয়া বা নিম্ন প্রান্তের রেস্ট্রিকটেড রক্ত প্রবাহ। ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের সৃষ্টি হয়, কারণ এই ব্যাকটেরিয়াগুলির বৃদ্ধি দুর্বল টিস্যুর শক্তি বিপাক এবং গ্লুকোজ সমৃদ্ধ টিস্যুর পরিবেশ দ্বারা অনুকূল।
ডায়াবেটিক ফুট আলসারের একাধিক উপসর্গও দেখা দেয়। পায়ে ফোস্কা পড়া বা অন্যান্য ক্ষত, অসাড়তা, শিরশিরানি এবং পায়ে ব্যথা, ভারসাম্য হারানো, ত্বকের বিবর্ণতা এবং পা থেকে দুর্গন্ধর মত একাধিক ডায়াবেটিক ফুট আলসারের উপসর্গ দেখা দেয়। প্রথম থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির কারণগুলি সনাক্ত করে এবং ডায়াবেটিক ফুট আলসারের জন্য একটি চিকিৎসা ভিত্তিক মূল্যায়ন করতে হল ডায়াগনস্টিক পদ্ধতির প্রয়োজন। এই ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি নিয়মিত ভাবে করতে হবে, অন্যথায় আপনি এই রোগকে আটকাতে পারবেন না। এই কারণেই যাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশি অর্থাৎ ডায়বেটিসের রোগীদের বছরে একবার করে ডায়বেটিক ফুট আলসারের জন্য চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা করানো খুব জরুরি।
আপনি হয়তো ভাবছেন এই রোগকে অন্যান্য রোগের মত প্রথম থেকে প্রতিরোধ করবেন, কিন্তু এই রোগকে কোনও ভাবেই প্রতিরোধ করা যায় না। তবে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে ডায়াবেটিক ফুট আলসারের ঝুঁকি কমে যায়। এই রোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য এবং সুস্থ থাকার জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ভাল ও ফিট জুতো ব্যবহার করতে হবে, ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: মদ খাওয়া ভাল! ব্রেন স্ট্রোক ও ডায়াবেটিস রোধে অ্যালকোহলের রয়েছে অনেক গুণ!
আরও পড়ুন: ই-সিগারেট খেলে বাড়বে রক্তচাপ, সঙ্গে বাড়বে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও!
আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় শিশু ও মায়ের স্বাস্থ্যকে কীভাবে উন্নত করতে সাহায্য করে অ্যাভোকাডো?