Chhath Puja 2022: ছট পুজোর প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয় ঠেকুয়া, এর স্বাস্থ্য উপকারিতা জানেন কি?
Thekua: ঠেকুয়া প্রসাদ হিসেবে অতি উত্তম। এই প্রসাদের মধ্যে এমন কিছু উপকরণ থাকে যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। শীতের নানা সংক্রমণের হাত থেকেও রক্ষা করে।
ছট পুজোর অন্যতম প্রসাদ হল ঠেকুয়া। পুজোর সময় এই ঠেকুয়া খুব যত্ন সহকারে তৈরি করা হয়। ছট পুজোর দিন সূর্য এবং ছটি মাইয়াকে এই প্রসাদ নিবেদন করা হয়। হিন্দুদের খুব প্রাচীন উৎসব হল এই ছট পুজো। প্রতি বছর কার্তিক মাসে চারদিন ব্যাপী এই পুজোর আয়োজন করা হয়। এই পুজোর অন্যতম অঙ্গ হল উপবাস। টানা ৩৬ ঘণ্টা ধরে উপবাসের রীতি রয়েছে ছট পুজোয়। এই পুজোর মূল উপাস্য সূর্যদেব। সঙ্গে ছট মাইয়া বা ছটলক্ষ্মীরও আরাধনা করা হয়। প্রাণশক্তির উৎসব সূর্য। বিশ্বাস, সূর্যদেবের আরাধনা করলে অনেক রোগের বিনাশ হয়। স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। কথিত আছে রামচন্দ্র লঙ্কা জয় করে এসে তারপর কুলদেবতা সূর্যের পুজো শুরু করেন। সেখান থেকেই ছট পুজোর সূচনা। কার্তিক শুক্লা চতুর্থী থেকে কার্তিক শুক্লা সপ্তমী অবধি পালিত হয় ছট।
ছট পুজোর তৃতীয় দিনে প্রস্তুত করা হয় ঠেকুয়া প্রসাদ। পুজোর শেষ দিনে ঊষা অর্ঘ্যের পর সেই প্রসাদ বিতরণ করা হয় সকলের মধ্যে। ঠেকুয়া সম্পূর্ণ ভারতীয় পদ্ধতিতে তৈরি একরকমের কুকিজ। উপাদান হিসেবে আটা, গুড়, চিনি, শুকনো ফল, শুকনো নারকেল এবং ঘি ব্যবহার করা হয়। উপাদান গুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে মিশিয়ে প্রথমে একটি ডো তৈরি করা হয়। তারপর ছাঁছে ফেলে তেলে ডিপ ফ্রাই করা হয়। এই ঠেকুয়া খেতে যেমন সুস্বাদু হয় তেমনই খাস্তা হয়। তবে এই ঠেকুয়ার কিন্তু একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। আর তাউ অনেক স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি এই ঠেকুয়া তাঁদের রোজের জলখাবারেও রাখেন।
যে সব কারণে ঠেকুয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী
খিদে মেটায়– ঠেকুয়া সম্পূর্ণ ভাবে গমের আটা থেকে তৈরি করা হয়। যে কারণে তা দীর্ঘক্ষণ খিদে মেটাতে সাহায্য করে। ওজন কমানো যদি লক্ষ্য হয় তাহলে ঠেকুয়া দুর্দান্ত স্ন্যাকস অপশন। খেতে ভাল, মনও ভাল রাখে। তবে যদি স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তৈরি করা হয় তাহলে গুড়ের পরিবর্তে চিনি ব্যবহার করতে হবে।
শক্তি বাড়ায়– দীর্ঘক্ষণ কাজ বা উপবাসের পর শরীরের ক্লান্তি দূর করতে খুব ভাল খাবার হল এই ঠেকুয়া। সম্পূর্ণ ভাবে গমের আটা আর ঘি দিয়ে যেহেতু বানানো হয় তাই তা আমাদের আলস্য দূর করতে সাহায্য করে। গমের মধ্যে থাকে ভিটামিন বি ১, বি ৩, ভিটামিন ই, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার- যা সামগ্রিক ভাবে স্বাস্থ্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
হজমশক্তি বাড়ায়– ঠেকুয়াতে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয় গুড়। যা শরীরের ডিটক্সিফিকেশনে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিড রিফ্লাক্স প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। গুড়ের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট- যা শরীরকে নানা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে।
রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়- ঠেকুমার মধ্যে যত বেশি শুকনো ফল মেশানো যাবে ততই জোরদার হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এছাড়াও শীতের শুরুতে এই ঠেকুয়া শরীরকে উষ্ণ রাখে। কাজু, কিশমিশ, বাদাম, পেস্তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। এছাড়াও থাকে ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। আর তাই ঋতু পরিবর্তনের সময় ঠেকুয়া খেলে একাধিক রোগ সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।