আপনি কি কখনও লক্ষ্য করেছেন যে শীতের সকালে আপনার হাড় বেশি ব্যথা করে? কখনও কখনও আপনার প্রতিদিনের কাজগুলো চালিয়ে যাওয়া আপনার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে? যদিও শীতকাল প্রায়ই খুব আরামদায়ক হয়, তবে কিছু কিছু সময় এই ঋতু আপনার জন্য বেশ যন্ত্রণাদায়কও হতে পারে। দিল্লির অ্যাপোলো স্পেকট্রা করোল বাগের অর্থোপেডিক সার্জন ডঃ অশ্বিনী মাইচাঁদ ব্যাখ্যা করেছেন, ‘পরিবর্তিত আবহাওয়া এবং জয়েন্টের ব্যথার মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে। ঠান্ডা আবহাওয়া আপনার জয়েন্টগুলোতে বেশ চাপ দিতে পারে। আর্দ্রতার মাত্রা, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, তাপমাত্রায় হঠাৎ পরিবর্তন এবং বৃষ্টিপাতের কারণে শীত শুরু হওয়ার সঙ্গেই অনেকে জয়েন্টের ব্যথা অনুভব করেন। পেশী শক্ত হয়ে যাওয়ার জন্যই মূলত এই ব্যথা অনুভব করেন আপনি।’
শীতকাল ডিহাইড্রেশনের দিকেও আপনাকে ঠেলে দিতে পারে। এর ফলে জয়েন্টগুলির চারপাশে তরলের ঘনত্ব হ্রাস পায় এবং ব্যথা আরও অনেকটা বেড়ে যায়। সর্বোপরি, এই কারণগুলি বাতের ব্যথাকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। বিপুল সংখ্যক মানুষ, বিশেষত ৬০ বয়সের বেশি যাঁরা তাঁরা জয়েন্টের ব্যথা, পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য ব্যথার অভিযোগ করে থাকেন। সুতরাং, এটি উপেক্ষা করার পরিবর্তে এর খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি।
ঠাণ্ডা গরম সেঁক নিন:
এটি পেশী এবং জয়েন্টগুলোর ব্যথা উপশমের অন্যতম সেরা উপায়। একটি গরম বা ঠাণ্ডা জলে ভেজানো কাপড় যদি আপনি ব্যথা হওয়া স্থানে বার বার দিতে থাকেন তাহলে বেশ আরাম হবে। এছাড়া, জয়েন্টগুলোতে তেল লাগান এবং আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এটি রক্ত সঞ্চালনকে স্বাভাবিক করবে। একটি ঠান্ডা কাপড়ের ছোঁয়া শীতকালে গাঁটের ব্যথা বা কোনোরকম পেশির অস্বস্তিতে উপকারী হতে পারে।
শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন:
ব্যায়াম আপনার জয়েন্টগুলোতে ব্যথা এবং শক্ত পেশীগুলির জন্য একটা নিরাময়ের উপায় হতে পারে। সকালে হাঁটতে যেতে অবশ্যই ভুলবেন না। এতে পায়ের পেশী প্রসারিত হবে। যোগব্যায়াম, পায়ের ব্যায়াম, পিলেটস, অ্যারোবিক্স বা সাইকেল চালানোর মতো ব্যায়ামগুলিও করতে পারেন। এর ফলে আপনার জয়েন্টগুলো ভাল অবস্থায় থাকবে। কিন্তু, অতিরিক্ত ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলুন কারণ এটি আপনার জয়েন্টগুলির ক্ষতি করতে পারে। কোন কোন ব্যায়ামগুলি আপনার করা উচিত তা বোঝার জন্য একজন ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। কারণ, এমন কিছু ব্যায়াম করা ঠিক হবে না যা আপনার পেশীর বা জয়েন্টের ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন:
ভিটামিন ই জয়েন্টের ব্যথায় উপকারী হতে পারে। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল থেকে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে, যা শরীরের পেশী এবং এমনকি ত্বকের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাছাড়া, ভিটামিন ই ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করতে পারে। বাদাম, অ্যাভোকাডো, বেরি, সবুজ শাকসবজি, বীজ এবং মাছ ভিটামিন ই-এর ভাল উৎস। ফল, গোটা শস্য, বাদাম এবং আখরোটের উপর নজর দিতে ভুলবেন না। আচার, মিষ্টি, মিষ্টি, কেক, পেস্ট্রি, কোলা, সোডা, আচার এই ধরনের প্রক্রিয়াজাত তৈলাক্ত এবং টিনজাত খাবার এড়িয়ে চলুন যা আপনার ব্যথা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। গরম স্যুপ খেলে শরীরে প্রদাহ কমতে পারে। এছাড়াও, সঠিক মাপে জল খেলে তা আপনাকে হাইড্রেটেড থাকতে, জয়েন্টের স্টেবিলিটি বাড়াতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন: Calcium: দুধ খেতে অপছন্দ? দুধ ছাড়াও শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হবে এই ৪টি খাবারে
আরও পড়ুন: Post-Diwali Detox Tips: জিমে গিয়ে ঘাম আর ঝরাতে হবে না! পোস্ট-দিওয়ালি ডিটক্স টিপসেই হবে কেল্লাফতে!